ইউপিডিএফ’র নেতা হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল, পুলিশের বাধা
ডেস্ক রিপোর্ট: জাতীয় বেঈমান-দালাল-প্রতিক্রিয়াশীলদের আতাত, খুন, গুম, অপহরণকারীদের দেখামাত্র প্রতিহত করার ঘোষণা করেছে ইউপিডিএফ সহযোগী তিন গণসংগঠন। শাসকশ্রেণীর ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নকারী এজেন্ট পেলে, বর্মা গংদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলুন মাটিরাঙ্গা ও গুইমারা উপজেলা ইউপিডিএফ-এর সমন্বয়ক সুনীল বিকাশ ত্রিপুরা (কাথাং)-কে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি জেলা শহরে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গনতান্ত্রিক যুব ফোরাম খাগড়াছড়ি জেলা শাখা উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ বক্তারা ঘোষণা করেন।
আজ সোমবার (২৩ এপ্রিল ২০১৮) সকাল ১১টায় মিছিলটি খাগড়াছড়ি জেলা সদর ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর কার্যালয় থেকে বের হয়ে উপজেলা গেইট যেতে চাইলে নারাঙহিয়া রেড স্কোয়ার চৌরাস্তা মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড দিয়ে বাধা প্রদান করলে মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগানের মধ্যে দিয়ে প্রতিবাদ জানান। পরে সেখান থেকে ফিরে এসে স্বনির্ভর বাজার শহীদ অমর বিকাশ চাকমা সড়কে গিয়ে এক প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে পিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তপন চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রতন স্মৃতি চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি দ্বিতীয় চাকাম প্রমুখ।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ইউপিডিএফ নেতা সুনীল ত্রিপুরা ও তার এক সহকর্মী পরেশ ত্রিপুরাসহ গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় খাগড়াছড়ি জেলা পানছড়ি উপজেলা উল্টোছড়ি ইউনিয়ন মরাটিলা নামক এলাকায় একটি দোকানে বসে থাকার সময় পানছড়ি দিক থেকে সিএনজি যুগে আসা ৪ জন সন্ত্রাসী অস্ত্র দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে ব্রাশ ফায়ার চালালে ঘটনাস্থলে সুনীল বিকাশ ত্রিপুরা নিহত হন ও অনন্ত ত্রিপুরা(২৫) নামে অপর এক সাধকের পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। এসময় পরেশ ত্রিপুরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
বক্তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে বিচারহীনতা সংস্কৃতি চলছে। অপরাধীদের সঠিক ও নিরাপেক্ষ বিচার না হওয়ায় দেশে খুন-গুম-অপহরণ-নির্যাতন ঘটনায় প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। তারা অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি না দিয়ে নিরীহ জনগণকে আটক নির্যাতন করে, মিথ্যা মামলা জড়িয়ে গ্রেফতার করছে। আজকে সকালে আলুটিলা নামক স্থানে ছিনতাইকারী অভিযোগ এনে দুই নীরিহ পাহাড়িকে আটক করাছে পুলিশ। অথচ তারা মিঠুন-অনাদি-অনল-সূর্য বিকাশ চাকমাসহ ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের হত্যা ও দুই নেত্রীকে অপহরণে সাথে জড়িত সংস্কার-নব্য মুখোশের সন্ত্রাসী পেলে-বর্মা গংদের গ্রেফতার করছেন না।
বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের আন্দোলনকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে এই দেশের সরকার ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাবাহিনী জড়িত রয়েছে। তারা সন্ত্রাসীদেরকে আশ্রয় দেয়, গাড়ীতে করে নিয়ে হত্যা-গুম-খুন-অপহরণের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। জাতীয় বেঈমান-দালাল-প্রতিক্রিয়াশীল ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের যে কোন স্থানের দেখতে পেলে প্রতিহত করার ঘোষণা করেন। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনে নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করতে প্রস্তুতি রয়েছে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বক্তারা, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়িয়ে প্রত্যেকটি এলাকায় পাড়ায়-মহল্লায়, গ্রামে গ্রামে প্রতিরোধের দুর্গ গড়ে তুলার জন্য জনগণের প্রতি আহ¦ান জানান। অবিলম্বে ইউপিডিএফ নেতা সুনীল বিকাশ ত্রিপুরাসহ এযাবৎকালে নেতা-কর্মীদের -হত্যার সাথে জড়িত সেনাবাহিনী সৃষ্ট সন্ত্রাসী পেলে-বর্মা-জুলেয়্যা গংদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এদিকে একই প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি জেলা মানিকছড়ি উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম মানিকছড়ি উপজেলা। আজ সকাল ১১টায় মিছিল মানিকছড়ি উপজেলা সদর কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে মানিকছড়ি গিরী মৈত্রী ডিগ্রী কলেজের সমানে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমবেশে করে। সমাবেশে ডেভিট চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, মানিকছড়ি কলেজ শাখার সাংস্কৃতিক সম্পাদক জোৎ¯œা মারমা, উপজেলা শাখার সভাপতি মংশেপ্রু মারমা। সমাবেশ থেকে কাথাং, মিঠুন, অনাদীসহ ইউপিডিএফ-এর নেতাকর্মীদের হত্যাকারী সন্ত্রাসী পেলে, বর্মা গংদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানান।
একই প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি জেলা মহালছড়ি উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে তিন সংগঠন। মিছিলটি বেলা ১টায় মহালছড়ি উপজেলা সদর ২৪ মেইল থেকে কলেজ গেইটে সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এতে বক্তব্য রাখেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) উপজেলা শাখার সদস্য রুপেন্টু চাকমা প্রমূখ।