বৈরী আবহাওয়ার কারণে খাগড়াছড়িতে লিচুর ফলন এবার ভালো না
মো. মফিজুল ইসলাম: জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে খাগড়াছড়িতে লিচুর ভয়াবহ ফলন বিপর্যয় হয়েছে। ক্ষোভ ও হতাশায় অনেক বাগান মালিকরা লিচু গাছ কেটে ফেলার চিন্তা করছেন। বিশেষত চায়না টু ও থ্রি জাতের লিচুর বাগান মালিকরা। গাছে লিচুর ফলন আসেনি বললেই চলে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন অনেক কৃষক।বছরের এই সময়ে লিচু গাছের থোকায় থোকায় লিচু থাকার কথা। অথচ এবার বৈরী আবহাওয়ার কারণে গাছে লিচুর ফলনই আসেনি। সারা বছর বাগান পরিচর্যা, সার ও কীটনাশক প্রয়োগের পরও ফলন না আসায় হতাশায় চাষিরা।
বিপুল অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেও লোকসানে বাগান মালিকরা। গত ২/৩ বছর ধরে গাছে ফলন না আসায় অনেক কৃষক ক্ষোভ ও হতাশায় লিচু গাছ কেটে অনন্য বাগান করার পরিকল্পনা করছে । মানিকছড়ির ১নং ইউনিয়নের কৃষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন। আমি আজ থেকে ১০ বছর আগে থেকে এই লিচু বাগান শুরু করেছি, কিন্তু এখন পযন্ত কোন আউটপুট পাইনি। মাত্র ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার লিচু বিক্রি করেছি, তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি লিচু বাগান কেটে অনন্য বাগান করবো।
মানিকছড়ির ১নং ইউনিয়নের আরেক কৃষক, আবদুল রশিদ বলেন। আমার ৩টি বাগানে প্রায় ১০০ লিচু গাছ আছে। আজ ২ থেকে ৩ বছর যাবত ফলন আসছে না। এবছর ও ১ লক্ষ টাকা খরচ করেছি কিন্তু ২০ হাজার টাকাও লিচু বিক্রি করতে পারিনি। তাই চিন্তা ভাবনা করেছি লিচু বাগান কেটে অনন্য বাগান করার। বৃহত্তর এই চট্টগ্রাম বেপক সম্ভাবনাময় অনচল। কৃষি অফিসার তথ্য মতে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে চায়না টু, থ্রি ও বোম্বে জাতের লিচু।
গুইমারার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার, মো. আবদুল রাইম মজুমদার বলেন, বিগত দুই তিন বছর ধরে পার্বত্য অঞ্চলে শীত কম পরায় মাইটের আক্রমণ বেরে গেছে, তাই লিচুর ফলন কম হচ্ছে। আর কৃষকরা সঠিক ভাবে পরিচর্জা ও সেজ ব্যবস্তা না থাকায় পাহাড়ে লিচুর ফলন কম হচ্ছে। আমরা কৃষকদেরকে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি যাতে সঠিক ভাবে পরিচর্যা করে। আর যদি সঠিক ভাবে পরিচর্যা করেন কৃষকরা ভালো ফলন পাবেন বলে মনে করেন তিনি।
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: মর্তুজ আলী বলেন। জেলায় এবছর ২ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৭শ ৮৭ মে.টন। কিন্তু খরা আর পচন্ড তাপদেহের কারণে লিচুর ফলন এবছর অর্জিত হবে না। তবে আগামীতে যেন লিচুর ফলন ভালো হয়, সে জন্য কৃষকদেরকে নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন এমনটাই বলেন তিনি।