করোনা মোকাবিলায় দুর্গতদের পাশে খাগড়াছড়িতে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: করোনা প্রতিরোধে খাগড়াছড়িতে অঘোষিত লক-ডাউনে ঘরবন্ধী নিন্ম আয়ের মানুষ, অসহায় প্রতিবন্ধী ও হত-দরিদ্রদের মাঝে খাদ্য বিতরণসহ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, খাগড়াছড়ি ইউনিট।
খাগড়াছড়ি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, খাগড়াছড়ি ইউনিটের ইউনিট অফিসার আবদুল গণি মজুমদার জানান, জেলার প্রত্যেকটি উপজেলায় রেড ক্রিসেন্টের ভলাণ্টিয়ারগণ স্থানীয়ভাবে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তারা অসহায়-দরিদ্র-এতিম-প্রতিবন্ধী ও দুস্থদের মাঝে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমের পাশাপাশি জীবাণুনাশক স্প্রে ছিটিয়ে বাড়ি-ঘর-দোকান-পাঠ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও যানবাহন জীবাণুমুক্ত রাখার চেষ্ঠা করছেন। ইতিমধ্যে রেড ক্রিসেন্টে সোসাইটির পক্ষ থেকে হ্যান্ড-স্যানিটাইজার, মাস্ক, স্প্রে মেশিন, জীবাণুনাশক ওষধ, পিপিই ভলান্টিয়ারদের মাঝে সরবরাহ করা হয়েছে। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, খাগড়াছড়ি ইউনিটের আজীবন সদস্যগণের টাকায় ক্রয় করা খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছে যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যগণ। বিভিন্ন জায়গায় অনেক আজীবন সদস্য নিরবে হত-দরিদ্র মানুষগুলোকে যুব রেড ক্রিসেন্টের মাধ্যমে সাহায্য করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন স্থানে হাত ধোয়ার জন্য সাবান ও পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এছাড়া রেড ক্রিসেন্ট সদর দপ্তর থেকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের পরিকল্পনা আছে। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা। যুব রেড ক্রিসেন্টের কার্যক্রম সরাসরি মনিটরিং করছেন খাগড়াছড়ি ইউনিটের চেয়ারম্যান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী। রেড ক্রিসেন্ট খাগড়াছড়ি ইউনিটের ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন মজুমদার পাহাড়ের আলোকে বলেন, করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই খাগড়াছড়ি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও যুব রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের কর্মীরা নানা সচেতনতামূলক কাজ করে যাচ্ছে। জেলা সদর ছাড়াও প্রতিচি উপজেলায় এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলে তিনি জানান।
দীঘিনালা উপজেলা যুব রেড ক্রিসেন্ট ব্রাঞ্চের যুব প্রধান সুজল চৌধুরী বলেন, খাগড়াছড়ি রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সহযোগিতার পাশাপাশি স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান ও রেড ক্রিসেন্টের আজীবন সদস্য মোহাম্মদ কাশেম, দিঘীনালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ উল্ল্যাহ ও স্থানীয় খ্যাতিমান সাংবাদিক পলাশ বড়ুয়ার নানা উদ্যোগের সফল বাস্তবায়নে কাজ করছি আমরা। আমরা হত-দরিদ্রদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছি। এছাড়া জীবানু নাশক স্প্রে এবং গণসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছি।
পানছড়ি রেড ক্রিসেন্টের যুব প্রধান রায়হান আহমেদ, মাটিরাঙা উপজেলা যুব প্রধান কমল কৃষ্ণ দে, গুইমারা উপজেলার যুব প্রধান মীর বাবলু, লক্ষীছড়ি উপজেলার যুব প্রধান শিশির আহমেদ এবং রামগড় উপজেলার যুব প্রধান আবছার হোসেনও একই মত প্রকাশ করেন। করোনার মতো দুর্যোগে তারা দেশবাসীর পাশে থাকবেন বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস যুব রেড ক্রিসেন্টের কার্যক্রমে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন স্বেচ্চাসেবকেরা সব দুর্যোগে জাতির পাশে ছিলো, এখনো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। তবে তাদের এসব কার্যক্রম পরিচালনাকালীন সুরক্ষা কবচ থাকা উচিত এবং তারা সুরক্ষিত থেকে কাজ করবে-এই প্রত্যাশায় তিনি করেন।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ম্যানেজিং বোর্ড মেম্বার এবং খাগড়াছড়ি ইউনিটের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী বলেন মানবতার সেবা করার লক্ষ্যেই কাজ করে রেড ক্রিসেন্ট। খাগড়াছড়ি জেলার ৯ উপজেলায় সমানভাবে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে কাজ করছে রেড ক্রিসেন্ট। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন রেড ক্রিসেন্ট সদর দপ্তর থেকে পাওয়া সকল সামগ্রী উপজেলাগুলোতে সমানভাবে ভাগ করা হবে এবং যুব রেড ক্রিসেন্ট সদস্যদের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।