অবশেষে বিজিবির বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর মামলা নিল মাটিরাঙ্গা পুলিশ
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: পাল্টাপাল্টি অভিযোগের পর একই পরিবারের তিনজনসহ চার গ্রামবাসীকে হত্যার অভিযোগে বিজিবির বিরুদ্ধে মামলা নিল মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ। গ্রামবাসীর মামলা গ্রহণ নিয়ে নানা ধরনের টালবাহানার পর শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে হত্যার অভিযোগে ৪০ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের (বিজিবি) হাবিলদার মো. ইসহাক আলীসহ ৬ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। বিজিবির গুলিতে নিহত মফিজ মিয়ার ছেলে মানিক মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন বলে জানা গেছে।
বিজিবির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা মামলা গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করে মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দিন ভূইয়া বলেন, মৃত মফিজ মিয়ার ছেলে মো. মানিক মিয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মাটিরাঙ্গা থানার মামলা নং-৩, তাং ০৬.০৩.২০২০ইং।
মামলার এজাহারে ঘটনার দিন গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে মো. মফিজ মিয়াসহ অপরাপর ব্যাক্তিদের মারধর, জখম ও সামনে থেকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ আনা হয় বিজিবির হাবিলদার মো. ইসহাক আলীসহ অপরাপর অভিযুক্ত বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে। সাধারণ মানুষকে গুলি করার সময় বাঁধা দেয়ায় বিজিবি সদস্য শাওন খানকে গুলি করে হত্যারও অভিযোগ আনা হয় বিজিবি হাবিলদার মো. ইসহাক আলীর বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে মানিক মিয়া বাদী হয়ে ৪০ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি) সদস্যর বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলেও মামলা নেয়নি মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ। পুলিশ মামলা গ্রহণ না করায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এলাকাবাসী।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৩ মার্চ) জনৈক চান মিয়ার বাগানের চার টুকরা কাঠাল গাছ পরিবহনকালে মাটিরাঙ্গার গাজিনগরে বিজিবি বাঁধা প্রদান করে। একসময় গাছগুলো বিজিবি নিজেদের ক্যাম্পে নিয়ে যেতে চাইলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে বিজিবি এলোপাথারী গুলি করে। এসময় ঘটনাস্থলেও মারা যান সাহাব মিয়া প্রকাশ মুছা মিয়া ও তার ছেলে মো. আকবর আলী। এ সময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বিজিবি সদস্য শাওন খান, স্থানীয় আহাম্মদ আলী, মো. মফিজ মিয়া এবং মো. হানিফ মিয়াকে মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানেই মারা যান সাহাব মিয়ার আরেক ছেলে আহাম্মদ আলী ও বিজিবি সদস্য শাওন খান। এদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান আহাম্মদ আলীর শ্বশুর মো. মফিজ মিয়া। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ মো. মফিজ মিয়ার ছেলে মো. হানিফ মিয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।