রাঙ্গুনিয়ায় শত একর জায়গা জুড়ে নির্মিত হচ্ছে বিশ্বমানের হেলথ সিটি

শান্তি রঞ্জন চাকমা রাঙ্গুনিয়া :- রাঙ্গুনিয়ায় ১১০ একর ভূ সম্পত্তি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকার পর বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের যৌথ উদ্যোগে বিশ্বমানের হেল্থ সিটি করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। আরব আমিরাত সরকারের অর্থায়নে ৬৪ শয্যার বিশেষায়িত হাসপাতাল ২০২০ সাল নাগাদ প্রকল্পের নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করার লক্ষ্য নিয়ে এগুচ্ছেন শেখ জায়েদ বিন আল নাহিয়ান ফাউন্ডেশন। সম্প্রতি রাঙ্গুনিয়ায় প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত এইচ ই সাইয়েদ মুহাম্মেদ আল মাহিরী। এসময় আরব আমিরাতের বিভিন্ন সংস্থার আরো চারজন সদস্য এবং বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, ১৯৮৯ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মরহুম হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের আমন্ত্রণে চট্টগ্রামে আসেন তখনকার আরব আমিরাতের বাদশা শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান। এসময় তিনি হেলিকপ্টারে চড়ে চট্টগ্রামের প্রকৃতি ও রাঙ্গুনিয়ায় স্থাপিত রওশন পল্লী দেখার সময়ে এরশাদের কাছে রাঙ্গুনিয়ায় কর্ণফুলী নদীর তীরে প্রাকৃতিক পরিবেশে সুবিশাল জায়গাটি দেখে মৃগ্ধ হন এবং সেখানে একটি প্রাসাদ ও অবকাশ যাপন কেন্দ্র নির্মাণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

আমিরাতের বাদশার পছন্দ ও ইচ্ছে অনুযায়ি এরশাদ সরকার মাত্র ১০১ টাকা প্রতিকী মুল্যে তাকে রাঙ্গুনিয়ার পোমরা এলাকায় ১১০ একর ওই জমিটি হস্তান্তর করেন। এরপর জায়গাটিতে সুবিশাল তিনটি তোরণসহ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করলেও প্রাসাদসহ অবকাশ যাপন কেন্দ্র নির্মাণ করা যায়নি। পরবর্তীতে কালক্রমে মূল্যবান ভূ-সম্পত্তি পরিত্যক্ত হয়ে বনজঙ্গলে ছেঁয়ে যায় এবং মাদকসেবীদের আস্তানায় পরিণত হয়।

রাঙ্গুনিয়া থেকে নির্বাচিত সাংসদ তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি’র প্রচেষ্ঠায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনেন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের কুটনেতিক যোগাযোগের মাধ্যমে অবশেষে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয়া হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। দেশটির চ্যারিটেবল প্রতিষ্টান শেখ জায়েদ বিন আল নাহিয়ান ফাউন্ডেশনের রাঙ্গুনিয়াস্থ ১১০ একর পরিত্যক্ত ভুমিতে এক ছাদের নিচে সব ধরণের সুবিধা সম্বলিত বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতিষ্টান গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছেন আরব আমিরাত সরকার। সেখানে বিশেষায়িত হাসপাতাল ছাড়াও থাকবে মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউটসহ ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্টান। মরণব্যাধী ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগের জন্য আলাদা ইউনিট প্রতিষ্টা করারও প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত হেলথ সিটিতে প্রাথমিক ভাবে ৬৪ শয্যার বিশেষায়িত হাসপাতাল দিয়ে শুরু করা হলেও ক্রমান্বয়ে তা ১২০ শয্যায় উন্নিত করা হবে বলে প্রকল্পটির ডিটেইল প্ল্যানে প্রস্তাব করা হয়েছে। আধুনিক মেটারনিটি সেবা নিশ্চিত করতে একটি অপারেশন থিয়েটারকে সার্বক্ষণিক দুজন সার্জনসহ প্রস্তুত রাখা হবে। অপর অপারেশন থিয়েটার ব্যবহার হবে জেনারেল সার্জারিতে। মা ও শিশুদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা হবে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের উন্নত হাসপাতাল গুলোর ন্যায় সব ধরণের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে প্রস্তাবিত রাঙ্গুনিয়া শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান হাসপাতাল। ১১০ এলাকা জুড়ে গড়ে উঠবে বিশ্বমানের হেলথ সিটি।

Read Previous

কালভার্টের অভাবে হাজার হাজার মানুষের দূর্ভোগ

Read Next

বাঙ্গালহালিয়ায় ট্রাফিক বিভাগের উদ্যোগে প্রশিক্ষণ কর্মশালা