• April 29, 2025

ত্রিপুরা ও মারমা সম্প্রদায়ের বৈসাবি উৎসব বর্জনের কর্মসূচি স্থগিত

 ত্রিপুরা ও মারমা সম্প্রদায়ের বৈসাবি উৎসব বর্জনের কর্মসূচি স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টার: খাগড়াছড়িতে বৈসাবি উৎসব বর্জনের কর্মসূচী স্থগিত করেছে ত্রিপুরা ও মারমা সম্প্রদায়। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) রাতে বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটি, বাংলাদেশ ত্রিপুরা ঐক্য পরিষদ ও বিক্ষুব্ধ মারমা জনগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দ এক যৌথ বিবৃতিতে কর্মসূচি স্থগিতের কথা জানান। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ অর্থ বরাদ্দ ও খাদ্য শস্য সম্পূরক বরাদ্দে প্রশাসনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত রাখার কথা জানান। বাংলাদেশ ত্রিপুরা ঐক্য পরিষদের আহবায়ক খনি রঞ্জন ত্রিপুরা, বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের কেন্দ্রীয় সভাপতি কমল বিকাশ ত্রিপুরা ও বিক্ষুব্ধ মারমা জনগোষ্ঠীর আহবায়ক ক্যজরী মারমা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টার প্রতিবাদ ও উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগের দাবিতে গত ৩০ মার্চ খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের সভাপতি বাবু কমল বিকাশ ত্রিপুরার সভাপতিত্বে মানববন্ধন হয়। মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বিক্ষুব্ধ মারমা জনগোষ্ঠী ও বাংলাদেশ ত্রিপুরা ঐক্য পরিষদ। মানববন্ধন থেকে ৫ এপ্রিলের মধ্যে বিশেষ প্রকল্পের অর্থ ও খাদ্য সুসমবন্টন না হলে বৈসাবি উৎসব বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে ৪ এপ্রিল খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো: আরেফিন জুয়েল ও পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রতিনিধি যুগ্ম সচিব কংকন চাকমার সাথে আন্দোলনকারীদের বৈঠক হয়। বৈঠকে অতি দ্রুত আপদকালীন মোকাবেলার জন্য অর্থ বরাদ্দ ও খাদ্য শস্য সম্পূরক বরাদ্দের আশ্বাস দেওয়া হয়।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো: আরেফিন জুয়েল জানান, ত্রিপুরা ও মারমা সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সভা ফুলপ্রসূ হয়েছে। সভায় দুই পাহাড়ি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেছে। আমরা বৈসাবি উৎসব মুখর পরিবেশে পালন করতে পারবো। চলতি বছরের গত ২৫মার্চ খাগড়াছড়ির জেলায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২য় পর্যায়ে ৩ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানে আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য ১৯৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। যার মধ্যে ৯৬ জন চাকমা সম্প্রদায়ের অনুকূলে ২ কোটি ৩২ লাখ ৬০ হাজার টাকা, ৪০ জন মারমা উপজাতির বিপরীতে ২১ লাখ ৭০ হাজার, ৩৬ জন বাঙালির মধ্যে ৪৭ লাখ ১০ হাজার টাকা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের অনুকূলে মাত্র ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ও ৭ জন ত্রিপুরা উপজাতির বিপরীতে ৯ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। তালিকা পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, মোট বরাদ্দের ৭৩.০৯% চাকমা সম্প্রদায়ের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। তার দুই দিনের ১ হাজার ৯ শ ১৩ মেট্টিক টন খাদ্যশষ্য বরাদ্দে চাকমা সম্প্রদায়কে ১ হাজার ৮১৩ মেট্টিক টন। একশ মেট্টিক টন দেয়া হয়েছে বাঙালীসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর অনুকূলে। এর আগে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ১ম পর্যায়ের খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিশেষ প্রকল্পে কর্মসূচি হতে ৭৫১মে: টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ প্রদান করা হয়। তন্মধ্যে চাকমা সম্প্রদায়ের অনুকূলে ৪শ ৬০মে.টন, মারমা সম্প্রদায়ের অনকূলে ৯২মে.টন, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের অনুকূলে ৬৬ মে.টন ও বাঙালি জনগোষ্ঠীর হিন্দু ,বড়য়া মুসলিম সম্প্রদায়ের অনুকুলে ১৩৩ মে. টন বরাদ্দ দেয়া হয়। অথচ পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি, চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরাসহ ১৩টি জাতি-গোষ্ঠীর বসবাস।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post