মানববন্ধন থেকে উঠে আসলো লক্ষ্মীছড়িতে ৮৬’র সেই বাঙ্গালি গণহত্যার চিত্র

স্টাফ রিপোর্টার: বিক্ষোভ মিছিল-মানববন্ধন কর্মসূচি ছিল মহান সংসদে সেনাবাহিনী ও বাঙ্গালিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বক্তব্যের প্রতিবাদে পার্বত্য চট্টগ্রামের সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা’র অপসারণ ও শাস্তির দাবীতে।

৩মার্চ রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা পরিষদ এলাকায় এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় সচেতন পার্বত্যবাসীর ব্যানারে এ মানববন্ধনে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ জড়ো হয় উপজেলা সদরে। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, আবুল হাসেম চৌধুরী, আব্দুর রশিদ মোল্লা, আব্দুল মাজেদ গাজি, খন্দকার আব্দুল ওহাব ও মো: রেজাউল করিম। বক্তেব্যে বাসন্তী চাকমার মহান সংসদে দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনী ও বাঙ্গালিদের বিরুদ্ধে দেয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়।

বক্তব্যে ওঠে আসে ১৯৮৬ সালে তৎকালীন শান্তিবাহিনী কর্তৃক লক্ষ্মীছড়ির দুল্যাতলী মলঙ্গী পাড়ার বাঙ্গালী গণহত্যা ও কুমারি এলাকায় নৃসংশভাবে রাতের অন্ধকারে মানুষকে পুড়িয়ে মারা ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার ভয়াভহ করুন চিত্রের কথা। আব্দুল মাজেদ গাজি তাঁর বক্তেব্যর এক পর্যায় বলেন, দুল্যাতলীর সেই ভয়াভহ মানুষ হত্যার কথা আমরা এখনো ভুলে যায় নি। আমার নৃসংশ সেই হত্যাকন্ডের বিচার চাই। খন্দকার আব্দুল ওহাব বলেন, দুল্যাতলী মলঙ্গী পাড়ায় ১০জন, কুমারি এলাকায় ১১জন নারি,পুরুষ ও শিশুকে শান্তিবাহিনীরা গুলি করে, গ্রেনেট দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে এবং ঘরের মধ্যে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে পুড়িয়ে মেরে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যাযজ্ঞ চালায়। শুধু তাই নয় ২২টা গরু লুট করে নিয়ে যায় এবং ৫৩টি বসত ঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়। এখনো গুলি খেয়ে অনেকে বেঁচে আছে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। বাসন্তী চাকমা শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদেরকে নিজের ভাই বলে আখ্যায়িত করেছেন। ১৯৮৬ সালের ১লা মে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ির একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ঐ দিন সেনাবাহিনী এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙ্গালীরা মিলে “আল্লাহু আকবার” শ্লোগান দিয়ে পানছড়ির দুই তিন গ্রামের পাহাড়িদেরকে জবাই দিয়েছিলো। এছাড়াও তিনি তার বক্তব্যে সেনাবাহিনী ও পার্বত্য বাঙ্গালীদের জড়িয়ে মিথ্যা বক্তব্য দেন। প্রকৃত অর্থে এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। তার এ মিথ্য বক্তব্যে উত্তপ্ত গোটা পার্বত্য এলাকা। বাসন্তী চাকমার সেই ভাইদেরও বিচার করতে হবে।

পরে মানববন্ধন রুপ নেয় বিক্ষোভ মিছিলে। মিছিলটি উপজেলা সদর, বেলতলী পাড়া ও থানা এলাকায় প্রদক্ষিণ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাঙ্গালি নেতৃবৃন্দরা বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনী ও পার্বত্য বাঙ্গালীদের নিয়ে যে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন তা পার্বত্যবাসী মেনে নিবেনা উল্লেখ করে ধীক্কার, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান বক্তারা। অবিলম্বে তাকে অসারণসহ শাস্তি দাবি জানানো হয়। অন্যথায় মহান জাতীয় সংসদে উগ্র-সাম্প্রদায়িক ও রাষ্ট্র বিরোধী বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদে বৃহত্তরো আন্দেলন গড়ে তোলা হবে বলে বক্তারা হুশিয়ার করে দেন।

Read Previous

বাসন্তী চাকমার অপসারণের দাবিতে গুইমারাতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

Read Next

৭ই মার্চ সম্প্রীতি কনসার্ট পানছড়িতে