কাপ্তাই উপজেলা দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সাথে ৪১ বিজিবি’র মতবিনিময়

কাজী মোশাররফ হোসেন, কাপ্তাই: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে। প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও কাপ্তাই উপজেলার ৮টি পূজা মন্ডপের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য আয়োজনে প্রতিবছর দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে। এখন পর্যন্ত সুন্দর ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপনের আয়োজন চলছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আরো বর্ণাঢ্য আয়োজনে দুর্গাপূজা উদযাপনের লক্ষে কাপ্তাইয়ে অবস্থিত ৪১ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ তানজিলুর রহমান ভূঁইয়ার সাথে উপজেলা পুজা উদযাপন কমিটি এবং সকল পূজা মন্ডপের প্রতিনিধিদের সাথে শুক্রবার গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
৪১ বিজিবি কাপ্তাই ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটি এবং সকল মন্দিরের পরিচালনা কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ তানজিলুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, আগামী ১৩ অক্টোবর বিসর্জনের মধ্যাদিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব যাতে সুশৃঙ্খলভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারে সেজন্য ৪১ বিজিবির পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করা হবে। প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ৪১ বিজিবি কাপ্তাই উপজেলার প্রতিটি পূজা মন্ডপে সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নজরদারিতে রাখবে। যে কোন প্রয়োজনে পূজা উদযাপন কমিটিকে বিজিবির সাথে যোগাযোগ করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান। এসময় কাপ্তাই ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ লতিফুল বারি, মেডিকেল অফিসার মেজর এস এম আশিকুজ্জামান ও ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টর মাষ্টার উপেন্দ্রনাথ হালদার উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন কাপ্তাই উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক কান্তি ভট্টাচার্য্য, সাধারন সম্পাদক প্রিয়তোষ ধর পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক অমিত বিশ্বাস বাবলু, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ঝুলন দত্ত, ত্রিপুরা সুন্দরী কালী মন্দিরের সভাপতি বিপ্লব সেন লাতু ও লগগেইট জয়কালী মন্দিরের সভাপতি প্রশান্ত ধর।
মতবিনিময় সভায় উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক কান্তি ভট্টাচার্য্য ও সাধারন সম্পাদক প্রিয়তোষ ধর পিন্টু বলেন, দুর্গাপূজা উৎসব সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের হলেও এতে সর্বস্তরের জনসাধারন অংশ নেন। দুর্গাপুজায় বিপুল সংখ্যক মুসলিম জনগণ উপস্থিত থাকেন এবং অনেকেই বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেন। এবারও সর্বস্তরের জনগণ দুর্গাপূজা উৎসবের প্রতিটি পর্বে সবাই উপস্থিত থাকবেন বলেও তাঁরা প্রত্যাশা করেন। মতবিনিময় সভায় কাপ্তাই উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন শিলছড়ি ভক্তিবেদান্ত ছাত্রবাসের রুপেশ্বর নিতাই দাশ, কর্ণফুলী প্রকল্প শ্রী শ্রী হরি মন্দিরের সভাপতি সজল রায়, সাধারন সম্পাদক তপন কুমার মলিক, মিশন এলাকা শ্রী শ্রী গৌর নিতাই নাম হট্ট সংঘের সভাপতি মাধব দাশ, ত্রিপুরা সুন্দরী কালী মন্দিরের সাধারন সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী সাজু, ওয়াগগা শ্রী শ্রী সার্বজনিন লোকনাথ মন্দিরের সভাপতি অমল কান্তি দে, শিলছড়ি শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দিরের দপ্তর সম্পাদক অরুন কান্তি দাশ, ব্রিকফিল্ড সার্বজনিন মাতৃমন্দিরের সভাপতি জনার্দন দাশ এবং মিশন এলাকা শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালি মন্দিরের সভাপতি সুধীর ধর।
এদিকে সনাতন হিন্দু স¤প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসবকে কেন্দ্র কাপ্তাই উপজেলার কোথাও যাতে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ৪১ বিজিবি। ভক্ত ও অনুসারীরা প্রতিটি পূজা মন্ডপে যাতে নির্বিঘেœ আসা যাওয়া এবং ধর্মকর্ম ও পূজা অর্চনা করতে পারেন সে জন্য ৪১ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ লতিফুল বারি ৪ অক্টোবর কাপ্তাই উপজেলার প্রতিটি পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন এবং মন্দির পরিচালনা কমিটি ও পুরোহিতদের সাথে কথা বলেন। এসময় বিজিবির মেডিকেল অফিসার মেজর এস এম আশিকুজ্জামানসহ অন্যান্য অফিসারগণও উপস্থিত ছিলেন। মেজর লতিফুল বারী শ্রী শ্রী ত্রিপুরা সুন্দরী কালী মন্দির, শ্রী শ্রী দক্ষিনেশ্বর সিদ্বেশ্বরী কালী মন্দির, শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির, কর্ণফুলী প্রকল্প শ্রী শ্রী হরি মন্দির, শ্রী শ্রী দুর্গামন্দির রামসীতা সংঘ, শ্রী শ্রী জয়কালী মন্দির, শ্রী শ্রী সার্বজনিন মার্তৃমন্দির এবং শ্রী শ্রী লোকনাথ মন্দির সমুহ পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি প্রতিটি পূজা মন্ডপ পরিচালনা কমিটির সভাপতি, সাধারন সম্পাদক এবং পুরোহিতদের সাথে সার্বিক আইন শৃঙ্খলা বিষয়ে আলোচনা করেন। মেজর লতিফুল বারী বলেন, আমরা সুষ্ঠ ও সুন্দর পরিবেশে সবাই মিলে মিশে শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব পালন করতে চাই। পূজা উদযাপনে যদি কেউ বাধা সৃষ্টি করে বা কোন না কোনভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান। যে কোন প্রয়োজনে বিজিবিকে অবহিত করার জন্যও তিনি সকলের প্রতি পরামর্শ দেন।