আলীকদম সেনা জোনের উদ্যোগে ‘সাঙ্গু দুর্বার শিশু নিকেতন’ উদ্বোধন

লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি: বান্দরবানের লামায় আলীকদম সেনা জোনের উদ্যোগে ‘সাঙ্গু দুর্বার শিশু নিকেতন’ নামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। শনিবার উপজেলার ফাঁশিয়াখালী ইউনিয়নের দুর্গমে অবস্থিত সন্ত্রসের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত ‘গয়ালমারা’য় এই বিদ্যালয়টি উদ্বোধন করা হয়। আলীকদম সেনা জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল মাহবুবুর রহমান পিএসসি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিদ্যালয়টি উদ্বোধন করেন। এসময় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার, মৌজা হেডম্যান, পাড়া কর্বারী, ওয়ার্ড মেম্বারসহ স্থানীয় সর্বস্তরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে এই মহতি উদ্যোগের প্রশংসা করেন। জোন কমান্ডার বলেন, শিক্ষার উপরে অন্য কিছু নেই। এলাকার লোকজন শিক্ষিত হলে সবধরনের অন্যায় অবিচার সন্ত্রাস জোর জুলুম আপনা আপনিই বিদায় নেবে। তিনি আরো বলেন, এলাকাবাসি দাবি করেছেন, সন্ত্রসী মোকাবেলা করতে সেনা ক্যাম্প স্থাপনের। আমি দেখলাম, অস্ত্র দিয়ে অস্ত্রের মোকাবেলার চেয়ে জ্ঞান দিয়ে এসবের প্রতিহত করতে।

দেশ স্বাধীনের পর থেকে উপজেলার ফাঁশিয়াখালী ইউনিয়নের দুর্গমে অবস্থিত গয়ালমারা কোন বিদ্যালয় ছিলনা। এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করায় শিক্ষার আলো বঞ্চিত শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে উঠবে। আলীকদম জোন কমান্ডার লে: কর্ণেল মো: মাহবুবুর রহমান পিএসসি’র একান্ত প্রচেষ্টায় লামা উপজেলার দূর্গম গয়ালমারা সন্ত্রাস প্রবন এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হলো ‘ সাঙ্গু দূর্বার শিশু নিকেতন নামে’ একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। জম্ম থেকে যেসব শিশুরা কেবল সন্ত্রাসীদের আনাগোনা দেখে আসছিল; সে শিশুরা এখন থেকে শিক্ষার মতো একটি মৌলিক অধিকার পেতে শুরু করেছে। আলীকদম জোন মূলত: এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সুদীর্ঘ কাল থেকে শিক্ষা বিস্তারেও ব্যাপক অবদান রেখে আসছে। প্রাথমকি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিস্তারে আলীকদম সেনাজোন প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে কাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি লামা উপজেলার দূর্গম গয়ালমার গ্রামে শিক্ষা বঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে জোন কমান্ডার লে: কর্নেল মো: মাহবুবুর রহমান পিএসসি গয়ালমারা গ্রামে ‘সাঙ্গু দূর্বার শিশু নিকেতন’ নাম করণে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।

১৫ সেপ্টেম্বর/১৮ এই শিশু নিকেতনটির শুভ উদ্বোধন করেন আলীকদম জোনের সেনা কর্মকর্তারা। জোনের এই মহতি প্রয়াসে লামা ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদারসহ এলাকার অন্যরা সহায়তা করেন। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠায় জমি দিয়ে সহায়তা করেন স্থানীয়রা। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ফলে দূর্গমের উপজাতি এবং অউপজাতি শিশুরা এখন থেকে শিক্ষা মুখি হবে বলে স্থানীয়দের প্রত্যাশা। তারা জানান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের পাশাপাশি শিক্ষা, সিকিৎসাসহ জনগনের মৌলিক অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার বলেন, দূর্গম গয়ালমারা গ্রামে এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হওয়ায় শিশুরা শিক্ষা মুখি হবে একই সাথে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড কমে আসবে।

গয়ালমারা এলাকাটি লামা উপজেলার সর্ব দক্ষিণে একেবারে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে হওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ কষ্ট সাধ্য। এখানে একটি স্থায়ী সেনা ক্যাম্প স্থাপন করা হলে এলাকাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চত হবে। লামা উপজেলার সন্ত্রাস উপদ্রুত এলাকা গয়ালমারা গ্রামে সেনা কর্তৃপক্ষের এই উদার ও মানবিক উদ্যোগ দেখে উপজাতিরা খুবই মুগ্ধ হয়েছেন বলে সেখানকার হেডম্যান কারবারীরা জানিয়েছেন।

Read Previous

মানিকছড়িতে মাশরুম চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও বীজ বিতরণ

Read Next

পানছড়ি বাজারের আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা