মাইজভান্ডার ওরশ: ঝঁড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে লাখো ভক্তের ঢল
ফটিকছড়ি প্রতিনিধি: ঝঁড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে দেশ-বিদেশের লাখো ভক্তের আমিন-আমিন ধ্বনিতে পূর্ণতা কামনায় গতকাল রবিবার রাতে শেষ হলো মাইজভান্ডারী সূফিবাদি দর্শনের দ্বিতীয় প্রাণ পুরুষ শাহ্সূফী সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবাভান্ডারী (ক.)’র ১৫৬তম খোশরোজ শরীফ। এ উপলক্ষে মাইজভান্ডারের বিভিন্ন মঞ্জিলে যথাযত ধর্মীয় ভাবগাম্বীর্যে বিশ্ব শান্তি-ঐক্য কামনায় আখেরি মুনাজাত হয়েছে।
জানা গেছে, গত দু’দিন ধরে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসা ভক্ত জনতার পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে মাইজভাণ্ডার শরীফ। বাবাভান্ডারীর রওজা শরিফকে ঘিরে জিয়ারত, কুরআন তিলাওয়াত, দুরূদ শরিফ পাঠ, মিলাদ-কিয়াম ও মুনাজাতে শামিল হয়ে ভক্ত আশেকরা আউলিয়া কেরামের উছিলার দ্বারস্থ হয়ে আল্লাহর দরবারে অশ্র“সিক্ত ফরিয়াদ জানান।
ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বাবুল আকতার বলেন, এই মহান অলীর খোশরোজ শরীফ উপলক্ষ্যে ফটিকছড়ি থানা পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোন ধরণের বিশৃংখলা ছাড়াই খোশরোজ শরীফ সম্পন্ন হয়েছে।
বাবাভান্ডারী সৈয়দ গোলামুর রহমান মাইজভান্ডারী জীবনাদর্শ আলোচনা সভায় গাউছিয়া রহমান মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন সৈয়দ মুজিবুল বশল মাউজভান্ডারী (ম.জি.আ) বলেছেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম মানবতার ধর্ম। ইসলামে জঙ্গীবাদের স্থান নেই। আর মাইজভান্ডারী তরিকা হচ্ছে সকল ধর্মের, সকল বর্ণের মানুষের মিলনের স্থান। এখানে কোন ভেদাভেদ নেই। আছে শুধূ সাম্য-ভ্রাতৃত্ব-ঐক্য। মাইজভান্ডারী তরিকাকে বিশ্বের দরবারে এই নির্ভিক প্রচারক সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবাভান্ডারী (ক) এই শিক্ষা আমাদের দিয়েছেন। আজ সারা বিশ্বে ইসলাম ও মাইজভান্ডারী তরিকতের শত্রুরা শান্তি নষ্ঠের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ইসলামের অপব্যখ্যা করে এক শ্রেনীর ধর্মান্ধরা মুসলিমদের উপর আঘাত করছে। সারা বিশ্বে মুসলিম নারী ও শিশুদের উপর আঘাত করে বিশ্ব মানবতা ধ্বংস করছে।
যুগে যুগে ইসলামের সূফিবাদী দর্শন চর্চার একটি উৎকৃষ্ট স্থান হচ্ছে মাইজভান্ডার শরীফ। সূফি সাধকরা কখনো মানুষে-মানুষে কোনো প্রভেদ-বিভাজনকে প্রশ্রয় দেন না। তেমনি সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবাভান্ডারী (ক.) মানুষে-মানুষে ঐক্য-সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন গড়ার দিক নির্দেশনাই দিয়ে গেছেন। আজকের সহিংস অশান্ত বিশ্বে শান্তি ও জননিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে মাইজভান্ডারী মহাত্মাদের প্রদর্শিত রূপরেখা অনুসরণ জ্বরুরী।
এ সময় শাহজাদা সৈয়দ নুরুল বশর মাইজভান্ডারী, সাবেক সংসদ সদস্য খান টিপু সুলতান, আশেকানে মাইজভান্ডারী এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আ ফ ম জামাল, প্রফেসর শায়েস্তা খান, এয়াকুব গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. এয়াকুব আলী, মাওলানা সৈয়দ নিজাকুল হক, মাওলানা মফিজুর রহমান, মাওলানা দিদারুল আলম, মাওলানা জাগির হোসেন, জামাল উদ্দিন, আবদুছ ছালাম সরকার, এম হাসেম ও কামাল উদ্দিন প্রমুখ।