খাগড়াছড়িতে ধর্ষণ ও বিচারহীনতা বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’র সমাবেশে পুলিশের বাধা: ৯ দফা দাবি পেশ

দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি: সারাদেশে ধারাবাহিকভাবে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে ‘ধর্ষণ ও নির্যাতন বিরোধী বাংলাদেশ’ ব্যানারে রবিবার (১৫নভেম্বর

খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে বুধবার সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ
ম্যালেরিয়া নির্মূলে পানছড়িতে ওরিয়েন্টশন সভা
মহালছড়িতে কর্মহীন পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সহায়তা প্রদান

দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি: সারাদেশে ধারাবাহিকভাবে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে ‘ধর্ষণ ও নির্যাতন বিরোধী বাংলাদেশ’ ব্যানারে রবিবার (১৫নভেম্বর ২০২০খ্রিঃ) সকালে খাগড়াছড়ি জেলা শহর মুক্তমঞ্চের সামনে থেকে এই সমাবেশ করা হয়। সমাবেশ থেকে ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করাসহ নয়দফা দাবি জানানো হয়। সমাবেশ চলাকালে প্রায় আধা ঘন্টা ধরে পুলিশের সাথে তর্কাতর্কি করার পরে পুলিশের বাধার মুখে সমাবেশ করা হয়। সমাবেশ থেকে ধর্ষণ ও নিপীড়ন বন্ধে নয় দফা দাবি উত্থাপন করেন নারী মুক্তিকেন্দ্র অর্থ সম্পাদক নাঈমা খালেক মলিকা।

তাদের দাবিগুলো হল:

১। সারা দেশে অব্যাহত ধর্ষণ-নারীর প্রতি সহিংসতার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষণ, নিপীড়ন বন্ধ ও বিচারে ‘ব্যর্থ’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।

২। পাহাড়-সমতলে আদিবাসী নারীদের ওপর সামরিক-বেসামরিক সব ধরনের যৌন ও সামাজিক নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে।

৩। হাই কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতন বিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে। সিডো সনদে স্বাক্ষর ও তার পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক সব আইন ও প্রথা বিলোপ করতে হবে।

৪। ধর্মীয়সহ সব ধরনের সভা-সমাবেশে নারীবিরোধী বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে। সাহিত্য, নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন বন্ধ করতে হবে। পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণে বিটিসিএলের কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। সুস্থ ধারার সাংস্কৃতিক চর্চায় সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।

৫। তদন্তকালীন সময়ে ভিকটিমকে মানসিক নিপীড়ন-হয়রানি বন্ধ করতে হবে। ভিকটিমের আইনগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

৬। অপরাধ বিজ্ঞান ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়িয়ে অনিষ্পন্ন সব মামলা দ্রুত নিষ্পন্ন করতে হবে।

৭। ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন ১৮৭২-১৫৫ (৪) ধারা বিলোপ করতে হবে এবং মামলার ডিএনএ আইনকে সাক্ষ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে কার্যকর করতে হবে।

৮। পাঠ্যপুস্তকে নারীর প্রতি অবমাননা ও বৈষম্যমূলক যে কোনো প্রবন্ধ, নিবন্ধ, পরিচ্ছেদ, ছবি, নির্দেশনা ও শব্দ চয়ন পরিহার করতে হবে।

৯। গ্রামীণ সালিশের মাধ্যমে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।

এসময় সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাসুদ রান্না সঞ্চালনায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন দুর্বার নারী নেটওয়ার্কের প্রতিনিধি নমিতা চাকমা, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস্ কাউন্সিল’র কেন্দ্রীয় সভাপতি নিঅং মারমা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য যুগেশ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি জেলা শাখার আহবায়ক কবির হোসেন প্রমুখ। এসময় সংগতি জানিয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন উইমেন রির্সোস নেটওয়ার্ক, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরাম, বাংলাদেশ (টিএসএফ)’র নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সামাজিক ও ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী।