গুইমারাতে ‘বৈসাবি’ র্যালি, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখার দাবি
স্টাফ রিপোর্টার: নানা রঙের বাহারী পোষাক ও সাজে, বিভিন্ন বয়সী মানুষের উৎসবমুখর অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে চাকমা জনগোষ্ঠির ‘ফুল বিজুতে’ র্যালির মাধ্যমে খাগড়াছড়ি’র গুইমারাতে শুরু হয়েছে বর্ষ বিদায় ও বরণ উপলক্ষে চাকমা-মারমা-ত্রিপুরা জনগোষ্ঠি’র বৈসাবি উৎসব।
এ উপলক্ষে ১২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় গুইমারা সার্বজনীন বৈসাবি উদযাপন কমিটির উদ্যোগে এক শুভেচ্ছা র্যালি বের করা হয়। গুইমারা উপজেলার রামসু বাজার এলাকার শুরু হয়ে র্যালিটি উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে। সেখানে জেলা পরিষদের উদ্যোগে মারমাদের জলকেলি, ত্রিপুরাদের ‘গরয়া’ নৃত্যসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে, গুম, খুন, অপহরণ, ভয়-ভীতি প্রদর্শন, নিরাপত্তার নামে তল্লাশী বন্ধের দাবী সংবলিত বিভিন্ন ব্যানার প্রদশন করে র্যালিতে অংশগ্রহণকারীরা। এতে কোন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতি লক্ষ্য করা না গেলেও শত শত চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষ অংশ নেন।
এদিকে, গুইমারা সার্বজনীন বৈসাবি উদযাপন কমিটির নামে বের করা শুভেচ্ছা র্যালিকে নিয়ে রয়েছে নানা গুঞ্জন, বিগত সময়ে বৈসাবি উপলক্ষে পাহাড়ে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফ র্যালি করার চেষ্টা করলেও প্রশাসনের অনুমতির কারণে তারা ব্যর্থ হওয়াতে এবছর নতুন কৌশলে সফল হয় তারা। তবে ইউপিডিএফ’র মাটিরাঙ্গা ও গুইমারা শাখার সমন্বয়ক প্রনব ত্রিপুরা জানান, বৈসাবি সার্বজনীন উৎসব এতে কোন রাজনীতি করার সুযোগ নাই। তবে শুভেচ্ছা র্যালীতে সফল করতে তারা এলাকাবাসীকে সার্বিক সহযোগীতা করেছে মাত্র।
শুভেচ্ছা র্যালির কাদের উদ্যোগে হয়েছে জানতে চাওয়া হলে গুইমারা থানায় সদ্য যোগদানকৃত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, গুইমারা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান(পুরুষ) পূর্ন্য কান্তি ত্রিপুরা’র মৌখিক আবেদনের প্রেক্ষিতে বৈসাবি উপলক্ষে শান্তি পুর্ন র্যালির মৌখিক অনুমতি প্রদান করে পুলিশ প্রশাসন। তবে র্যালি চলাকালে পুর্ন্যকান্তি ত্রিপুরাকে উপজেলা বিএনপি কার্যালয় সংলগ্ন চা দোকানে বসে থাকতে দেখা যায়।
এছাড়াও বৃহস্পতিবার চাকমাদের ফুল বিঝুতে ভোরে গুইমারা খালে ফুল ভাসানোর মধ্যদিয়ে ‘বৈসাবি’র সূচনা করে। তারা। ১৩এপ্রিল ২টায় গুইমারা সাংগ্রাইং উদযাপন কমিটি পক্ষ থেকে বর্ণাঢ্য র্যালিতে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। ১৪ এপ্রিল নববর্ষের দিন উপজেলা প্রশাসন ও গুইমারা রিজিয়নের উদ্যোগে র্যালি ও ৩দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার উদ্ধোধন করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সাল থেকে খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত তিন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বিত উদ্যোগে ‘বৈসাবি’ নামে এ উৎসব পালন করে আসছে। সময়ের ব্যবধানে ‘বৈসাবি’ শব্দটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। গতবছর থেকে বাঙ্গালী সম্প্রদায়ের দাবীর প্রেক্ষিতে উৎসবটিতে নববর্ষের “ন” যুক্ত হয়ে বৈসাবীন হিসেবে পালন করে কেউ কেউ।