কুকিছড়া’য় নব নির্মিত বৌদ্ধ বিহার উদ্ধোধন: সম্প্রীতি বজায় রাখার আহবান
মোঃ শাহ আলম, গুইমারা: বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক দেশ। এখানে সকল ধর্মের মানুষ স্বাধীন ভাবে ধর্মকর্ম পালন করবে এবং ধর্মীয় সংস্কৃতি বহাল রেখে যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রেখে দেশের উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কোন ষড়যন্ত্রকারী যাতে করে আবারও কুকিছড়ার মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা, আর ঘটাতে না পারে সেদিকে সকলকে সর্তক থাকার আহবান জানান খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মোঃ শহিদুল ইসলাম।
২৭ডিসেম্বর বৃহস্প্রতিবার বেলা ১২টার সময় গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি ইউনিয়নে গত ২২অক্টোবর দৃস্কৃতিকারী কর্তৃক ভেঙ্গে ফেলা জেতবন বৌদ্ধ বিহারে নবনির্মিত বিহার ও বৌদ্ধ মুর্তির উদ্বোধন পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এআহবান জানান। তিনি আরো বালেন, সেনাবাহিনী ভাঙ্গেনা, তারা সব সময় বিহার নির্মাণ ও গড়ার কাজে সহযোগীতা করে থাকে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বসময় পাহড়ে বসবাসরত সকল সম্প্রদায়ের মানুষের আপদে-বিপদে এবং সাহায্য-সহযোগীতা করে যাচ্ছে। একটি কুচক্রি মহল সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য নানাভাবে ষড়যন্ত্র¿ করছে। সকলে মিলে ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করতে হবে এবং সকল ভেদাভেদ ভুলে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি বজায় রেখে, সবাইকে এলাকার উন্নয়নে একত্রে কাজ করতে হবে। এসময় কুকিছড়ায় একটি পর্যটন স্পট করার সম্ভাবনা তুলে ধরেন।
গুইমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে বিহার প্রাঙ্গনে অনষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, মাটিরাঙ্গা জোন উপ-অধিনায়ক মেজর ইমরাউল কায়েস ইমরুল, গুইমারা উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান মেমং মারমা, গুইমারা উপজেলা চেয়ারম্যান উশ্যেপ্রু মারমা, গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ বিদ্যুৎ কুমার বড়ুয়া, হাফছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান চাইথোয়াই চৌধুরী, গুইমারা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ম্রাচাথোয়াই মগ, বৌদ্ধ ভিক্ষু উ-নাইন্দাসারা প্রমুখ। এসময় মাটিরাঙ্গ সেনা জোনের পদস্থ সেনা কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গন্যমান্য ব্যক্তি এবং গনমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, শান্তি চুক্তির পুর্বে গুইমারা রিজিয়নের অধীনস্থ মাটিরাঙ্গা জোনের আওতাভূক্ত কুকিছড়ায় অবস্থিত সেনা ক্যাম্পটি ১৮নভেম্বর ১৯৮৯সালে প্রত্যাহার হয়। প্রশাসনের আপত্তি থাকার পরও অবৈধভাবে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা স্থানীয় জনগনের নামের আড়ালে পরিত্যক্ত সেনাবাহিনীর জায়গায় বৌদ্ধ মন্দির নির্মান করে। সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য চক্রান্ত করে ২২অক্টোবর রাতে দুষ্কৃতিকারীরা জেতবন বিহার ও বৌদ্ধমূর্তি ভেঙে এলাকায় অরাজকতা তৈরীর চেষ্টা করে। জেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপের কারনে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য সফল হয়নি। ধর্মীয় অনুভুতির কথা বিবেচনা করে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সেনাবাহিনী এবং প্রশাসনের আর্থিক সহায়তায় পরিত্যক্ত সেনা ক্যাম্পের জায়গায় সরকারী খাস জমিতে দৃষ্টি নন্দন বৌদ্ধ মন্দিরটি পুনরায় নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসী সেনাবাহিনী এবং প্রশাসনের এমন মহতি উদ্যোগকে প্রশংসা করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এসময় প্রধান অতিথি মন্দির এলাকার দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র(কম্বল) বিতরণ করেন। এরআগে গুইমারা উপজেলা প্রশাসনের অস্থায়ী কার্যালয়ে প্রতিবন্ধী ও দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন।