ঠিকাদারের অবহেলায় ৫ বছরেও শেষ হয়নি মানিকছড়ি থানা কমপ্লেক্স ভবণ নির্মাণ কাজ
মো. মফিজুল ইসলাম, মানিকছড়ি: ১৮মাসে মানিকছড়ি থানা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও ৫বছর পেরিয়ে যেতে চললেও এখনো পর্যন্ত নির্মাণের ৭৫% কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার।
কাজের মন্থরগতির কারণ জানতে এ পর্যন্ত ঠিকাদারকে ৫ বার শোকজ করেছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা গণপূত বিভাগ। এদিকে ভবন নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় পুরাতন জরাজীর্ণ ভবনেই পুলিশ সদস্যদের থাকাসহ অফিস কার্যক্রম চলছে নানা দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে।
সরজমিনে জানা যায়, বিগত ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে দেশব্যাপি ১০১টি থানা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণে দরপত্র আহব্বান করে গণপূর্ত অধিদপ্তর। ছয়তলার ভিতসহ চারতলা বিশিষ্ট মানিকছড়ি থানা ভবনের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা। মানিকছড়ি থানা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে ২০১৬ সালের ১সেপ্টেম্বর মোঃ নাজির হোসেন এন্ড নাহিয়ান এন্টার প্রাইজ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান’কে কার্যাদেশ দেয় গণপূত বিভাগ।
আর এ কাজটিতে ঠিকাদারী করছেন জেবিল হোসেন রয়েল নামক জনৈক প্রভাবশালী ব্যক্তি। যাকে এ পর্যন্ত কাজের স্থলে দেখেনি কেউ। কাজের শুরুতেই তার চরম উদাসিনতায় ১৮ মাসের কাজটি প্রায় ৫ বছরেও শেষ করা সম্ভব হয়ে উঠেনি! ইতোমধ্যে ঠিকাদার কাজ শেষ করেছে মাত্র ৭৫%। আর এই সময়ে কাজে মন্থরগতির জন্য ঠিকাদার শোকজ পেয়েছেন ৫ বার।
ফলে আগামী ৩০ জুন ডেড লাইন ঘোষণা করে ইতোমধ্যে চিঠি ইস্যু করেছে গণপূত বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে ঠিকাদার কাজ শেষ না করলে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ জামানত বাজেয়াপ্ত করে বিকল্প ব্যবস্থায় কাজ শেষ করবে গণপূত বিভাগ। এমনটাই জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি গণপূত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফয়সাল হোসেন।
এদিকে এই দীঘ সময়ে থানা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় আইনশৃংখলা বিষয়সহ অফিসিয়াল কাযক্রমে নানা সমস্যা হচ্ছে থানা পুলিশের। পুরাতন টিনসেট ভবনে বসার পর্যাপ্ত জায়গা না থাকা এবং পুড়ে যাওয়া ব্যারাকের ছোট ছোট কক্ষে রাত্রী যাপন করা কঠিন হয়ে পড়ছে পুলিশ সদস্যদের ।
খাগড়াছড়ি জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফয়সাল হোসেন বলেন, আমি এ জেলায় যোগদানের পর মানিকছড়ি থানা কমপ্লেক্ম ভবন নির্মাণের কাজ দূরত্ব সম্পন্ন করার জন্য ৫বার তাগাদা পত্র দিয়েছি। এই দীর্ঘ সময়ে ৭৫ ভাগ কাজ শেষে হয়েছে মাত্র। বাকি কাজ শেষ করার জন্য ৩০শে জুন ডেড লাইন দিয়ে ঠিকাদারকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তা না হলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে জরিমানা ও জামানত বাজেয়াপ্রাপ্ত সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার জেবিল হোসেন রয়েল এর মোবাইলে গত এক সপ্তাহ ধরে ফোন করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
এ প্রসঙ্গে খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল আজিজ বলেন, দেশব্যাপি ১০১টি থানা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে দরপত্র আহব্বান করে গণপূর্ত অধিদপ্তর। এ প্রকল্পে এ জেলায় তিনটি থানা কমপ্লেক্স ভবণের মধ্যে ইতোমধ্যে দুইটির কাজ শেষ হয়েছে।
মানিকছড়ি থানা কমপ্লেক্স ভবনটি নির্মাণের শুরু থেকেই ঠিকাদারের উদাসিনতা পরিলক্ষিত হয়েছে। ফলে দেড় বছরের কাজ আজ প্রায় ৫ বছর ধরে মন্থরগতিতে চলছে! আগামী ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য গণপূর্ত অধিদপ্তর ঠিকাদারকে (ডেড লাইন) চুড়ান্ত সময় বেঁধে দিয়েছে। আশা করছি এই সময়ের মধ্যে কাজটি বুঝে নিলে পারলে পুলিশ জনসেবায় নিজেকে আরো গতিশীল করতে পারবে।