খাগড়াছড়িতে এক শিক্ষককে কুপিয়েছে পৌর মেয়রের সমর্থিত দূর্বৃত্তরা

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ি জেলা সদরের শালবন এলাকায় আক্তার হোসেন (৩৮) নামে এক স্কুল শিক্ষককে কুপিয়েছে দূর্বৃত্তরা। রবিবার সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৬টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। আক্তারের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়েছে। আক্তার খাগড়াছড়ি পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেনের ছেলে এবং লক্ষীছড়ি উপজেলার লেলাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। এই হামলার জন্য পৌর মেয়র মো: রফিকুল আলম ও তার সমর্থকদের দায়ী করেছে আক্তার হোসেনের পরিবার।

জানা যায়, রবিবার সন্ধ্যায় মধ্য শালবন এলাকায় নিজ বাসার সামনে ৮/৯জন দূর্বৃত্ত আক্তার হোসেনকে এলোপাথারি মারধর করে এবং মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে আহত অবস্থায় খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসাপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: আলাউদ্দিন বলেন, আহত ব্যক্তির মাথার ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তবে অবস্থা স্থিতিশীল।

আক্তার হোসেনের পিতা ও পৌর কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন বলেন, কয়েকটি ইজিবাইকে করে বাসার সামনে স্থানীয় শামিম, মিরাজ, মাইন উদ্দিনসহ ৮/৯জন পৌর মেয়র রফিকুল আলমের চিহ্নিত লোকজন আমার সামনে ছেলেকে কুপিয়েছে। এই মেয়রের জন্য আমি অনেক কষ্ট করেছি। নিজের রক্ত ঝড়িয়েছি। ছেলেসহ আমাকে ৩২টি মামলার আসামি হতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সেই মেয়র আমার ছেলের উপর হামলা করেছে।

আহত আক্তার হোসেনের ছোট ভাই সাইফুল হোসেন বলেন, আমার ভাই(আক্তার হোসেন) মেয়র মো: রফিকুল আলমের বিরুদ্ধে একটি মানহানির মামলা করে। মামলাটি প্রত্যাহার করার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে মেয়র ও তাঁর লোকজন আমার ভাইকে নানাভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিল। মামলা প্রত্যাহার না করায় সুযোগ বুঝে আমার ভাইয়ের উপর মেয়রের নির্দেশে তার লোকজন হামলা করে।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি সাহাদাৎ হোসেন টিটো বলেন, ‘শামিম নামের এক যুবকের সাথে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে ঘটনাটি ঘটেছে। আগামীকাল যেহেতু উপজেলা নির্বাচন তাই অপ্রীতিকর ঘটনায় এড়াতে এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৯ জানুয়ারী খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলমের বিরুদ্ধে চীফ জুডিশয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২ কোটি টাকার মানহানীর মামলা করে আহত আক্তার হোসেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন শহরের হাসপাতাল গেইট এলাকায় অনুমতি ছাড়াই সেমিপাকা ইমারত নির্মান করেছেন মর্মে মেয়র রফিকুল আলম ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে তার বিরুদ্ধে নোটিশ দিয়েছেন। এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্য তা অপসারণ করার নির্দেশ দিয়ে তা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, অফিসার ইনচার্জ ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে অবহিত করেন। এতে শিক্ষক হিসেবে তাকে অপমান করে দুই কোটি টাকার মানহানী করা হয়েছে বলে মামলায় দাবী করা হয়। আদালত মামলাটি গ্রহন করে একুশ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। ইতিমধ্যে মামলাটি স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করেছে পুলিশ।

Read Previous

লক্ষ্মীছড়ির ১১টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু

Read Next

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মানিকছড়িতে ফাঁকা মাঠে চলছে ভোট গ্রহণ