লামায় শ্যালকের স্ত্রীর মামলায় দুলাভাই কারাগারে..
লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি: বান্দরবানের লামা পৌর শহরের বাজার পাড়ার ফার্মেসী বসবাসকারী রুবেল দাশের অন্তস্বত্তা স্ত্রী শিমু আইচকে মারধরের ঘটনার মামলার আসামী দুলাভাই সাগর চৌধুরীকে আদালত কারাগারে পাঠিয়েছেণ। গত ৪ এপ্রিল পারিবারিক বিরোধের জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে শ্যালক রুবেল দাশের দুলাভাই সাগর চৌধুরীর মারধরের ঘটনায় শ্যালকের স্ত্রী শিমু আইচের গর্ভের তিন মাসের সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে মর্মে অভিযোগ তুলে দুলাভাই সাগর চৌধুরীসহ তিন জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন রুবেল দাশের ভুক্তভোগী স্ত্রী শিমু আইচ। অভিযোগের ভিত্তিতে ৪৪৮/৩২৩/৩৪২/৩১৬/৩৭৯/৫০৬ ধারায় একটি মামলা (মামলা নং-০৭, তারিখ- ১০/০৪/২১ইং) রুজু করে পুলিশ। এক পর্যায়ে গত ২৯ জুন মামলার ১নং বিবাদী সাগর চৌধুরী আদালতে আতœসমর্পন করলে আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। সাগর চৌধুরী চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলার বিদগ্রামের বাসিন্দা অনিল চৌধুরীর ছেলে। বুধবার বিকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সাগর চৌধুরী এ মামলায় কারাগারে রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন লামা উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আইনজীবি মো. মামুন মিয়া।
মামলা ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, লামা বাজার ফান্ডের ১৩২, ১৩৪, ১৩৫ ও ১৩৬ নং প্লট ও স্থীত দোতলা বিল্ডিং এবং ছাগল খাইয়া মৌজার ২১৩নং হোল্ডিং এর ৪৩ শতক প্রথম শ্রেণীর জমি রুবেল দাশকে ৩শ টাকার স্টাম্প মূলে হিন্দু সম্প্রদায়ের রীতিনীতি অনুযায়ী দান করেন বাবা সজল কান্তি দাশ। এতে স্বাক্ষী হিসেবে দেখানো হয়েছে রুবেল কান্তি দাশের আপন চাচা দীলিপ কান্তি দাশ, লামা বাজারের ব্যবসায়ী প্রদীপ কান্তি দাশ ও চন্দন দাশ। এসব সম্পদ বাবদ ছেলে রুবেল দাশের কাছ থেকে বাবা সজল কান্তি দাশ নগদ ৭০ লাখ টাকাও নেন। তবে সব সম্পত্তি ছেলে রুবেল দাশকে দানের বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি বড় বোন বিউটি চৌধুরীর স্বামী সাগর চৌধুরী। সম্পত্তির ভাগ নিতে তিনি বিভিন্ন সময় শশুর সজল কান্তি দাশকে কুপরামর্শ দিয়ে আসছেন ও নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেন। এক পর্যায়ে এদের কু-পরামর্শে সজল কান্তি দাশ দানকৃত সম্পত্তি ছেলে রুবেল দাশকে দিবেনা বলে জবাব দেন। সম্পত্তি না দিলে পাওনা ৭০ লাখ টাকা ফেরত চাইলে বাবা সজল কান্তি দাশের সাথে ছেলে রুবেল কান্তি দাশের কথাকাটাকাটি হয়। এদিকে সম্প্রতি সাগর চৌধুরী তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে শশুর কর্তৃক ছেলেকে দানকৃত সম্পত্তি বিক্রি করা হবে বলে নিজের মোবাইল নম্বর নং ০১৯৪০১৬৭০২৯ সংযুক্ত করে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে প্রচার করেন। এ নিয়ে আবারো বিরোধ সৃষ্টি হলে গত ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় সাগর চৌধুরীসহ অজ্ঞাত আরো এক ব্যক্তি লামা বাজারস্থ বসতঘরে ঢুকে রুবেল কান্তি দাশকে না পেয়ে স্ত্রী শিমু দাশকে অতর্কিতভাবে মারধর করে পালিয়ে যায় সাগর চৌধুরী।
পরে খবর পেয়ে রুবেল কান্তি দাশ হামলায় আহত স্ত্রী শিমু আইচকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেন। পরে ৭ এপ্রিল শিমু আইচের গর্ভের সন্তান মারা যায় বলে একটি প্রতিবেদন দেন কক্সবাজার সদর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক নাহিদ সুলতানা।