মৃত ব্যক্তির নামে ভিজিডি কার্ড ?
স্টাফ রিপোর্টার, গুইমারা থেকে: গুইমারা উপজেলার ডাক্তার টিলা এলাকার নিলু চৌধুরী গত হয়েছেন চার বছর আগে।চলতি অর্থ বছরে তিনি শশ্মন থেকে উঠে এসে ভিজিডি কার্ডের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছেন। উপজলা প্রশাসনসহ বাচাই কমিটি সকল বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে তার নামে একটি ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ দিয়েছেন ।এরপর ২৭৩ নং ভিজিডি কার্ড মূলে চাউল উত্তোলন করে নিয়েছেন গত ছয় মাস।এ বাচাই কমিটিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তুষার আহমেদ,মহিলা ষিয়ক কর্মকর্তা মোসাম্মদ হাছিনা বেগম ,স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়ায় উপজেলা মহিলা ষিয়ক কর্মকর্তা মোসাম্মদ হাছিনা বেগম তড়িঘড়ি করে স্বরজমিনে গিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছেন, শিশু চৌধুরীর স্ত্রী কার্ডধারী নিলু চৌধুরী দুস্থ ও অসহায় কিন্তু আইডি কার্ড না থাকায় তার দ্বীতিয় স্ত্রীকে কার্ডটি দেওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে কার্ডটি অন্য কাউকে দেয়া যেতে পারে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন। অথচ কার্ডধারী নিলু চৌধুরী মারা গিয়েছেন চার বছর আগে। মৃত ব্যক্তির নামে ভিজিডি কার্ড বরাদ্দের বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বেশ কয়েকটি দুন্থ পরিবার জানান,মারা যাওয়ার পর অনলাইনে আবেদন করে কার্ড হয়। ছয় মাস চাল উত্তোলনের পর জানাযায় তিনি শশ্মন চলে গেছেন চার বছর আগে ।
এটা কেমন বাচাই কার্যক্রম? অথচ গুইমারা উপজেলায় এমন একটি ভিজিডি কার্ড থেকে বঞ্চিত অনেক দুস্থ ও অসহায় পরিবার। গুইমারা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুইজাউ মারমা জানান,অনলাইনে যখন ভিজিডির আবেদন হচ্ছে তখন তিনি দায়িত্বে ছিলেন না।তবে অনলাইনে আবেদনের পরে উপজেলায় শুনানি হয়।শুনানির পরে বরাদ্দ হয।শুনানীতে সংশ্লিষ্ট পরিষদের সদস্যরা আবেদনকারীকে শনাক্ত করেন। এটি কিভাবে ঘটেছে তিনি জানেন না। তবে অভিযোগের পরে তিনি জেনেছেন ,নিলু চৌধুরী ,স্বামী শিশু চৌধুরী নামে কোন মহিলা জিবিত নেই। চার বছর আগে মারা গেছে। মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা লিখিতভাবে নিষেধ করার পর বর্তমানে মৃত নিলু চৌধুরীর নামে চাউল বিতরন বন্ধ রেখেছেন। তবে ইউপি সদস্য জর্নাধন জানান,এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। অনুসন্ধানে দেখা যায়,উপজেলার ডাক্তার টিলা এলাকার নিলু চৌধুরী গত হয়েছেন ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর। তার আইডি কার্ড ব্যবহার করে স্বামীর দ্বীতিয় স্ত্রী শিল্পী রৌদ্রের নামে একটি ভিজিডি কার্ড হয়েছে।গত ছয় মাস শিল্পী রৌদ্র কার্ডের চাউল উত্তোলন করেছেন।বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়ায় গত দুই মাস চাউল দিচ্ছে না বলে শিল্পী রৌদ্র জানান।
এখন কার্ডটির অর্ধেক তাকে দিবে ,আর অর্ধেক নতুন কাউকে দিবে বলে তিনি শুনেছেন। গুইমারা উপজেলা মহিলা ষিয়ক কর্মকর্তা মোসাম্মদ হাছিনা বেগম দু:খ প্রকাশ করে জানান,এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না।অনলাইনে আবেদনের পর সংশ্লিষ্ট পরিষদের চেয়ারম্যানদেরকে তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। তারাই তালিকা চুড়ান্ত করে দিয়েছেন।ছয় মাস চাউল উত্তোলনের পর মৃত মহিলার নামে ভিজিডি চলছে তিনি জেনেছেন । এরপর ওই কার্ডের চাউল বিতরন বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। এমন ঘটনায় গুইমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার আহমেদ জানান,বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন।ইতিপূর্বে তদন্ত করা হয়েছে।
তবে খাগড়াছড়ি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: মহিউদ্দিন আহমেদ জানান,এ ঘটনার বিষয়ে গুইমারা উপজেলা মহিলা ষিয়ক কর্মকর্তা মোসাম্মদ হাছিনা বেগম তাকে কিছুই জানাইনি। মৃত ব্যক্তির নামে ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ দেওয়া চরম অন্যায়। বাচাই কমিটি ভালো ভারে যাচাই–বাছই করা দরকার ছিলো। বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন। কখন বরাদ্দ দিয়েছে,কখন তদন্ত করেছেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাকে জানায়নি।