• July 27, 2024

খাগড়াছড়িতে ময়লা আর্বজনার ডাম্পিং ষ্টেশনের অভাবে দূষিত হচ্ছে নদীর পানি, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে হাজারো মানুষ

এম সাইফুল ইসলাম:  খাগড়াছড়ি জেলা শহরের ময়লা নিষ্কাষনের জন্য নেই কোন পরিকল্পিত ব্যবস্থা, শহরের সব ময়লা নিয়ে রাখা হচ্ছে নদীর অদূরে ঢাকা-খাগড়াছড়ি, ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কের পাশের এক পাহাড়ে কোল ঘেষে, আর সামান্য বৃষ্টির পানিতে এ ময়লা আর্বজনা ধুয়ে মিশে চলে যাচ্ছে নদীতে। এতে দূষিত হচ্ছে নদীর পানি, অন্যদিকে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

চারিদিকে সবুজ পাহাড়ে ঘেরা খাগড়াছড়ি জেলা শহর। তার কোল ঘেষে বহমমান এখানকার অতি পরিচিত চেংগি নদী। নদীর ধারে গড়ে উঠেছে হাজারো মানুষের বসতি নিয়ে জেলা শহর। এসব মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহৃত আর্বজনা পৌরসভার পক্ষ থেকে নিষ্কাশনের জন্য নিয়ে যাওয়া হলেও জেলা শহরে কোন ডাম্পিং ষ্টেশন না থাকায় শহরের অদূরে নদীর ধারে পাহাড়ের উপর সড়কের পাশে যেন-তেন ভাবে ফেলে রাখা হচ্ছে।প্রতিদিন পৌরসভার ময়লা আবর্জনার গাড়ী করে শহরের বিভিন্ন স্থানের ময়লা সংগ্রহ কওে একই স্থানেই জমা হচ্ছে ময়লার স্তুুপ। কিন্তুু পরিকল্পিত বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা না থাকায় সামান্য বৃষ্টির পানিতে এসব আর্বজনা ধুয়ে মিশে যাচ্ছে চেংগি নদীর পানির সাথে।  আর ময়লা আর্বজনা ও পানি একসাথে মিশে সৃষ্টি হচ্ছে নানান রোগব্যাধি, আবার বিকল্প কোন পথ না থাকায় এই চেংগি নদীর পানি দিয়েই একপ্রকার মিটানো হচ্ছে পুরো জেলা শহরের মানুষের পানির চাহিদা। এতে মারাত্বক পরিবেশ দুষনের পাশাপাশি সৃষ্টি হচ্ছে নানা রোগব্যাধি।

এছাড়া পরিবহন সেক্টরের চালক-শ্রমিকসহ যাত্রীদের অভিযোগ রাস্তার পাশে শহরের আবর্জনা ফেলার কারনে এখানে প্রচুর দূর্ঘন্ধ ছড়ায় যার ফলে সড়কে যাতায়াতও কষ্টকর।শফিকুল ইসলাম নামের এক চালক জানান, প্রতিদিন এ সড়কে যাতায়াতের সময় অনেক কষ্ট করতে হয় এখানে, এক হাতে নাক চেপে ধরে অন্যহাতে গাড়ি চালাতে হয়,  কিন্তু নজর নেই পৌর কতৃপক্ষের। পরিবেশ দূষনের পাশাপাশি সৃষ্ট সমস্যা থেকে রোগব্যাধি ছড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার বিশেষজ্ঞ সিভিল সার্জন ডা. শাহ আলম জানান, নদীর সাথে সরাসরি বর্জ্য সংযুক্ত থাকায় নদীর পানি দূষিত হবে এবং এ পানি ব্যবহার করলে মানুষ ধীরে ধীরে ডায়রিয়া, টাইফয়েড, ফুড-পয়জনিং ও স্কীনডিজিসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবে।

জেলা প্রশাসক রাশেদুল ইসলাম জানান,  বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে সুন্দরভাবে ব্যবহার করা এবং একটি পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ হয়েছে এবং একটি ডাম্পিং স্টেশনের জন্য পৌর কতৃপক্ষের নিকট ভূমি হস্তান্তর করা হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ, পরিবেশ সুরক্ষার জন্য কাজ করছে জেলা প্রশাসন।এ বিষয়ে কথা বলতে খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলমের মুঠোফোনে বারবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি। এই বিষয়ে খাগড়াছড়ি পৌর সচিব পারভীন আক্তার খন্দকার জানান, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে পরিবেশ সুরক্ষার অংশ হিসেবে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা এবং টেকসই পরিবেশ ও বন নিশ্চিত করণের লক্ষে শীঘ্রই খাগড়াছড়িতে একটি ডাম্পিং ষ্টেশন তৈরীর কাজ শুরু হবে, আর এতে অনেকটাই ভোগান্তী কমবে স্থানীয়দের।

স্থানীয় বাসিন্দরা জানান, শুধু আশ্বাস নয় সুস্থ পরিবেশ ও সুন্দর জীবন ধারণের জন্য শীঘ্রই জেলা শহরের বর্জ্য অপসারনের জন্য একটি ডাম্পিং স্টেশন তৈরি এবং সঠিক তদারকির মধ্য দিয়ে একটি সুন্দর পর্যটন নগরী গড়ে তুলে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগের অন্যতম পরিবেশ সুরক্ষার প্রতি যথাযথ নজর দেবে কর্তপক্ষ এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post