মানিকছড়িতে কড়া নিরাপত্তায় ভোট গ্রহণ
আবদুল মান্নান, মানিকছড়ি: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকছড়ির ১৬টি ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের সরব উপস্থিতি ও আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীর উৎসবমুখর সমাগমে এবং প্রশাসনের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার মধ্য ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে।
ভোট কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার ১৬টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ৪৩ হাজার ৫শত ২৯জন। এর মধ্যে পুরুষ ২১হাজার ৮শত ১৭জন এবং মহিলা ২১হাজার ৭শত ১২জন। সকাল থেকে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে নারী-পুরুষের ব্যাপক সমাগমে ভোট গ্রহন শুরু হয়েছে। যদিও ৮৩ বুথের সবক’টিতে বিএনপি’র এজেন্টের উপস্থিতি চোখে পড়েনি! বেশিরভাগ বুথে এজেন্ট থাকলেও তারা ছিল নিরব! তবে কোন কেন্দ্রে বিএনপি’র শীর্ষস্থানীয় নেতা কিংবা সক্রিয় কর্মী চোখে পড়েনি। বিএনপি সমর্থকরা ভোট কেন্দ্রে গেলেও কোন হাক-ডাক ছাড়াই নিরবে ভোট দিয়ে কেন্দ্র ত্যাগ করেছে। ফলে কোথাও কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে পুরুষের চেয়ে মহিলা ভোটার উপস্থিতি ছিল বেশি। সকাল থেকেই নারী-পুরুষ ভোটাররা শীত উপেক্ষা করে ভোট কেন্দ্রে এসেছেন। সুস্থ ও স্বাভাবিক ভোটারের পাশাপাশি প্রতিবন্ধী ভোটরদেরকে ভোট দিতে কেন্দ্র আসতে দেখা গেছে। সকাল সাড়ে ১০টায় গচ্ছাবিল ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে প্রচুর নারী ভোটার ভোট দিতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন । ্ভোটাররা বলছেন অনেক দিন পর উৎসবমুখর পরিবেশে তারা ভোট দিতে চায়। এ জন্যই ভোট কেন্দ্রে আসা। ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করেছে। প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ,আনসার এর পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ ও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি এবং বিজিবি’র টহল অব্যাহত থাকায় সাধারণ ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়েছে।
সকাল সাড়ে ১০টায় মানিকছড়ির রাজবাড়ী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাহিরে বিএনপি’র মহিলা এজেন্টকে কেন্দ্রে ঢুকতে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে কিছুটা হৈ-হুল্লুর হলেও পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এছাড়া রাণী নিহার দেবী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়,তিনটহরী,বড়ডলু কুঞ্জুরীপাড়া, গাড়ীটানা, সাপমারা, যোগ্যাছোলা, চেঙ্গুছড়া, কালাপানি, ছদুরখীল, মুসলিমপাড়া, ইউনিয়ন পরিষদ, গচছাবিল,গভামারা,ডাইনছড়ি ও বাটনাতলী কেন্দ্রে উপস্থিত ভোটাররা স্বাভাবিকভাবে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করেছে। বিএনপি’র একাধিক নেতা অভিযোগ করে বলেন, কেন্দ্রে কেন্দ্রে সরকার দলীয় নেতারা উপস্থিত থেকে প্রকাশ্যে ব্যালটে সীল মারতে বাধ্য করেছে ভোটারদের! তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামীলীগ নেতারা। এছাড়া কোন কেন্দ্রেই প্রকাশ্য সীল মারতে বাধ্য করার অভিযোগে হৈ-হুল্লুর কিংবা কর্তব্যরত পুলিশ,সেনাবাহিনী অথবা প্রিসাইডিং অফিসারের সামনে কেউই প্রতিবাদ করেনি।
ঝুঁকিপূর্ণ এবং অধিক ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রেগুলোতে পুলিশ, আনসার সদস্যের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সবর উপস্থিতিতে ভোটাররা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। ভোট কেন্দ্রে আসা অধিকাংশ ভোটার ভোট দিয়ে স্বস্থি প্রকাশ করে বলেন, উন্নয়নের স্বার্থে আওয়ামীলীগ প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়েছি।
সাপমারা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামীলীগ নেতা ও উপজেলা সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ভোট কেন্দ্রে সব দলের এজেন্টের উপস্থিতিতে কোন ত্রুটি-বিচ্যুতি ছাড়াই ভোট গ্রহন চলছে। তিনি আরো বলেন, আওয়ামীলীগ প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে(নৌকা প্রতীক )মানিকছড়ি থেকে বেশি ভোট উপহার দিতে পারবো বলে আশা করছি।
এদিকে এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় ভোট গ্রহন শেষে কেন্দ্রে ভোট গণনা চলছে। গড়ে প্রায় ৮০% ভোট কাস্টিং হয়েছে বলে বিভিন্ন কেন্দ্র সূত্র নিশ্চিত করেছে। ফলাফল প্রাপ্তের অপেক্ষায় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা প্রতিটি কেন্দ্রে সামনে ভিড় জমিয়েছে।