• November 13, 2024

প্রাক্তনদের মিলন মেলায় বর্নিল গুইমারা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ

বিশেষ প্রতিবেদক: ১৯৬৩ সালে জন্ম নেওয়া ক্ষুদ্র পরিসরের গুইমারা জুনিয়র হাই স্কুল ২০১৮দীর্ঘ বছরের পথ পরিক্রমায় ৫৫বছরে পরিপূর্ন  মহিরুপে আজকের গুইমারা গুইমারা উচ্চ বিদ্যালয় তথা গুইমারা মডেল হাইস্কুল। ১৯৭২থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেয়া জেলার অন্যতম বিদ্যাপীঠের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নানা মধুর স্মৃতি, হাসি-কান্না’র জমে থাকা হাজারো কথা বলা একে অপরের সাথে বিনিময়ের উপযুক্ত দিনই যে আজ। এই বিদ্যালয় ভোর থেকে রাত, শুক্রবার দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পালিত হল খাগড়াছড়ি’র গুইমারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের প্রথম পূনর্মিলনী অনুষ্ঠান। গুইমারা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে নবী ও প্রবীন শিক্ষার্থীদের মিলন মেলা স্মৃতিতে অম্লান হয়ে থাকবে। আর সেই মিলনের আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হতে সুদুর ইউরোপ থেকে দু’সপ্তাহের ছুটিতে এসেছে বিদ্যালয়ে প্রাক্তন ছাত্রী ইলা আফরোজা। শুধু ইলা নয়, তারমত অনেক প্রাক্তনরা দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ছাড়াও, ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়ার বিভিন্ন থেকে একটি দিনের জন্য জড়ো হয়েছে এক সাথে। তাইতো পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের মুল স্লোগান “এসো মোরা জড়ো হই এক সাথে”।

৭টায় পূনর্মিলনীর কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রচন্ড শীত ও ঘন কুয়াশাকে উপেক্ষা করে একে একে জড়ো হতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। সকাল ১১টায় জাতীয় পতাকা ও পূনর্মিলনী উদযাপনের পতাকা উত্তোলন আর বেলুন উড়িয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং। এ উপলক্ষে শহরে বর্ণাঢ্য আনন্দ র‌্যালী বের করা হয়। বিদ্যালয় প্রাঙ্গন থেকে বের হওয়া র‌্যলীটি উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় প্রবীন নবীন ছাত্র ছাত্রীরা নেচে গেয়ে শোভাযাত্রাকে প্রাণবন্ত করে তোলে। বিভিন্ন ব্যাচের স্লোগান সম্বলিত ব্যানার নিয়ে র‌্যালীতে অংশগ্রহণ করে তারা। ২০০০সালের এসএসসি ব্যাচের মুল স্লোগান ছিল “ওরে আয়, আয় ফিরে আয় প্রাণের বারান্দায়”।

পরে গুইমারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রথম পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন শরনার্থী পুনর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান, খাগড়াছড়ির সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মোঃ রাশেদুল ইসলাম, সিন্দুকছড়ি জোন অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল রুবায়েত মাহমুদ হাসিব, পুলিশ সুপার আলী আহমদ খান, গুইমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়ুয়া, গুইমারা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, আয়োজক কমিটির সভাপতি মেমং মারমা, উপজেলা বিএনপি সভাপতি মোঃ ইউছুপ, মাটিরাঙ্গা পৌর মেয়র শামছুল হক, প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, পার্বত্যাঞ্চল দেশের বোঝা নয়, সম্পদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সম্পদকে কাজে লাগানোর জন্য নানামুখী পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। ইতিমধ্যে ৩পার্বত্য জেলায় ২০টি কলেজ সরকারীকরণ, প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারীকরণ, প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসহ বাস্তবায়ন করছেন উন্নয়নের নানা প্রকল্প। তিনি বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজেদেরকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার আহবান জানান। এসময় প্রধান অতিথি বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়ে একটি অত্যাধুনিক অডিটরিয়াম করার ঘোষনা দেন। অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণমুলক আড্ডার পাশাপাশি সন্ধ্যায় রয়েছে দেশবরেণ্য শিল্পীদের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দিনব্যাপী আয়োজিত আনন্দঘন প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশগ্রহন করেন।

আয়োজক কমিটির প্রতিটি সদস্য বিশেষ করে, মেমং মারমা, আমির হোসেন, মিল্টন বড়–য়া, সাগর চৌধুরী, শ্যামল মজুমদার, শাহ আলমের অক্লান্ত পরিশ্রম ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের অনবদ্য ভুমিকার কারণে এই ধরনের একটি অনুষ্ঠান করতে পেরে গুইমারাবাসী আজ নতুন দিগন্তের উম্মোচন করেছে বলে জানালেন একাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
উল্লেখ্য, ১৯৬৩ সালে স্থানীয় বিদ্যুৎসাহীদের সহায়তায় গুইমারা জুনিয়র স্কুল নামে ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যাপীঠ  প্রতিষ্ঠিত করা হয়।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post