আ’লীগের প্রতিরোধের মুখে এমপি ভান্ডারী, পুলিশের জল কামান বেষ্টনী
এম এস আকাশ, ফটিকছড়ি: চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের প্রতিরোধের মুখে ফিওে গেলেন এ আসনের সংসদ সদস্য ও তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যার নজিবুল বশর ভান্ডারী। নেতাকর্মীদের প্রতিরোধের কারণে পথ সভার গতিপথ পরিবর্তন কাে নজিবুল বশর ভান্ডারী নাজিরহাট সুয়াবিল হয়ে ভুজপুর হয়ে হেয়াকো গিকে শেষ হয়।
১৭ বছর পর এমপি ভান্ডারীকে আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি রফিকুল আনোয়ারকে ফটিকছড়ি সদর থেকে বিতাড়নের পাল্টা জবাব দিয়ে উৎফুল্ল দেখা গেছে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের। ১৬ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় দলের নেতাকর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হয় ভান্ডারী সমর্থিত শোভাযাত্রায়
অংশ নেয়া কয়েকজন। ভাঙচুর হয় তাদের মোটরসাইকেল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফটিকছড়ির নাজিরহাটে একটি প্রকল্পের ফলক উম্মোচন করে উত্তরাঞ্চলের হেয়াকোঁতে আরো উন্নয়ন প্রকল্পের নামফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে উপজেলা সদরের বিবিরহাটস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামীলীগ দলীয় নেতাকর্মীদের অবরোধের মুখে পড়েন তিন বার তিন দল থেকে (আওয়ামীলীগ ৯১, বিএনপি ৯৫, তরিকত ২০১৪) এই আসনে নির্বাচিত সাংসদ নজিবুল বশর ভান্ডারী। এ নিয়ে সকাল থেকে উত্তেজনা দেখা দিলে পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফটিকছড়ি থানা পুলিশ আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের সামনে জল কামান ও সাজোয়া যান নিয়ে অবস্থান নেয়। এমপি নজিবুল বশর ভান্ডারীর নেতৃত্বে উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল আলম বাবু ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবু তৈয়বের নেতৃত্বে মোটর শোভাযাত্রাটি নাজিরহাট ঝংকার মোড় থেকে আরম্ভ হয়ে ফটিকছড়ি সদর, ফেলাগাজীর দীঘি হয়ে হেয়াকোঁতে যাওয়ার কথা ছিল।
এদিকে এ শোভা যাত্রা প্রতিরেধের ঘোষণা দিয়ে সকাল থেকে ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের শত শত নেতাকর্মী দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে তারা পরিত্যক্ত ট্রাক দিয়ে ব্যারিকেট দেন। শোভা যাত্রার অগ্রভাগের ৮-১০টি মোটরসাইকেল ফটিকছড়ি সদরে পৌছালে তারা আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের প্রতিরোধের শিকার হন। তাদের উপর ভাংচুর ও কিল-ঘুষিও চলে। এতে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। এ সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জল কামান নিয়ে ঘটনাস্থলে অবস্থান নিলে থমথমে অবস্থা বিরাজ করতে থাকে। পরে, সংসদ সদস্য ভান্ডারীর মোটর শোভাযাত্রাটি বিকল্প সড়ক নাজিরহাট-সুয়াবিল-কাজীরহাট হয়ে হেয়াকোর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
আওয়ামীলীগ নেতারা জানান, ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে নজিবুল বশর ভান্ডারী
বিএনপি প্রার্থী হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেন। তিনি পরাজিত হলে জামায়াত শিবির ও বিএনপি’র সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে আওয়ামীলীগের নির্বাচিত সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ারকে (প্রয়াত) ফটিকছড়ি সদরে দীর্ঘদিন প্রবেশ করতে দেয়নি। একবার আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভা করতে গেলে তারা নাজিরহাট থেকে কালো পতাকা ও জুতা প্রদর্শন করে। তখন পুলিশ পরিস্থিতি ভাল নয় মর্মে সাংসদ রফিকুল আনোয়ারকে বুঝিয়ে হাটহাজারী হয়ে চট্টগ্রাম শহরে চলে যেতে বাঁধ্য করেন। দীর্ঘ ১৭ বছর পর ভান্ডারীকে সেই জবাব দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামীলীগ নেতা দিদারুল বশর চৌধুরী দুদু ও শামসুল আলম নেতা জানান, উন্নয়ন
প্রকল্পের নামফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানের অন্তরালে আওয়ামী পরিবার (যারা আওয়ামীলীগ থেকে অব্যাহতি প্রাপ্ত) কে নিয়ে এমপি ভান্ডারী সমর্থিতরা নির্বাচনী শো-ডাউনের আয়োজন করে। যে প্রকল্পের ফলক উম্মোচনের কথা বলা হয়েছে সেগুলো গত নয় মাস আগে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা পটিয়ার জনসভায় ডিজিটাল পদ্ধতিতে উদ্বোধন করেছেন। আর প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্পের ফলক উম্মোচনের খবর দলীয় নেতাকর্মীরা জানবে না, এ কেমন কথা? এসব ভন্ডামীতো আওয়ামীলীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগ মেনে নেবেনা। তাই প্রতিরোধ।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন মুহুরী বলেন, গত ৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দলীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন ও জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্ধের নির্বাচনী শো-ডাউনকে আজাদী বাজারে ও নাজিরহাটে আবু তৈয়বের সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমের পন্ড বরতে চায়। দলের সুন্দর অর্জন গুলোকে নষ্ট করে। আর আজ প্রধানমন্ত্রীর নামফলক উন্মোচনের জনবিচ্ছিন্ন মোটর শোভাযাত্রায় ছাত্রলীগ কর্মী ফয়সাল হত্যার আসামীরা রয়েছে, পুলিশের তালিকাভুক্ত ডজন মামলার আসামী রয়েছে, মাদক পাছারকারীরা রয়েছে। যারা সেই সব অনুষটানে থেকে ফেসবুকে লাইভ দিচ্ছে এবং ফটো আপ-লোড করছে। যা ফটিকছড়ির রাজনীতিকে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তাই ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামীলীগের এই প্রতিরোধ।
ফটিকছড়ি থানার ওসি বাবুল আক্তার আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের
সামনে অবস্থান নেয়। তবে এমপি সাহেব তার পথ পরিবর্তন করে ভুজপুরে চলে এসেছেন। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।