লক্ষ্মীছড়িতে ৩য় পর্যায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ১’শ ঘর নির্মাণ সুষ্ঠু তদারকির মধ্য দিয়ে শুরু

 লক্ষ্মীছড়িতে ৩য় পর্যায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ১’শ ঘর নির্মাণ সুষ্ঠু তদারকির মধ্য দিয়ে শুরু

স্টাফ রিপোর্টার: মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” এই নির্দেশনা বান্তবায়ন করতে সারা দেশে আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় প্রথম পর্যায় ৩২টি, ২য় পর্যায় ৭০০টি এবং ৩য় পর্যায় আরো ১০০টি গৃহীন পরিবারের জন্য উপহারের ঘর নির্মাণ কাজ সুষ্ঠু তদারকির মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ৭৩২টি গৃহহীন পরিবারের মাঝে চাবি হস্তান্তর কার্যক্রম ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে উপজেলা প্রশাসন।

এদিকে ৩য় পর্যায় আরো ১০০টি গৃহীন পরিবারের মাঝে যাচাই-বাছাই শেষে ঘর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুল চৌধুরী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: ইয়াছিন সরেজমিনে গিয়ে জায়গা নির্ধারণ, প্রকৃতভূমিহীন ও অসহায় পরিবারকে অগ্রাধীকার দিয়ে সুষ্ঠু তদারকির মধ্য দিয়ে গৃহ নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। প্রাথমিক পর্যায় তালিকা চুড়ান্ত করা হলেও গরীব ও অসহায় বিবেচনায় নাম পরিবর্তন বা সংযোজন করা হতে পারে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এবারের ঘর নির্মাণ কাজের প্রকল্পের ব্যায় নির্ধারণ করা হয়েছে ২লাখ ৪০হাজার টাকা। বাড়তি কাজ হিসেবে ডিজাইনে আরসিসি পিলার ও লিন্টার ধরা হয়েছে এবারের ঘর নির্মাণে।

লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: ইয়াছিন বলেন, দ্বিতীয় পর্যায় ৭০০টি ঘর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে আমার জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জিং ছিল। কারণ লক্ষ্মীছড়ির বিশাল এলাকাই রয়েছে যেখানে শুধু পাঁয়ে হাঁটার রাস্তা, হেডক্যারিং এর বিকল্প ছিল না। সরকারের বেঁধে দেয়া ড্রয়িং, ডিজাইন মেনে মানসম্মতভাবে ঘরগুলো নির্মাণ করতে পেরেছি বলে প্রশাসনের কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের ধন্যবাদ জানান তিনি। উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুল চৌধুরী বলেন, অনুন্নত পিছিয়ে পরা এলাকায় গৃহহীনদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উপহার ঘর একজন সাধারণ মানুষের জন্য বড় পাওয়া। বর্তমানে আরো ১০০টি ঘর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান।

৩য় পর্যায় ঘর পাওয়া বানরকাটা এলাকার তপন দাশ, জুর্গাছড়ি এলাকার জামাল হোসেন, সমুড় পাড়া এলাকার পুষ্পরানী এবং ইন্দ্রকার্বারী পাড়ার রাজপতি মার্মা জানান, আমরা ঘর পেয়ে অত্যন্ত খুশি। আমাদের ঘরের কাজ শুরু হয়েছে। আমরা একটি পাকা বাড়ি পাচ্ছি, এখানে শান্তিতে ঘুমাতে পারবো যা ছিল আমাদের জন্য শুধুই স্বপ্ন। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে ঘর উপহার দেয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা(পিআইও) জানান, আমি সরেজমিনে গিয়ে প্রতিটি ঘরের নির্মাণ কাজ তদারকি করছি। কোনো প্রকার অনিয়ম, ত্রুটি-বিচ্যুতি মেনে নেয়া হবে না।

বর্মাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান সুইসালা চৌধুরী জানান, এই এলাকায় ২য় পর্যায়ের ঘর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে ৩য় পর্যায় ঘর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। যারা গরীব ও অতিদরিদ্র তারাই ঘর পেয়েছে। এই পাহাড়ে গরীব মানুষের জন্য যে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: ইয়াছিন এ প্রতিনিধিকে বলেন, প্রথম পর্যায়ের ৩২টি ঘর আগেই বাস্তবায়ন হয়েছে। আমি আসার পর মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয়কে বলে ৭০০টি ঘর নিয়ে এসেছি। এখানকার মানুষগুলে এতই গরীব যে, তারা ঠিকমত একবেলা ভাতও খেতে পায় না। দিনমজুরী করে জীবিকা নির্বাহ করে। দেখলে একেবারে অসহায় মনে হয়। তাদের কথা চিন্তা করেই এতগুলো ঘর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উপহার দিয়েছে। আমি বলার চেষ্টা করেছি এবং অনেক ক্ষেত্রে সফলও হয়েছি যে, এটা উপহারের ঘর কাউকে একটাকাও দিতে হবে না। তিনি বলেন, কে কি বললো সেটা কোনো বিষয় না, এই মানুষগুলোর জন্য কাজ করতে পারছি সেটাই বড় বিষয়। যে ক’দিন থাকবো এই অসহায় মানুষদের জন্য কাজ করে যাবো। ১০০টি ঘরে কাজ শুরু হয়েছে আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে। জনপ্রতিনিধি ছাড়াও এই ঘরগুলো সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য তদারকি অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে তারাই উক্ত ঘরের গুনগত মান রক্ষার জন্য কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post