লক্ষ্মীছড়িতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়, ঘর পেয়ে ওরা অনেক খুশি

 লক্ষ্মীছড়িতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়, ঘর পেয়ে ওরা অনেক খুশি

স্টাফ রিপোর্টার: মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” এই নির্দেশনা বান্তবায়ন করতে সারা দেশে আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় ৭০০টি গৃহীন পরিবারের জন্য উপহারের ঘর নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় ৩টি ইউনিয়নের মধ্যে লক্ষ্মীছড়ি সদর ইউনিয়নে ৩৩২টি, দুল্যাতলী ইউনিয়নে ১৯১টি ও বর্মাছড়ি ইউনিয়নে ১৭৭টি পরিবারের জন্য ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়।

গত ২০জুন মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান(২য় পর্যায়) সারা দেশে ভিডিও কন্ফারেন্স’র মাধ্যমে জেলায় ১ হাজার ৯শ ৬৩টি ঘর উদ্বোধন করেন। একই সাথে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় ৪০০ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে ঘর উদ্বোধন করেন। ইতি মধ্যে আরো ১০০ঘর নির্মাণ কাজ শতভাগ হয়েছে। আরো ২০০টি ঘরের মধ্যে অধিকাংশ ঘরের কাজ ৭০ থেকে ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে মানসম্মত ঘর নির্মাণ করে গৃহহীনদের বুঝিয়ে দিতে উপজেলা প্রশাসন সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছে। ঘর নির্মাণ কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট তদারকি কমিটির কর্তা ব্যক্তিরাও প্রতিনিয়ত ঘর নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করছেন।

দুর্গম প্রত্যন্ত এলাকা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকার কারণে ঘরের মালামাল পৌছানো কষ্টসাধ্য  হওয়ায় ওসব এলাকার ঘরগুলোর কাজ শেষ হতে কিছুটা সময় লাগছে এমনটাই জানালেন লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: ইয়াছিন। ১৩জুলাই মঙ্গলবার অনেকটা পাঁয়ে হেঁটেই কাজের অগ্রগতি সরেজমিনে পরিদর্শনে যান ইউএনও। এসময় সাংবাদিকদের বলেন, দ্বিতীয় পর্যায় ৭০০টি ঘর নির্মিত হচ্ছে। লক্ষ্মীছড়ির ৩টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে দৃুর্গম ইউনিয়ন হলো বর্মাছড়ি ইউনিয়ন। বর্মাছড়ি ইউনিয়নে ১৭৭টি ঘর নির্মিত হচ্ছে। এখানকার মানুষগুলো অনেক গরীব ও গৃহহীন তাই দূরবর্তি হওয়া সত্বেও এ অসহায় ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দিয়েছি। ঘরগুলো সুন্দর ও মানসম্মত করতে সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুল চৌধুরী ও জনপ্রতিনিধিরা এ কাজে সর্বাত্বক সহযোগীতা করছে। তদারকি কমিটিও গঠন করা হয়েছে, আমার জানামতে তারাও প্রতিনিয়ত ঘরে ঘরে গিয়ে তদারকি করছে। এখনো পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। বর্মাছড়ি ইউনিয়নের বড়পাড়া এলাকার গৃহহীন ইন্দ্র কুমার চাকমা, বাধইসি মার্মা ও স্বপন দাশ জানালেন, এভাবেই আমি খুব কষ্টে ছিলো, ভাঙ্গাচোরা খারাপ ঘরে থাকতো, এখন ভালো ঘর পাইছে, শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। অপর সুবিধাভোগী বাধইসি মারমা বলেন, বর্ষা এলে বৃষ্টির পানিতে ঘর ভিজে যেতো ঘুমাতে পারতাম না। পাকা ঘর পাওয়ার কারণে এখন সেই কষ্ট আর নেই।

মৌজা প্রধান ও ৬নং ইউপি সদস্য সুইসালা মারমা এ প্রতিনিধিকে জানান, এই এলাকায় ৩৯টি ঘর নির্মাণ হচ্ছে। এখানে যারা গরীব ও অতিদরিদ্র তারাই ঘর পাইছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।

উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুল চৌধুরী বলেন, লক্ষ্মীছড়ির বেশিরভাগ এলাকাই দুর্গম। একসাথে এতগুলো গৃহহীন পরিবারের জন্য অল্প সময়ের মধ্যে ঘর নির্মাণ করে দেয়া আমাদের কাছে এ উপজেলার জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিলো। এমনিতেই বর্ষা মৌসুম। এমন-এমন এলাকা রয়েছে যেখানে ১০/১৫ কি: মি: পাঁয়ে হাঁটার রাস্তা। সেখানেও আমরা মালামাল পৌছে দিয়ে অসহায় পরিবারকে ঘর করে দিয়েছি। অনুন্নত পিছিয়ে পরা এলাকায় গৃহহীনদের জন্য উপহার হিসেবে একজন মানুৃষের সুন্দর জীবন-মান উন্নয়নে ঘর নির্মাণ করে দেয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে কথা বলেছি তদারকি কর্মকর্তা ও উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আব্দুর রাশেদ এর সাথে তিনি বলেন, অধিকাংশ ঘর গুলো আমি পরিদর্শন করেছি। সবগুলো ঘর সুন্দর হয়েছে এবং মানসম্মত। কারো কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সারওয়ার ইউসুফ জামাল বলেন, প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে খোঁজ নিচ্ছি। আমার তদারকি অব্যাহত আছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) লক্ষ্মীছড়ি ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত তদারকি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন ভূইয়া জানালেন, ৩৩২টি ঘরের মধ্যে ২০০টিরও বেশি ঘর আমি সরেজমিনে গিয়ে দেখে এসেছি। অনেক রিমোর্ট এরিয়াতে এ ঘরগুলো। দেখতে অনেক সুন্দর। আমার চোখে কোনো ত্রুটি ধরা পরেনি।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post