মাহে রমজানের সওগাত-২৬
মুহম্মদ আলতাফ হোসন
আজ ২৬শে রমজান। হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ রজনী লাইলাতুল ক্বদর আজ দিবাগত রাত। আজ সূর্যাস্তের সাথে সাথে মহিমান্বিত এ রাতের রহমত বর্ষিত হতে থাকবে গোটা বিশ্বের সকল মানুষের ওপর। বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান এ রাত ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-আযকার ও কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে উদযাপন করবে। এ রাত পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়। লাইলাতুল অর্থ মহিমান্বিত রাত। এ রাতের মর্যাদা ও গুরুত্ব অনেক বেশি। এ রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম হিসেবে আল্লাহ ঘোষণা করেছেন। মূলত এ রাতে পবিত্র কুরআন মজিদ নাযিল হয়েছে বলেই এ রাতের এত মর্যাদা। আর এ রাতের কারণেই পবিত্র রমযান মাসের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। আবু বকর আল আররাক বলেছেন, এ রাতের নাম ক্বদর রাত রাখা হয়েছে এ জন্য যে, যে লোক মূলত মান মর্যাদাসম্পন্ন নয় সে যদি এ রাতকে যথাযথভাবে গ্রহণ করে ও জাগরণ করে আল্লাহর ইবাদত করে তাহলে সেও মর্যাদাবান ও সম্মানিত হবে।
আল্লাহ রাববুল আলামীন সূরা আল ক্বদর নামক একটি সূরা নাযিল করে বলেছেন, ‘‘নিশ্চয়ই আমি তা (আল কুরআন) লাইলাতুল ক্বদরে নাযিল করেছি। তুমি কি জান লাইলাতুল ক্বদর কী ? লাইলাতুল ক্বদর হলো হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। এ রাতে ফেরেশতা রুহ (জিব্রাইল, মিকাইল, ইস্রাফিল, আজরাইল) আসে আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে অসংখ্য, অগণিত রহমত নিয়ে, তারা শান্তি বিতরণ করে। ফজর পর্যন্ত এভাবে চলতে থাকে।
গোটা রমযানের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে পবিত্র লাইলাতুল ক্বদরকে ঘিরে। আর এই লাইলাতুল ক্বদর সম্পর্কে পবিত্র কুরআন ও হাদীসে অনেক বর্ণনা এসেছে। তবে কোথাও নির্দিষ্টভাবে লাইলাতুল ক্বদরের রাত নির্ধারণ করা হয়নি। হাদীসে বলা হয়েছে রমযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল ক্বদর তালাস করার জন্য। বিশিষ্ট হাদীস বিশারদ ও ফিকাহ শাস্ত্র বিশারদগণ বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে ধারণা করেছেন যে, পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর রমযানের ২৭ তারিখ রাতেই হতে পারে। এ জন্য এ রাতকে লাইলাতুল ক্বদর হিসেবে মুসলমানগণ পালন করে থাকে। আর সুনির্দিষ্টভাবে এ রাতকে চিহ্নিত করতে না পারায় এ রাতের মর্যাদা হাসিল করার জন্য মুমিন বান্দাহগণ ইতিক্বাফে বসেন।