এবার মানবতার মুখোমুখি ছোট্ট মালেক…

রামড়(খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি: মোঃ আব্দুল মালেক, ১০ বছরের ছোট্ট বালক। এখনো বুঝতেই শিখেনি পৃথিবীটা আসলে কি? পড়ালেখা করে বড় হয়ে সমাজের জন্য কিছু করার ইচ্ছে থাকলেও শিক্ষাজীবন শুরুর আগেই ঝরে পড়লো বিদ্যালয়ের গন্ডি থেকে। মালেক ২০০৮ সালের পহেলা ১ জানুয়ারি মঙ্গলবার খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড় উপজেলার ২নং পাতাছড়া ইউনিয়নের বুদংছড়ার হতদরিদ্র মালেকা বেগম ও সুরুজ মিয়ার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। মালেকা-সুরুজ দম্পতির ঘরে মালেক ৪র্থ সন্তান। গরীব হলেও কখনো সন্তানদের প্রতি কোন অবহেলা ছিলো না মা-বাবার। অন্যর জমিতে ঘর উঠিয়ে দৈনিক ১৫০ টাকা হারে কাজ করতেন মালেকা-সুরুজ উভয়েই। তাদের সংসারটি চলছিলো বিধাতার লিখনিতেই। একটা সময় এসে তাদের সংসারে নেমে আসে অন্ধকারের কালো ছায়া। যা কল্পনা করা ভয়াবহ।

২০১৪ সালে জুলাই মাসের ১৭ তারিখ বাড়িতে রাখা পাহাড়ী কচু ক্ষেতে দেয়া বিষের বোতল থেকে নিজের অজান্তেই বিষ পান করে তাৎক্ষনিক অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যায় মালেকা-সুরুজের ছোট কণ্যা রহিমা আক্তার। এতে বেশ ভেঙ্গে পরে পরিবারটি।  এদিকে রহিমার মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই আরেকটি বড় ধাক্কা এসে লাগে পরিবারটিতে। পরিবারের ছোট ছেলে মোঃ মোজাম্মেল হোসেন তখন নাকাপা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার  ১ম শ্রেণীর ছাত্র। একই বছরের নভেম্বর মাসের ২৬ তারিখ বুধবার সকাল আনুমানিক ৯টায় মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে অপরদিক থেকে আসা একটি ট্রাক কেড়ে নিলো মোজাম্মেলের প্রাণ। এবার আর স্থির থাকতে পারলোনা পরিবারটি। আরো ভেঙ্গে পড়লো সবাই। পরিবারের প্রধান কর্মঠ ব্যক্তি সুরুজ মিয়া মানসিক আঘাতে প্রায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। পরপর দুটি ঘটনায় পরিবারের ২ সদস্যকে হারিয়ে হতবিহব্বল হয়ে পড়ে তারা। সংসারটির সবাই যখন মানসিকভাবে দূর্বল হয়ে পড়েন ঠিক তখনই এলো মালেকের পালা।

সেদিন বাড়ির পাশের পুকুরে একা একা গোসল করতে গিয়েছিলো মালেক। পানিতে নামার পর আগে থেকে পানির নিচে পুঁতে রাখা বাঁশের কঞ্চি ডুকে পড়ে পড়ে মালেকের তলপেটসহ পুরুষাঙ্গে। অতঃপর অজ্ঞান হয়ে যায় মালেক, অন্যদের চিৎকার চেচামেচিতে তাৎক্ষনিক স্থানীয়দের সহযোগিতায় মালেককে নিয়ে যাওয়া হয় রামগড় হাসপাতালে, অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ডাক্তারদের পরামর্শক্রমে তাকে রেফার করারা হয় কুমিল্লার একটি হাসপাতালে। এবারের মতো জীবন ফিরে পেলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি মালেক। ধার-দেনা করে অপারেশন করলেও তার পূরুষাঙ্গটি আর আগের জায়গায় প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়নি, সংযোগ করে দেয়া হয়েছে নাভির সাথে। আর সাথে নিয়মিত ঔষুধের খসড়াতো রয়েছেই। এর পর নির্দিষ্ট সময়ে প্রায় ২ লক্ষ টাকা ব্যায়ে আরো ২টি অপারেশন করার কথা থাকলেও বর্তমানে আার্থিক সঙ্কটে আটকে আছে মালেকের চিকিৎসা, আর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে দাড়িয়ে মালেক।
স্বামীর মানসিক দুরাবস্থায় মালেকা বেগমের একার পক্ষে মালেকের  চিকিৎসার এ খরচ বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। টাকার জোর নিবু নিবু করলেও মনের জোর অনেক শক্ত মালেকা বেগমের আর তাই তিনি এখনো মনে করেন সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টা তার মালেককে ফিরিয়ে দিবে তার বুকে।

মালেকের চিকিৎসায় তার আতœীয় স্বজন ও এলাকার কিছু উদ্যমী যুবক তহবিল সংগ্রহ করছেন।
মালেকের চিকিৎসার জন্য ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের সকল মানুষের কাছে নুন্যতম সহযোগীতা চেয়েছেন তারা।
ছোট্ট বালকটির জীবন রক্ষায় সহায়তা পাঠানোর ঠিকানা: বিকাশ: ০১৮২৩২৫৬৩৮৪ (পারসোনাল), রকেট: ০১৫৮০২৪২৫৫৫-৫ (এজেন্ট)।

Read Previous

লামায় ত্রিপুরা সমাবেশ অনুষ্ঠিত

Read Next

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ মানিকছড়ি উপজেলা শাখার কাউন্সিল