সেনাক্যাম্প পুনঃস্থাপন ও নানা বৈষম্য’র প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার: পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ী-বাঙ্গালী সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার স্বার্থে, প্রত্যাহারকৃত সেনাক্যাম্পের খাসভূমি দখলরোধ করতে ও পাহাড় হতে সন্ত্রাস নিমূল করতে পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে ইতিপূর্বে প্রত্যাহারকৃত সকল সেনা ক্যাম্প পুনঃস্থাপন ও নতুন নতুন সেনা ক্যাম্প স্থাপন করা, খাগড়াছড়ির বিভিন্ন উপজেলায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ইউএনডিপি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বিতরণকৃত গবাদি পশু, সেচ পাম্প ও পাওয়ার টিলার বিতরণে পাহাড়ী-বাঙ্গালী বৈষম্য এবং খাগড়াছড়ি জেলা শহরের টিএন্ডটি গেইট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে প্রবীন হিতৈষী সংঘের ভবন নির্মাণ করার প্রতিবাদ ও দ্রুত উক্ত মাঠ বিদ্যালয়ের নামে বন্দোবস্তি দেওয়ার দাবিতে খাগড়াছড়িতে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করেছে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ।

৮জুলাই দুপুরে খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ইঞ্জি. আব্দুল মজিদ। জেলা সভাপতি মোঃ আসাদুল্লাহ আসাদের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন, খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ-সভাপতি মোঃ সুমন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহাদাৎ হোসেন কায়েশ, সহ- সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে জেলা সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ ওমর ফারুক, মোঃ সোহেল রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আশ্রাফুল আলম রনিসহ সংগঠনটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।  এসময় বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-সম্প্রীতি ও উন্নয়নে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ও পাহাড়ে বসবাসরত নাগরিকদেও নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে দ্রুত প্রত্যাহারকৃত সকল সেনা ক্যাম্প পুনঃস্থাপন ও নতুন নতুন সেনা ক্যাম্প স্থাপন করতে হবে।

বাঙ্গালীরা যুগ যুগ ধরে সর্বক্ষেত্রে সরকারী সুযোগ থেকে বঞ্চনা ও বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে। সম্প্রতি, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ কর্তৃক জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কৃষি সরঞ্জামাদি বিতরনের খতিয়ান থেকে বিষয়টি আবারো প্রতীয়মান হয়েছে। সর্বশেষ, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইউএনডিপির আওতায় খাগড়াছডড়ির বিভিন্ন উপজেলায় কৃষকদের মাঝে সেচ পাম্প ও পাওয়ার টিলার বিতরণের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ। সরঞ্জামাদি বিতরণ করার ক্ষেত্রে বাঙ্গালীদেরকে নামমাত্র অংশীদার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা।

নেতৃবৃন্দ বলেন, কৃষি সরঞ্জামাদি বিতরনের ক্ষেত্রে এই বৈষম্যের দায়ভার পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ও কোন ভাবে এড়াতে পারে না। তাছাড়া একজন স্থানীয় প্রতিনিধি অবশ্যই সকল ধর্ম-বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করবেন কিন্তু খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জনাব কংজরী চৌধুরী বেশ কয়েকটি উপজেলায় নিজ হাতে সরঞ্জাম বিতরণ করলেও তিনি পাহাড়ী-বাঙালি বৈষম্যের বিষয়টি নিয়ে কোনো আওয়াজ করেননি। সুতরাং এরকম একজন সাম্প্রদায়িক মানসিকতার চেয়ারম্যান দিয়ে পার্বত্য জেলা পরিষদ চলতে পারেনা বলে দাবি পিবিসিপি নেতৃবৃন্দের।

জেলা শহরের টিএন্ডটি গেইট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে প্রবীন হিতৈষী সংঘের ভবন নির্মান করার বিষয়ে নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, একজন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কিভাবে একটি বিদ্যালয়ের সাইন বোর্ড ভাংতে পারেন? এ ঘটনায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরীর পদত্যাগ দাবি করে অবিলম্বে উক্ত বিবাদমান মাঠ বিদ্যালয়ের নামে বন্দোবস্তির দাবি জানান তারা।

এসময় পিবিসিপি নেতৃবৃন্দ উক্ত ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের মতো একজন অনির্বাচিত, অযোগ্য ও সাম্প্রদায়িক চেতনা সমৃদ্ধ ব্যক্তিকে অপসারণ করে শীঘ্রই নির্বাচনের মাধ্যমে জেলা পরিষদে একজন নির্বাচিত ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা সমৃদ্ধ জনপ্রতিনিধিকে দ্বায়িত্ব দিতে সরকারের নিকট আবেদন জানান।

Read Previous

পানছড়িতে পাওয়ার টিলার ও সেচ পাম্প বিতরণ

Read Next

মানিকছড়ি উপজেলা ট্টাক চালক সমবায় সমিতির র্নিবাচন সম্পন্ন