আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবসে মানববন্ধন ও সমাবেশ খাগড়াছড়িতে

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়িতে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। খাগড়াপুর মহিলা কল্যাণ সমিতি, তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা, জাবারাং কল্যাণ সমিতি, আলো, কাবিদাং, ওয়াইডাব্লিউসিএ, দুর্বার নেটওয়ার্ক, নারীপক্ষ, উইমেন রিসোর্স নেটওয়ার্ক, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরাম-বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস্ কাউন্সিল এর অংশগ্রহণে খাগড়াছড়ি নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ মঞ্চের আয়োজনে মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

২৫নভেম্বর সোমবার সকালে খাগড়াছড়ি জেলা সদর শাপলা চত্বরে ‘নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং সকল যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে আমরা’’ পরিচয়ে মানববন্ধন ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশে স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা কাবিদাং এর নির্বাহী পরিচালক ও টিআইবি-খাগড়াছড়ি সনাকের সদস্য লালসা চাকমার সভাপতিত্বে ও দি কার্টার সেন্টারের তথ্যবন্ধু ও ট্রেণিং অফিসার গিতিকা ত্রিপুরার সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক আবু দাউদ, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)খাগড়াছড়ির সদস্য অংসুই মার্মা, খাগড়াপুর মহিলা কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধি কাজল বরন ত্রিপুরা, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরামের খাগড়াছড়ি সদর শাখার সভাপতি ও দৈনিক প্রতিদিনের চিত্র পত্রিকার খাগড়াছড়ি জেলার প্রতিনিধি দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস্ কাউন্সিলের খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিঅংগ্য মারমা, খাগড়াছড়ি সনাকের ইয়েস প্রতিনিধি নিশি ত্রিপুরা প্রমূখ। এসময় দিবসটি উপলক্ষে বক্তারা নিম্নোক্ত দাবিসমূহ তুলে ধরেন:

১। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এবং তার বিভিন্ন আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের নিকট যত দ্রুত সম্ভব অপরাধীদের গ্রেফতার ও বিচার কাজ সম্পন্ন করা;
২। ঘটনার তদন্তের সাথে সম্পৃক্ত পুলিশ, ডাক্তার ও সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি;
৩। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে প্রণয়নকৃত আইনসমূহ বাস্তবায়নের জন্য এই মুহুর্তেই বাস্তবসম্মত উদ্যোগ গ্রহণ করার এবং বিভিন্ন পর্ণোসাইট ও বিদেশী চ্যানেল যেখানে সহিংসতার ঘটনা দেখানো হয় তা বন্ধ করার।
৪। কর্মস্থল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানী বন্ধের জন্য বাংলাদেশের মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক প্রদত্ত রায় বাস্তবায়নে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানকে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করার জন্য জোর দাবী জানান। এবং তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সংগঠিত সহিংসতা প্রতিরোধে যথোপোযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৫। নারী ও শিশুদের ঘরে বাইরে, বাসে, লঞ্চে, ট্রেনে, নিরাপদে চলাচলের পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিকে সচেতন করে তোলার জন্য সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিখাত পর্যায় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৬।পাশাপাশি নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধ ও প্রতিরোধের দায়িত্ব শুধু সরকারের নয়। আমরা যারা বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন, ইলেক্ট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়া দীর্ঘদিন নারীর অধিকার, শিশু অধিকার ও নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় কাজ করছি তাদের প্রতি যার যার অবস্থান থেকে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান।

এছাড়াও বক্তারা তাদের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আশঙ্কাজনকহারে নারী ও শিশুদের উপর যৌন সহিংসতা, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। নারী ও শিশু ধর্ষণ, হত্যা ও যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে পরিবারে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, কর্মক্ষেত্রে, গণপরিবহনে এবং পাবলিক প্লেসে।

অনেক নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা হচ্ছে না এবং মামলা হলেও তার সুষ্ঠু বিচার হচ্ছে না। সহিংসতার এই ক্রমবৃদ্ধিতে আমরা বিক্ষুব্ধ, হতাশ এবং চরম উদ্বিঘ্ন। এই সব অপরাধ প্রতিরোধে ও সুষ্ঠু বিচার করতে রাষ্ট্র যেন অপারগ। রাষ্ট্র ও সরকারের এমন নিষ্ক্রীয়তায় আমরা স্তব্ধ। এছাড়াও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন নারী ও মানবাধিকার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সরকারি-বেসরকারি সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ, দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্ব, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন সংগঠন উক্ত অনশনে সংহতি জানান।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post