দুস্কৃতিকারি কর্তৃক ভেঙ্গে ফেলা কুকিছড়ায় বিহার ও বৌদ্ধ মূর্তি নির্মাণ শুরু
স্টাফ রিপোর্টার: বৌদ্ধ ধর্মীয় রীতিনীতি ও প্রথা অনুযায়ী ধর্মীয় গুরু(ভান্তে), প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ভিক্ষু সংঘের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে খাগড়াছড়ি’র গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি ইউনিয়নের দূর্গম কুকিছড়া এলাকায় দুস্কৃতিকারী কর্তৃক ভাঙ্গা বিহার ও বৌদ্ধ মূর্তি নির্মাণের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।
২৭অক্টোবর শনিবার সকালে ভিক্ষু সংঘের কম্মবাক্য পাঠ, পঞ্চশীল গ্রহণ, ধর্মদেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিহার নির্মান কাজ। কুকিছড়া এলাকায় পূর্বের জায়গায় অধিকতর সুন্দর ও আধুনিক ভাবে বিহার নির্মাণ কাজের উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ভিংক্ষু সংঘের সভাপতি উ: পঞঞা তেজা মহাথের, পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মাইসছড়ি বুদ্ধ শিশুঘর বিহার অধ্যক্ষ উ: সুমনা মহাথের, দেওয়ানপাড়া মিশর বৌদ্ধ বিহারাধ্যক্ষ উ: সংঘরত্ন থের সহ খাগড়াছড়ি সহ পার্বত্য জেলার বিভিন্ন বিহারের বৌদ্ধ ভান্তে ও ধর্মীয় গুরুরা। এছাড়া বিহার নির্মাণকাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাটিরাঙ্গা জোন অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল নওরোজ, গুইমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ বড়ুয়া, হাফছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান চাইথোয়াই চৌধুরী সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বৌদ্ধ ধর্মীয় বিভিন্ন গ্রামে শত শত দায়ক-দায়িকারবৃন্দ।
এর আগে ২৬অক্টোবর শুক্রবার বিকালে গুইমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অস্থায়ী কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বৌদ্ধ ভান্তে ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে মত বিনিময় সভা হওয়ায় ২৭অক্টোবর নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।
সম্পূর্ন সরকারী অর্থায়নে একই স্থানে পূর্বের ৭ফুট মুর্তির পরিবর্তে ১২ফুটের বুদ্ধ মুর্তি এবং ৩৫ফুট বিশিষ্ট পাকা বিহার নির্মাণের পাশাপাশি নিরাপত্তার জন্য চারদিকে সীমানা প্রাচীর সহ কলাপসিবল গেইট নির্মাণ করে দেওয়ার কথা জানান গুইমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ বড়ুয়া। এছাড়াও ভাঙ্গা মুর্তি ধর্মীয় বিধানমতে সমাধিত করার কাজও চলছে।
বিহার নির্মাণ কাজ শুরুর কথা শুনে সকাল থেকে ধর্মপ্রান বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা জড়ো হতে থাকে বিহার প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে মিলন মেলায় পরিনত হয়ে যায়। একে একে অতিথি ও ভিক্ষু সংঘের উপস্থিতি উৎসবের আমেজ তৈরী করে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন মুর্তি ও বিহার নিমাণের জন্য প্রশাসনের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
কম্মবাক্য পাঠ থেকে মুর্তি প্রতিস্থাপনের আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন করেন বাংলাদেশ ভিংক্ষু সংঘের সভাপতি উ: পঞা তেজা মহাথের, পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মাইসছড়ি বুদ্ধ শিশুঘর বিহার অধ্যক্ষ উ: সুমনা মহাথের। এর পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাটিরাঙ্গা জোন কমান্ডার লে: কর্ণেল নওরোজ, গুইমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ বড়ুয়া ও হাফছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান চাইথোয়াই চৌধুরী বিহার নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন।
উপস্থিত দায়ক-দায়িকাদের উদ্দেশ্যে ধর্মদেশনায় ভিক্ষুু সংঘের নেতারা বৌদ্ধরা মৈত্রীতে বিশ্বাসী বলে মন্তব্য করে অতীতকে মনে না রেখে মৈত্রী স্থাপনের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার আহবান জানান। তাছাড়াও আন্দোলনকারীদের আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে নির্মাণ কাজ শুরু হলেও এটি প্রাথমিক পদক্ষেপ বলে অভিহিত করে দেওয়ানপাড়া মিশন বৌদ্ধ বিহারাধ্যক্ষ সংঘরত্ন থের বিহারটি পূর্নাঙ্গ নির্মাণ সহ আর কোন অপশক্তি যাতে বাধা হতে না পারে সেদিকে সকলকে দৃষ্টি রাখার আহবান জানান।
উল্লেখ্য, গত ২২অক্টোবর সোমবার দিবাগত রাতে ((প্রবারনা পুর্নিমার একদিন আগে) গুইমারা উপজেলাধীন হাফছড়ি ইউনিয়নের কুকিছড়া এলাকায় কতিপয় দুস্কৃতিকারীরা জেতবন বৌদ্ধ বিহারও বৌদ্ধ মুর্তি ভেঙ্গে ফেলে।