ফটিকছড়ি প্রতিনিধি: অনিয়ম আর বিশৃখলার মধ্য দিয়ে শেষ হল ফটিকছড়ির উন্নয়ন মেলা। তিন দিন ব্যাপি এ মেলায় অংশ নেয়নি সরকারী অনেকগুলো দপ্তর। আর নাম সর্বস্ব যে
ফটিকছড়ি প্রতিনিধি: অনিয়ম আর বিশৃখলার মধ্য দিয়ে শেষ হল ফটিকছড়ির উন্নয়ন মেলা। তিন দিন ব্যাপি এ মেলায় অংশ নেয়নি সরকারী অনেকগুলো দপ্তর। আর নাম সর্বস্ব যে সব দপ্তর অংশ নিয়েছেন সে গুলো থেকেও পাওয়া যায়নি কোন ধরনের তথ্য।
সরকারী বিভিন্ন সেবা সংস্থা এবং দপ্তরের উন্নয়ন কর্মকান্ডসহ তাদের সেবা সম্পর্কে সাধারণ জনগনকে অবহিত করার লক্ষ্যে সারাদেশে সরকার উন্নয়ন মেলার আয়োজন করে। দেশের প্রত্যেক উপজেলা সদরে এ মেলার সফল আয়োজনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের প্রতি নির্দেশনা জারি করে জেলা প্রশাসন। সারা দেশে একযোগে ১১ জানুয়ারী থেকে ১৩ জানুয়ারী পর্যন্ত মোট তিনদিন এ মেলা চলে। আজ ছিল মেলার সমাপনি দিন। সকালে ফটিকছড়ি উপজেলা চত্ত্বরে মেলা প্রাঙ্গনে গিয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত সকল সরকারী বেসরকারী এবং স্বায়ত্বশাষিত সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অনেক সংস্থা মেলায় অংশ নেয়নি। আবার কোন সংস্থা মেলায় অংশ নিয়ে নাম সর্বস্ব একটি স্টল দিয়েই যেন তাদের দায় সেরেছে। মেলায় স্টলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা সেবা সম্পর্কিত কোন তথ্য পরিলক্ষিত হয়নি। আবার কোন কোন স্টলে দু’একজন কে বসে থাকলে দেখা গেলেও সংশ্লিষ্ট সেবা সম্পর্কে তারা কোন তথ্য সরবরাহ করতে পারেনি।
উপজেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেবা সংস্থা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কোন স্টল ছিলনা মেলায়। ছিলনা ভূজপুর থানা পুলিশের স্টল। আবার ফটিকছড়ি থানা পুলিশ নামে মাত্র একটি স্টল দিলেও সেখানে দু’জন পুলিশ কনস্টবলকে বসে থাকতে দেখা গেছে। পুলিশের সেবা সম্পর্কে বা মেলায় কি ধরনের সেবা দিচ্ছে পুলিশ এমন প্রশ্নের জবাবে উক্ত দুই কনস্টবল কোন উত্তর দিতে পারেনি। উপজেলা যুব উন্নয়ন, মাধ্যমিক শিক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষা, মহিলা বিষয়ক, অর্থ বিভাগ,খাদ্য দপ্তরসহ উল্লেখযোগ্য আরো বেশ কয়েকটি সংস্থার স্টল জনমানব শুন্য দেখা গেছে। এছাড়া যে সকল বেসরকারী ব্যাংক মেলায় অংশ নিয়েছে সে গুলোতেও দেখা গেছে নিম্ম অধীনস্থ পদের কিছু ব্যক্তিকে বসে থাকতে যারা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সেবা সম্পর্কে অবহিত নন।
আবার উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের স্টলে দেখা গেছে প্রাত্যহিক শ্রেনী কার্যক্রম বাদ দিয়ে বেশ কয়েকজন প্রধান শিক্ষককে স্টলে বসে গানের চর্চা করতে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিমেল কদর’র দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি বলেন মেলায় অংশ নেয়ার জন্য শিক্ষকরা এখানে এসেছেন। স্টলে প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত কোন তথ্য নেই কেন এমন প্রশ্নের কোন উত্তর মিলেনি তাঁর কাছে। খোদ উপজেলা প্রশাসনের স্টলেও ছিলনা কোন ধরনের তথ্য। মেলায় তথ্য সংগ্রহে আগত বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে দেখা গেছে এলোমেলো ভাবে ঘুরতে। বিকালে উপজেলার দু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের এনে বিতর্ক প্রতিযোগিতা আর আলোচনা সভাই ছিল যেন মেলার মূল লক্ষ্য।
তবে মেলায় পরিবার পরিকল্পনা, উপজেলা প্রাণী সম্পদ, একটি বাড়ি একটি খামার, উপজেলা কৃষি দপ্তরের স্টল এবং তথ্য সরবরাহ ছিল প্রশংসনীয়। এদিকে মেলা উপলক্ষে উপজেলার কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থ আদায়েরও অভিযোগ উঠেছে ।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপক কুমার রায়ের সরকারী মুটোফোনে একাধিকার ফোন করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
মেলার বিশৃংখলা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল আলম বাবু বলেন, উন্নয়ন মেলা আয়োজনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রান্তিক জনগোষ্টির কাছে সরকারের উন্নয়ন এবং সেবা সম্পর্কিত তথ্যগুলো পৌছে দেয়া।
কিন্তু ফটিকছড়ির উন্নয়ন মেলা সে লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। বিষয়টি আগামী উপজেলা সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া যে সকল প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা মেলায় অংশ নেয়নি তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।