মানিকছড়িতে গৃহবধু খুনের ঘটনায় মামলা, অভিযোগের তীর স্বামীর দিকেই
আবদুল মান্নান/আলমগীর হোসেন: খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়িতে গৃহবধু খুনের ঘটনায় নিহতের স্বামী মো. বেলাল হোসেন(২৬)কে এজাহারভুক্ত আসামী দেখিয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন নিহতের পিতা মো. নেজাম। তবে এ পুরো ঘটনায় অভিযোগের তীর এখন স্বামীর দিকেই বলে তথ্য প্রমাণ ও অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে খনের রহস্য উদঘাটন করতে পারবে বলে পুলিশ ধারনা করছে। ঘাতক মো. বেলাল হোসেনকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এবং শ্বশুর মো. মমতাজ উদ্দীন ও শ্বাশুরী শিরিনা আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নামার তিনটহরী গ্রামের মো. মমতাজ উদ্দীনের ৫ ছেলে ও ১ মেয়ের সংসারে মেজ ছেলে মো. বেলাল হোসেন (২৬) পিতার বসতবাড়ীর অদূরে পাহাড়ের চুড়ায় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করত এবং মোটর সাইকেল চালিয়ে সংসার চালাত। তাদের সংসারে দেড় বছরের শিশুপুত্র রয়েছে। সম্প্রতি বেলাল হোসেন ইয়াবা সেবন ও পাচারের কাজে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মনমালন্য চলছিল। এ নিয়ে একাধিকবার বিচার সালিস হয়েছে।
৩১ জুলাই দিবাগত রাত (১ আগস্ট)আনুমানিক ২.৩০টার দিকে তাদের বাড়িতে চিৎকার শুনতে পেয়ে বেলালের পিতা ও ছোট ভাই সাগর হোসেন সেখানে ছুঁটে যায়। তারা সেখানে গিয়ে দেখেন যে বেলাল হোসেন এবং তার স্ত্রী সালমা আক্তার (২২) রক্তাক্তাবস্থায় উঠানে পড়ে চটপট করছে। পরে তারা আহত দু’জনকে উদ্ধার করে মানিকছড়ি হাসপাতালে এসে ভর্তি করান। চিকিৎসক চিকিৎসা শুরু করতে না করতেই স্ত্রী সালমা আক্তার(২২)মৃত্যুবরণ করেন। আহত বেলাল হোসেনকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। চিকিৎসক ডা. মহিউদ্দীন জানান, নিহতের গলায় ও পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে বেলাল হোসেন অনেকটা আশংকামুক্ত। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে মৃত্যুর পূর্বে সালমা আক্তার হাতের ইশারায় কিছু বলার চেষ্টা করলেও তা স্পষ্ট করে বলতে পারেনি! তবে ঘটনাস্থল ঘর ও উঠানে রক্তের ছড়াছড়ি, হত্যার ধরণ ও স্বামী-স্ত্রীর ইতিপূর্বের ঝগড়া-বিবাদ,বিচার-সালিশ নিয়ে চুঁলছেরা বিশ্লেষণ চলছে দিন ব্যাপি। এ ঘটনায় স্বামী নিজেই জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন এলাকাবাসী। নিহতের পিতা মো. নেজাম মেয়ের মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পেয়ে চট্টগ্রাম থেকে মানিকছড়ি ছুঁটে আসেন এবং ঘটনার জন্য মেয়ের স্বামী মো. বেলাল হোসেনকে এজাহার ভুক্ত আসামী দেখিয়ে হত্যা মামলা দায়ের করলে পুলিশ ঘাতক স্বামী মো. বেলাল হোসেনকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এবং শ্বশুর মো. মমতাজ উদ্দীন ও শ্বাশুরী শিরিনা আক্তারকে আটক করেছে। মামলা নং ০১,তারিখ ০১.০৮.২০১৮ খ্রি. ধারা ৩০২ বা.দ.বি।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ রশীদ, এস.আই আবদুল্লাহ আল মাসুদসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুঁটে যান এবং সকালে সরজমিনে ছুঁটে আসেন খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আলী আহম্মদ। তিনি ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন এবং দ্রুত হত্যার রহস্য খুঁজে বের করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন।
থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ রশীদ বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করি এবং এজাহার ভুক্ত ঘাতক নিহতের স্বামী মো. বেলাল হোসেন ও শ্বশুর মো. মমতাজ উদ্দীন এবং শ্বাশুরী শিরিনা আক্তারকে আটক করতে সক্ষম হই।