মানিকছড়ি উপজেলা: আ’লীগ প্রচারণায় এগিয়ে, নিরব ভোট বিপ্লবের প্রত্যাশায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা
আবদুল মান্নান,মানিকছড়ি: পঞ্চম উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিন ১৬ মার্চ। আর এ নির্বাচনী প্রচারণায় মানিকছড়িতে আওয়ামীলীগ এগিয়ে থাকলেও উত্তাপ নেই স্বতন্ত্রপ্রার্থীর পক্ষে! শুধু মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪জন প্রার্থী হলেও আওয়ামীলীগ ১জনকে সমর্থন দেয়ায় অন্যরা নির্বাচনী মাঠে অনেকটা কোনঠাসা। তবে স্বতন্ত্রপ্রার্থীরা নিরব বিপ্লবের স্বপ্ন দেখছে। অন্যদিকে ভোটাররা চাইছেন নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশ।
নির্বাচনী মাঠ ঘুরে জানা গেছে, ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ভোট গ্রহন আগামী ১৮ মার্চ। খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ পদে একাধিক প্রার্থী না থাকায় শুধু মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট অনুষ্টিত হবে। আর এ ক্ষেত্রে প্রার্থী ৪জন। এর মধ্যে ৩জনই আওয়ামীলীগ সমর্থিত এবং ১জন বিএনপি সমর্থিত(সম্প্রতি বিএনপি তাকে দল থেকে বহিস্কার করেছে)। এখানে আওয়ামীলীগ ঘরোয়ানার ৩জন ও বিএনপিমনা ১জন। আওয়ামী পরিবারের ৩জন প্রার্থী হলেও আওয়ামীলীগ সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে নেমেছেন একজনের পক্ষে! আর তিনি হলেন,তিন তিন বারের নির্বাচিত সাবেক সংরক্ষিত ইউপি সদস্য ডলি চৌধুরাণী।
অন্যরা হলেন হলেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা)রাহেলা আক্তার(ফুটবল) ও নূরজাহান আক্তার লাকি (হাঁস) এবং সাবেক ইউপি সংরক্ষিত সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান শিউলি বেগম(প্রজাপতি)।
নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন। প্রথমত উপজেলা আওয়ামীলীগ পরিবারের ৩জন প্রার্থী থাকা স্বত্তেও আওয়ামীলীগ উপজাতি নেত্রী ও তিন তিন বারের নির্বাচিত সাবেক সংরক্ষিত ইউপি সদস্য ডলি চৌধুরাণীর পক্ষে সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছেন! জেলা,উপজেলা থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সকল নেতাকর্মীরা বাধ্য হয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সাফাই গাইতে হচ্ছে! এতে প্রচারণায় চরম বেগ পেতে হচ্ছে দলীয় অন্য ২ প্রার্থী রাহেলা আক্তার ও নূর জাহান আক্তার লাকি’।
অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান এবং সাবেক সংরক্ষিত ইউপি সদস্য শিউলি বেগম কোন রাজনৈতিক নেতা-কর্মী কিংবা কোন পক্ষের জোরালো সমর্থন ছাড়াই নিজস্ব কলাকৌশলে ভোটভিক্ষারী হয়ে ঘরে ঘরে ভোট চাইছেন।
যেখানে আওয়ামীলীগ সকল নেতাকর্মীদের একজন প্রার্থীর পক্ষে ভোটযুদ্ধে সামিল করেছেন,সেখানে স্বতন্ত্রপ্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণায় স্বাভাবিকভাবে বেগ পেতে হয়েছে! কোথাও তারা দলীয় কর্মীকে সাথে পায়নি। যদিও এ নিয়ে ভোটারদের মনে নানা ধরণের অভিমত,সংশয় রয়েছে।
শনিবার(১৬ মার্চ) প্রচারণার শেষ দিনে ৪ প্রার্থী সকাল থেকে শেষ সময় পর্যন্ত উপজেলা তৃণমূল থেকে সদর পর্যন্ত শেষ প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করার চেষ্ঠা করছেন। বিশেষ করে উপজেলার রাজবাজারের সাপ্তাহিক বাজার বার হওয়ায় তৃণমূলের লোকজন ছুঁটে আসায় প্রার্থীরা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করার সুযোগ পেয়েছেন।
দলীয় প্রার্থী ডলি চৌধুরাণীর দৃষ্টিতে তাঁর বিজয় সুনিশ্চিত। তিনি বর্তমান সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়ন এগিয়ে নিতে এবং অবহেলিত নারী সমাজকে সাথে নিয়ে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখছেন। তাঁর পক্ষে উপজেলা আওয়ামীলীগ,ছাত্রলীগ,যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনের পাশাপাশি জেলা নেতৃবৃন্দরা প্রচারণার শুরু থেকে সর্বত্র চষে বেড়াচ্ছেন।
অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রতিদিন গণসংযোগ ও প্রচারণায় নিজস্ব আঙ্গিকে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ,ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ,শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়া, দুর্নীতি ,বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ , প্রতিবন্ধী ও সমাজে অবহেলিত নাগরিকদের মূল¯্রােত ধারায় এনে সমাজ উন্নয়নে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গিকার ব্যক্ত করে চলেছেন। স্বতন্ত্র ৩জন প্রার্থীই সুষ্ঠভোট নিয়ে শংকায় প্রকাশ করেছেন! তাঁদের ধারণা(আশংকা) ভাইস চেয়ারম্যান পদটি স্বতন্ত্র ঘোষণা করা স্বত্তেও এখানে দল একজনের পক্ষ নিয়ে দলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছেন। ফলে সাধারণ ভোটাররা সুষ্ঠভোট নিয়ে শংকায় রয়েছেন। তাঁদের দাবী নিরপেক্ষ ও সুষ্ট ভোট হলে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর ভরাডুবি নিশ্চিত। এখানে মোট ভোটার ৪৩ হাজার ৫শত ২৯জন। কেন্দ্র ১৬টি।