অবরোধে সংঘর্ষ, গাড়ী ভাংচুর, রাস্তায় আগুন, পুলিশ-শিশু আহত, চালক গুলিবিন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার: হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দুই নেত্রীকে অস্ত্রের মুখে অপহরণের প্রতিবাদী ইউপিডিএফের ৩সহযোগী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের ডাকা খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলায় সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসুচী পালনকালে খাগড়াছড়ি’র গুইমারাতে পুলিশের সাথে অরবোধকারীদের সংঘর্ষে উত্তম কুমার নামে কনষ্টেবল আহত, গাড়ী ভাংচুর, রাস্তায় আগুন, সিএনজি চালকের গলায় গুলি, গাড়ীতে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে উত্তম কুমার নামের গুইমারা থানার এক পুলিশ কনষ্টেবল ছাড়াও খাদিজা আক্তার নামে ১৮ মাসের শিশু মাথায় গুরুতর আহত ও শরিফুল ইসলাম নামের সিএনজি চালক গুলিবিন্ধ হয়েছে।

২১মার্চ বুধবার অবরোধের সকাল ৯টায় বাইল্যাছড়ি স্কুলপাড়া এলাকায় এস.আই জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টহল দল দোকানে চা খাওয়া অবস্থায় অবরোধকারীর আকষ্মিক হামলা চালিয়ে উত্তম কুমার নামের এক কনষ্টেবলকে গুরুতর আহত করে। পরে পুলিশ ও যৌথবাহিনী হামলাকারীদের ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায় বলে গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শাহাদাত হোসেন টিটো জানান। আহত পুলিশ কনষ্টেবল উত্তম গুইমারা সিএমএইচে চিকিৎসাধীন আছেন বলেও জানান তিনি। কিন্তু পিসিপি গুইমারা শাখার সভাপতি অভি চাকমা পুলিশের উপর হামলার কথা অস্বীকার করে বাইল্যাছড়িতে পুলিশ পিসিপি কর্মীদের উপর রাবার বুলেট ছুটে অনিল ও টিটু চাকমার নামের দুই কর্মীকে আহত করার পাল্টা অভিযোগ করেন।

অবরোধের শুরুতে গুইমারাতে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) গুইমারা শাখার নেতাকর্মীরা ভোরে গুইমারা খাদ্যগুদাম সংলগ্ন ও বাইল্যাছড়ি স্কুলপাড়া এলাকায় রাস্তায় টায়ার জ¦ালিয়ে ও গাছের গুলিতে আগুন ও গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে পরে পুলিশ সহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা তা সরিয়ে ফেলে।

এছাড়াও মানিকছড়ি গচ্ছাবিলের বাসিন্দা খোকন মিয়ার স্ত্রী ও শিশু কন্যা খাদিজা আক্তার সিএনজি যোগে গুইমারা আসার পথে বেলা ১১টায় থলিবাড়ী এলাকায় পৌছলে অবরোধকারীদের ছোঁড়া গুলতির (মারবেলের) আঘাতে খাদিজার মাথায় গুরুতর জখম হয় মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে গুইমারা বিজিবি হাসপাতালে নিয়ে আসলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে বিজিবি’র নিজস্ব এ্যামবুলেন্সে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলে বিজিবি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর নাসির জানান। গুইমারা থেকে রামগড় যাওয়ার সময় কলাবাড়ী নামক স্থানে দুপুর সাড়ে ১২টায় অবরোধকারীদের ছোড়া গুলিতে মোঃ শরিফুল ইসলাম(২২), পিতাঃ মমিনুল হক নামের সিএনজি চালক গুলিবিদ্ধ হয়। এলাকাবাসী ও পুলিশ শরিফুলকে উদ্ধার করে রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। রামগড় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ রতন খীসা জানান, শরিফুলের গলায় গুলি লাগে এবং গুলিটি এখনও ভিতরে রয়েছে রোগীর অবস্থা আশংকাজনক।

বুধবার হাঁটের দিন হওয়ায় মালামাল নিয়ে চাঁদে গাড়ি আসলে পিকেটাররা গ্লাস ভেঙ্গে দেয়। অবরোধের সমর্থনে রাস্তায় টায়ার জ¦ালিয়ে পিকেটিং করছে ইউপিডিএফ’র নেতাকর্মীরা। এসময় বেশ কয়েকজনকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয়া হয়। লক্ষ্মীছড়ি-মানিকছড়ি সড়কে পিকেটারা আদর্শ গ্রাম, লেমুয়া এলাকায় অন্তত ৩টি অটোবাইক ও একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। মংহলা পাড়া এলাকায় একটি জীপ গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে দেয়াসহ টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে  পিকেটাররা।

অবরোধে গুইমারা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ২টি পিকআপ, ১টি জীপ(ছান্দের গাড়ী) ১টি সিএনজিসহ বেশকটি গাড়ী ভাংচুর করে অবরোধকারীরা। সকল প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইন-শৃংখলা বাহিনীর টহল বাড়ানো হয়েছে এব বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের তৎপরতা ছিল লক্ষ্যনীয়।

Read Previous

খাগড়াছড়িতে বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্যদিয়ে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ পালিত

Read Next

রামগড়ে অবরোধ থেকে সিএনজি চালককে গুলি করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ