হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দুই নেত্রীকে উদ্ধারের দাবিতে ঢাকায় নাগরিক সমাবেশ

ডেস্ক রিপোর্ট: অবিলম্বে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী মন্টি চাকমা ও দয়াসোনা চাকমাকে উদ্ধারের দাবিতে আজ ৬ এপ্রিল ২০১৮, শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে নিপীড়ন বিরোধী নারী-যুব-ছাত্র সংগঠনমূহ’ ব্যানারে প্রতিবাদী নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরূপা চাকমার সভাপতিত্বে ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিনয়ন চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ^বিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সাইয়িদ ফেরদৌস, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য মেঘনা গুহ ঠাকুরতা, তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনু মুহাম্মদ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম ও সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিষ্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।

সমাাবেশে নিপীড়ন বিরোধী নারী-যুব-ছাত্র সংগঠনসমূহের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রানা, শ্রমজীবী নারী মৈত্রী’র সভাপতি বহ্নি শিখা জামালী, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায়, বিপ্লবী নারী মুক্তি আহ্বায়ক নাসিমা নাজনীন, ছাত্র ঐক্য ফেরামের যুগ্ম আহ্বায়ক সরকার আল ইমরান, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শম্পা বসু, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি এমএম পারভেজ লেলিন, সিপিবি নারী সেল-এর লুনা নূর  সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স, বিপ্লবী নারী ফোরাম’র আমেনা আক্তার, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের অর্থ সম্পাদক তসলিমা আক্তার বিউটি, নারী সংহতির সাধারণ সম্পাদক অপরাজিতা চন্দ ও প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সমন্বয়ক গোলাম মোস্তফা।

এছাড়া সমাবেশে সংহতি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশিদ ফিরোজ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক আহমেদ কামাল ও সামিনা লুৎফা নিত্রা, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদক ম-লীর সদস্য এ্যাডভোকেট মুরাদ মোর্শেদ, ফ্যাসিবাদ ও সা¤্রাজ্যবাদ বিরোধী জাতীয় কমিটির সদস্য রকিব পারভেজ ও গবেষক মিজানুর রহমান বিজয়।

আনু মুহাম্মদ বলেন, ৯২ সালে আমরা মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটি থেকে যেসব দাবি জানিয়েছিলাম সে দাবিগুলো এখনো পূরণ হয়নি। সে সময় আমরা পাহাড়ে হত্যাকা-ের বিচার, ভূমি অধিকার ও জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি দাবি করেছিলাম। সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের জাতিসত্তাগুলোকে এখনো সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি, তাদের অস্বীকার করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, উন্নয়নের নামে কাপ্তাই বাধ দিয়ে লক্ষাধিক মানুষকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। সরকারের বড় আমলারা ভূমি বেদখল করে তাদের স্বার্থ বজায় রাখার লক্ষ্যে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, কল্পনা চাকমাকে অপহরণকারী সেনা কর্মকর্তার আজো বিচার হয়নি। তেমনিভাবে কুমিল্লায় তনু হত্যারও বিচার হয়নি। এসব ঘটনায় জড়িত সেনা সদস্যদের বিচার করা হলে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হতো। কিন্তু এসব ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার কারণে পুরো বাহিনীর ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

ফয়জুল হাকিম বলেন, মন্টি চাকমা ও দয়া সোনা চাকমা অপহরণ ঘটনা সাধারণ কোন নারী নিপীড়নের ঘটনা নয়। এটা ইউপিডিএফ-এর গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার যে ষড়যন্ত্র তারই কারণে ঘটেছে। ব্যারিষ্টার জ্যোতির্ময় বড়–য়া বলেন, অপহৃত দুই নেত্রীকে উদ্ধারের দায়িত্ব রাষ্ট্রের হলেও এখনো পর্যন্ত তাদের উদ্ধারে কোন তৎপরতা নেই। তিনি বলেন, শাসকগোষ্ঠী দেশে এমন এক অবস্থা তৈরি করেছে মানুষ বিচার চাওয়ার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলছে। এক দমবন্ধ হওয়া পরিস্থিতির মধ্যে আমরা রয়েছি। তারপরও পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেই যাচ্ছে।

সমাবেশে নিপীড়ন বিরোধী নারী-যুব-ছাত্র সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দ পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশে চলমান নারী নির্যাতন, খুন, গুম অপহরণের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এজন্য দেশের বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে দায়ী করেন। সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে মন্টি ও দয়াসোনা চাকমাকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার ও অপহরণকারীদের গ্রেফতারপূর্বক বিচারের দাবি জানান।

Read Previous

লামায় চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা, যুবক আটক

Read Next

খাগড়াছড়ি শহরে মাছ বাজারে আগুন: কোটি টাকা ক্ষতি