খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার’র উদ্যোগে কলেজ পর্যায়ে “বই পাঠ” উৎসব
স্টাফ রিপোর্টার: জেলা পুলিশের উদ্যোগে খাগড়াছড়ি জেলার সকল উপজেলায় সপ্তাহব্যাপী অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে কেন্দ্র করে “বই পাঠ” উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিতায ১৯ ফেব্রুয়ারি সোমবার বেলা ২ টার দিকে খাগড়াছড়ি সরকারি মহিলা কলেজে এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার)। বাংলাকে মাতৃভাষা হিসেবে পেতে বুকের রক্ত দিয়েছেন আমাদের ভাষা শহীদগণ। তাঁদের এই ত্যাগের যথার্থ সম্মান প্রদর্শন করতে বাংলা ভাষা চর্চার ক্ষুদ্র প্রয়াস হিসেবে আয়োজন এই বই পাঠ উৎসবের।
পুলিশ সুপার বলেন, বই আমাদের আত্মার আত্মীয়। আমাদের ভেতরের সুপ্ত প্রতিভাকে জাগিয়ে তোলে বই। শিশু জন্মগ্রহণের পর থেকে সমাজে ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে, আর বই পড়ার মধ্য দিয়ে তার চিন্তা চেতনার বিকাশ ঘটে। কথায় আছে, যে প্রজন্মের হাতে বই আছে, সে প্রজন্ম কখনো পথ হারাবে না। কিন্তু বর্তমানে তরুণ প্রজন্ম বই বিমুখ একটি জাতি হয়ে গড়ে উঠছে। পাঠ্য বইয়ের বাইরে খুবই কম শিক্ষার্থীকে অন্য বই পড়ার দৃশ্য দেখা যায়। বই পড়ে মানুষের চিন্তা, জ্ঞান ও উদ্ভাবনী সক্ষমতা বাড়ে।
তিনি বলেন, মানুষকে বই পাঠের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারলে একটি শিক্ষিত ও স্মার্ট নাগরিক গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। পুলিশ সুপার মহোদয় আরো বলেন, ইন্টারনেটের কল্যাণে মানুষের জীবন অনেক সহজ ও গতিশীল হচ্ছে, একথা অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু প্রতিটি বিষয়ের ভালো ও খারাপ দুটি দিকই রয়েছে। ইন্টারনেটের খারাপ দিক হল এর অপব্যবহার। তরুণ সমাজ তাদের মূল্যবান সময় অপচয় করছে ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ ও ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। কেউ যদি এগুলোতে অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়ে এবং এ কারণে যদি তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘ্নিত হয়, তখনই বাধে সমস্যা। ইন্টারনেট আসক্তি থেকে রেহাই দিতে ছাত্র-ছাত্রীদের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছাত্রীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, ইভটিজিং একটি সামাজিক ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছোট থেকে শুরু করে সব বয়সী নারীদের রাস্তা ঘাটে চলার পথে বিভিন্ন ভাষায় কটুকথা বলে থাকে বখাটেরা। বিদ্যালয়ে আসার পথেও বিরক্ত করে থাকে। স্কুল ও কলেজে মেয়েদের আসা যাওয়াতে কেউ অযাচিত ভাবে কটু কথা না বলে, বিরক্ত না করে সেই জন্য ইভটিজিং প্রতিরোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান। কারো বিরুদ্ধে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ থাকলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সবশেষে পুলিশ সুপার শিক্ষার্থীদেরকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা “কারাগারের রোজনামচা” বই পাঠ করার জন্য প্রদান করেন। বই পাঠ শেষে শিক্ষার্থীদেরকে পাঠ্য বিষয় থেকে ১০টি করে প্রশ্ন লিখতে বলা হয়।
এসময় সম্মানীত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ শাহ্ আলমগীর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মোঃ জসীম উদ্দিন, পিপিএম, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তানভীর হোসেন, সরকারি মহিলা কলেজের সহকারি অধ্যক্ষ মোঃ জহিরুল ইসলাম, সহকারি অধ্যাপক হাসু চাকমা, সহকারি অধ্যাপক মোছাঃ শামিম আরা বেগম, প্রভাষক রিয়াজুল হক সোহেল, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির জেলা কর্মকর্তা আজিমুদ্দিন সহ অত্র কলেজের অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।