ফটিকছড়ি: নৌকা-ধানের শীষের দূর্গে মোমবাতির হানা
ফটিকছড়ি প্রতিনিধি: ফটিকছড়ি আসনটি দীর্ঘ দিন যাবৎ আওয়ামীলীগ- বিএনপি দু’দলই দাবী করে আসছে তাদের দুর্গ বলে। এবার সেই দূর্গে আঘাত হানবে ইসলামী ফ্রন্টের মোমবাতি। প্রচারনায় বড় দুই দলকে ডিঙ্গিয়ে তারা শীর্ষে রয়েছে। প্রচার-প্রচারণায় হামলা ও সংঘাতের কারণে সাধারণ ভোটার শংকিত-উৎকণ্ঠিত। সে সাথে চলছে নির্বাচনে হার-জিতের চুড়ান্ত হিসাব-নিকাশ। ভোটারের ধারনা এরবার লড়াই হবে ত্রিমূখী।
উল্লেখ্য, ফটিকছড়িতে ২টি পৌরসভা ও ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে ্এ সংসদীয় আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৭৬ হাজার ১৯৩ জন। তৎমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯১ হাজার ৪ শত ৩ জন এবং মহিলা ভোটার ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭ শত ৯০ জন। মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৩৬টি, বুথ থাকছে ৬৯২টি। এখানে মহাজোট প্রার্থী বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী (নৌকা), জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী বিএনপি নেতা কর্ণেল (অব:) আজিম উল্লাহ বাহার চৌধুরী (ধানের শীষ), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট প্রার্থী সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী (মোমবাতি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী মাওলানা আতিক উল্লাহ বাবুনগরী (হাতপাখা), জাতীয় পার্টি প্রার্থী জহুরুল ইসলাম রেজা (লাঙ্গল) ইসলামীক ফ্রন্ট বাংলাদেশ প্রার্থী মীর মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম (চেয়ার) প্রতিদন্ধিতা করছেন।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সাধারণ ভোটারের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে সাত প্রার্থী মাঠে থাকলেও নির্বাচনী লড়াই হবে মূলত: নৌকা-ধানের শীষ ও মোমবাতি প্রতীক এর মধ্যে। সমগ্র ফটিকছড়ি জুড়ে তারা তিনজনই বিরামহীন প্রচারণা চালিয়েছে প্রচারণার শেষ দিন পর্যন্ত। প্রতীক বরাদ্ধের পর থেকে তারা আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করলেও কয়েকটি সংঘাতের ঘটনা ফটিকছড়ি’র নির্বাচনী পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তুলেছে। গত ২৩ ডিসেম্বর জাফত নগরে বিএনপি প্রার্থী কর্ণেল (অব:) আজিম উল্লাহ বাহারের গণসংযোগে হামলায় প্রার্থীসহ প্রায় ৪০জন আহত হয়। একই দিন বিকেলে উপজেলার কাজীরহাটে ইসলামী ফ্রন্ট প্রার্থী সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ মাইজভান্ডারীর গাড়ী বহরে হামলা-ভাংচুর করে। ২৬ ডিসেম্বর বিকেলে ফটিকছড়ি বাস ষ্টেশনে তার গাড়ী বহরে পুন:রায় হামলা হয়। ঐদিন বারৈয়ারহাটে তার নির্বাচনী অফিস অফিস ভাংচুর, নাজিরহাট ঝংকার মোড়ে গাড়ী ভাংচুর ফটিকছড়ির নির্বাচনী আমেজে উত্তাপ ছড়িয়ে দেয়। বিএনপি নেতা-কর্মীরদের অব্যাহত গ্রেফতার-নির্যাতনে ফটিকছড়ি জুঁড়ে আতংক বিরাজ রয়েছে। এতে করে ভোটারা উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়ছে।
মহাজোট প্রার্থী সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী একবার আওয়ামীলীগের নৌকা, একবার বিএনপির ধানের শীষ ও সর্বশেষ মহাজোটের নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন। দ্বিধা-বিভক্ত আওয়ামীলীগের কারণে এবারও তিনি মনোনয়ন পেলেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে নির্বাচনে এসেছি। মহাজোটের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় পুণ:রায় আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে ফটিকছড়িবাসী।
ভোটের মাঠে নবাগত বিএনপি প্রার্থী আজিম উল্লাহ বাহার। তার দল থেকে ৭জন মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও দুই-তিনজন ছাড়া বাকিদের মাঠে নামাতে পারেনি। তিনি বলেন, ২৩ ডিসেম্বর পরিকল্পিত ভাবে আমার উপর আক্রমণ আক্রমন করা হয়েছে। মহাজোট প্রার্থী জনগণের রায়ে শ্রদ্ধাশীল নয়। আমাকে এবং জনগণকে ভয় দেখানোর জন্যই এ আক্রমণ। আমি ভয় পাওয়ার লোক নই। ভোটের মাঠ থেকে আমাকে সরানো যাবে না। তিনি জনগণের ভোটাধিকার এবং ভোট ডাকাতির পরিকল্পনা করছেন।
অন্যদিকে ইসলামী ফ্রন্ট প্রার্থী সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী মোমবাতি প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে দ্রুতই সর্বত্র প্রচারণা চালিয়ে রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। সর্ব মহলে রব উঠেছে এমন স্বচ্ছ মানুষই রাজনীতিতে দরকার। তিনি বলেন, রাজনীতি মানুষের সেবা করার সর্বোত্তম পথ। এখানে কিছু খারাপ লোকের প্রবেশ রাজনৈতিক অঙ্গনকে কুলুষিত করেছে। ফটিকছড়ির মানুষ দীর্ঘদিন মৌলিক উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত তাদের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং একটি কর্মদ্যোম আধুনিক ফটিকছড়ি গড়তে মোমবাতিতে ভোট চাই।