বিচার চাওয়াই কী ভুল: বাদীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা, রহস্য উদঘাটন হবে তো?
![বিচার চাওয়াই কী ভুল: বাদীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা, রহস্য উদঘাটন হবে তো?](https://pahareralo.com/wp-content/uploads/2022/08/Picallll.jpg)
স্টাফ রিপোর্টার : আল-আমিন আত্মহত্যা করেনি। মেরে ফেলা হয়েছে, কিংবা তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে এমন অভিযোগ যখন সৎ পিতা শাহ আলমের বিরুদ্ধে তখন ঘটনাস্থল লক্ষ্মীছড়ি থেকে ৭০কি: মি: দুরে চট্টগ্রামে অবস্থানরত স্ত্রী সোনালী আক্তার এই মৃত্যু মেনে নিতে পারে নি বিবেকের তাড়নায় আদালতে ৩জনকে আসামী করে মামলা রুজু করে। এর পর থেকেই পিলে চমকে ওঠে শাহ্ আলমের। গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে যায় অজ্ঞাত স্থানে। পুলিশও খোঁজাখুজি শুরু করে। নিন্ম আদালতে জামিনের চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়।
ঘটনা শুরু যেভাবে: গলায় ফাঁস দিয়ে আল-আমিন(৩০) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করে। সৎ পিতা মো: শাহ আলম এ ঘটনা পুলিশকে জানায়। ঘটনাটি ঘটে ২০জুলাই বুধবার বিকেল ৫টার দিকে। ঘটনার ১মাস ৮দিন পর ২৫ আগস্ট আদালতে স্ত্রী সোনালী আক্তার হত্যা মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ বিচারক থানাকে মামলা রেকর্ড করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। লক্ষ্মীছড়ি থানা পুলিশ ২৯ আগস্ট মামলাটি রেকর্ড করেছে বলে জানা গেছে। সি.আর মামলা নং-০২/২০২২। এদিকে আল-আমিনের মা(শাহ আলমের স্ত্রী) আমেনা বেগম পাল্টা মামলা করে আদালতে। মামলা নং ১, তাং ১৩/০৯/২২ইং। এ মামলায় আসামী করা হয় প্রথম মামলার বাদী সোনালী আক্তারকে এবং মামলার স্বাক্ষী মো: ইউনুচ ও কামাল হোসেন ফারুককে। আদালত মামলাটি রেকর্ড করার জন্য থানাকে নির্দেশ দেয়। পুলিশ মামলা রেকর্ড করলে এ মামলার আসামীরাও হয়রানীর শিকার হয়। দু’টি মামলাই পুলিশ তদন্তু করছে।
স্থানীয়দের ধারনা আসল রহস্য ধামাচাপা দিতেই শাহ আলম কুটকৌশলের মাধ্যমে ঘটনার প্রায় ২মাস পর ছেলে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করলো মা। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন ঘটনার দিন মা মুখ খুলেন নি কেনো? কি রহস্য লুকিয়ে ছিল। পুত্রবধু মামলা করলো এক মাস ৮দিন পর। মা মামলা করলো ১মাস ২৭ দিন পর। প্রকৃত অবরাধীদের আড়াল করতেই কি তাহলে এই মামলা। আসল রহস্য উদঘাটন হবে তো?
প্রথম মামলার বাদী সোনালী আক্তার (২৯) পিতা- মৃত পাথর মনি চাকমা মাতা- চিপ্রæমা চাকমা স্বামী- মৃত আল আমিন সাং- জুর্গাছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি বাজার থানা-লক্ষ্মীছড়ি। জেলা- খাগড়াছড়ি। তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমি নওমুসলিম মহিলা হই। মো: আল-আমিন এর সাথে দীর্ঘ দিনের জানাশুনার পর বিয়ে হয়।
লক্ষ্মীছড়ি বাজার এলাকায় আল-আমিনের সৎ বাবা, সৎ দুই ভাই ও আপন দুই বোনসহ বসবাস শুরু করি। বসবাসরত জায়গাটি স্বামী আপন বাবা মৃত মো: শফিউল আলমের নামে রেকর্ডভূক্ত আছে। উক্ত জায়গায় কয়েক মাস যাবৎ সংসার জীবন অতিবাহিত করার সময় পিতার নামীয় জায়গা হতে তাকে বঞ্চিত করার জন্য সৎ বাবা ও সৎ দুই ভাই অর্থাৎ আসামীগণ বিভিন্ন ভাবে শারীরিক ও মানষিক ভাবে অত্যাচার নির্যাতন করতে থাকে। এক পর্যায়ে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে চট্টগ্রাম শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকি এবং স্বামী মাঝে মাঝে চট্টগ্রাম হতে লক্ষ্মীছড়িতে আসা যাওয়ার মধ্যে থাকে। ঘটনার কয়েক দিন পূর্বে লক্ষ্মীছড়ি বাজার এলাকা নিজ বাড়ীতে আসি। আমার স্বামী সব সময় মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখেন। ঘটনার একদিন আগে ১৯/০৭/২০২২ ইং তারিখে আমার স্বামী জানায়, আসামীগণের সাথে তার পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে ঝগড়া-বিবাধ হয়েছে। ২০/০৭/২০২২ ইং তারিখে একাধিকবার ফোন করে পায়নি। ২১/০৭/২০২২ ইং তারিখে রাত অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় জানতে পারি পুলিশ বিগত ২০/০৭/২০২২ ইং তারিখ বিকাল ৫.০০ ঘটিকার সময় তার স্বামী ঝুলন্তু লাশ উদ্ধার করেছে এবং পর দিন অর্থাৎ ২১/০৭/২০২২ ইং তারিখে কোন ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ না করে তড়িঘড়ি করে তার স্বামীকে দাফন সম্পন্ন করে। সোনালী আক্তার জানায় আমার স্বামী আত্মহত্যা করেনি। নির্যাতন করে মারা হয়েছে। আমি আদালতের কাছে সুষ্ঠু বিচার চাই। আর এ ঘটনাকে ধামাচাপা দিতেই আমাকে এবং আমার দায়ের করা মামলার স্বাক্ষীকে জড়িয়ে মিথ্যা মামলা করেছে শুধু মাত্র হয়রানী করার জন্যই।
লক্ষ্মীছড়ি থানার অফিসার্স ইনচার্জ মিনহাজ মাহমুদ ভূইয়া বলেন, আদালতের আদেশে মামলাই রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্তু কাজ চলমান রয়েছে। তদন্তের মাধ্যমেই প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে বলে তিনি জানান। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আল-আমিন’র পোষ্টমর্টেম রিপোর্ট থানায় আসে নি।