দীঘিনালায় এলাকাবাসীর প্রতিষ্ঠিত একটি স্কুলে আসবাবপত্র সংকটে পাঠদান ব্যহত

মোঃ আল আমিন, দীঘিনালা: গ্রামে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিলনা। ৪/৫ কি. মি. পাহাড়ি পথ পায়ে হেটে বিদ্যালয়ে যেতে হতো শিশু শিক্ষার্থীদের। এ কারণে অনেক শিশুই ছিল শিক্ষা বঞ্চিত। এমনি সময় এলাকাবাসির উদ্যোগে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে বিনা বেতনে দীর্ঘদিন থেকে পাঠদান দিয়ে তা  ধরে রাখলেও নানা সংকটে রয়েছে দরিদ্র এলাকার এ বিদ্যালয়টি। এটি খাগড়াছড়ির দীঘিনালার কবাখালি ইউনিয়নের শুকনাছড়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র। ২০১০ সালে টিনশেড বাঁশের বেড়ায় নির্মিত বিদ্যালয়ে আসবাবপত্র সংকটে চরম দূর্ভোগের মধ্যে পাঠদান নিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে যেনতেন করে বানানো ভাঙ্গা বেঞ্চে গাদাগাদি করে বসেই পাঠদান নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ছোট্ট বিদ্যালয় ঘরটিতে কক্ষ সংকটও প্রবল। শিক্ষকরা বারান্দায় বসে অফিস কক্ষে পাঠদান দেওয়া হয় প্রাক-প্রাথমিক শিশু শিক্ষার্থীদের।

প্রধান শিক্ষক এলিন চাকমা জানান, বর্তমানে শিক্ষার্থী রয়েছে ১০৭ জন। আশপাশের কয়েক গ্রামে বিদ্যালয় না থাকায় এলাকার শিশুদের শিক্ষার কথা চিন্তা করে তিনিসহ চারজন শিক্ষক বিনা বেতনে দীর্ঘদিন থেকে পাঠদান দিচ্ছেন। দরিদ্র এলাকাবাসির পক্ষ্যে শিক্ষকদের বেতন দেওয়া সম্ভব হয়না। এর মধ্যে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য বই সরবরাহ করে সহযোগীতা করা হয়েছে। এর বাহিরে আর কোন সংকটে কারো কোন সহযোগীতা পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় আর কতদিন এ প্রতিষ্ঠানটি ধরে রাখা সম্ভব হবে সে বিষয়ে এখন চিন্তিত রয়েছেন।

৪র্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ইয়ানা চাকমা, বিজয় চাকমা এবং ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তুংস চাকমা ও শ্রাবন্তি চাকমা জানায়, এ বিদ্যালয়টি না থাকলে ৫/৬ কি.মি. পথ পায়ে হেটে জোড়াব্রিজ এলাকার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে হতো। তাহলে এতাদুরে গিয়ে পড়া-লেখা করা সম্ভব হতোনা। গ্রামে বিদ্যালয় নির্মিত হওয়ায় অনেক সুবিধা হলেও বিদ্যালয়ে আসবাবপত্র সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরা দূর্ভোগে রয়েছে।

শিক্ষার্থীর অবিভাবক সঞ্জিতা চাকমা (৪৫) জানান, তাঁর ছেলে রবিসোনা চাকমা চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ছে। সঞ্জিতা জানান, পাশাপাশি এখানকার সব কয়টি গ্রামের অধিবাসিরাই হতদরিদ্র। বিদ্যালয়টি শুরু হওয়াতে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হয়েছে। এখন বিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো দুরীকরণে সরকারী বেসরকারী কোন সংস্থা সহযোগীতার হাত বাড়ালে অনেক এগিয়ে যেত।

স্থানীয় পাড়া প্রধান (কার্বারী) সুরেশ বিহারী চাকমা জানান, স্থানীয়দের আর্থীক সহযোগীতা এবং শ্রমে বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। এর পর থেকে শিক্ষিত চারজন শিক্ষক বিনাবেতনে পাঠদান করে বিদ্যালয়টি টিকিয়ে রেখেছেন। বিদ্যালয়ে এখন আসবাব পত্র খুবই জরুরী। আসবাবপত্রের জন্য কয়েক জায়গায় আবেদন করেও এখনো কোন সুফল মিলেনি বলে দাবী করেছেন সুরেশ বিহারী চাকমা।

Read Previous

ছাত্রী খুন ও মারমা গৃহিণী ধর্ষণের প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ

Read Next

দীঘিনালায় বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের র‌্যালি ও অালোচনা সভা