সংবাদ প্রকাশের পর শীতবস্ত্র নিয়ে শীতার্তদের বাড়িতে মানিকছড়ির ইউএনও
আবদুল মান্নান: ১৩ জানুয়ারী সন্ধ্যার পর শীতের তীব্রতা দেখে শীতার্তদের ঘরে ঘরে শীতবস্ত্র নিয়ে হাজির হলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ। অসহায়, হত-দরিদ্র জনগোষ্টি প্রশাসনের এমন মহতি উদ্যোগ দেখে জনপদে প্রশংসায় মূখরিত হয়েছে। স্বস্তিবোধ করেছেন শীতার্তরা।
পাহাড়ে মাস খানেক ধরে শীতের তীব্রতা চলছিল। গত দু’দিনের শৈত্য প্রবাহে এখানকার হত-দরিদ্ররা চরম বেকাদায় পড়েছে। বিশেষ করে চা শ্রমিক, ডে লেবার ও কৃষকরা শীতের তীব্রতা সামাল দিতে গিয়ে বেসামাল হয়ে পড়েছে। উপজেলার চারটি ইউনিয়নের তৃণমূলে বসবাসরত হত-দরিদ্র জনগোষ্টি অভাব অনটনে দিনযাপন করায় গরম কাপড়-ছোপড় তাদের ঘরে নেই বললেই চলে। শীতকালে স্বাভাভিকভাবে তারা ঘরে আগুন জ্বালিয়ে গরমের পরশ নেওয়ার চেষ্টা করে। এবার শীতের শুরুতেই যেন শীতের তীব্রতা একটু বেশি। তাই পাহাড়ের অন্যান্য স্থানের ন্যায় খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার জনপদে শীতের প্রভাব পড়েছে। হত-দরিদ্ররা বাজারের গরম কাপড় সংগ্রহে ভীড় জমাচ্ছে। উপজেলার ৭০-৭৫ হাজার জনগণের সিংহভাগই গরীব। এছাড়া এ জনপদে বৃত্তবান ব্যক্তিবর্গ তেমন না থাকায় সকল হত-দরিদ্র পরিবার প্রতি বছর সরকারী কম্বল বিতরণ সম্ভব হয়ে উঠেনা। ১২ ও ১৩ জানুয়ারী দু’দিন সূর্যের দেখা মেলেনি। স্কুল-কলেজে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিও কম। রাস্তাঘাটে জনসমাগম তেমন নেই। বাজারের গরম কাপড় বিক্রির দোকানে দোকানে গরম কাপড় কিনতে ভীড় করছে হত-দরিদ্ররা।
যদিও এবার সরকারীভাবে প্রতিটি ইউনিয়নে চারশত ৬০পিস হারে কম্বল জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সরজমিনে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া যোগ্যাছোলায় একটি স্বেচ্ছাসেবী ক্লাব, মানিকছড়ির একতা সংঘ এবং স্বপ্ন ও আগামী নামের একটি সংগঠন থেকে উপজেলার শীতার্ত জনগোষ্টির মাঝে কিছু কম্বল বিতরণ করেছে। সব মিলিয়ে দুই সহ¯্রাধিক ব্যক্তি বা পরিবার উপকৃত হলেও সিংহভাগ দরিদ্র জনগোষ্টি শৈত্য প্রবাহের কবলে দিনাতিপাত করছে। এ নিয়ে পাহাড়ের আলোসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসায় ১৩ জানুয়ারী সন্ধ্যার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ জনপ্রতিনিধির ভূমিকায় দুঃস্থ ও অসহায়-দরিদ্র জনগোষ্টির দৌড় গোড়ায়(ঘরে ঘরে) গিয়ে স্বচোখে শীতার্তদের কষ্ট প্রত্যক্ষ করেন এবং নিজ হাতে বয়োঃবৃদ্ধ ও দরিদ্রদের গায়ে গরমের পরশ জড়িয়ে দেন। উপজেলার তিনটহরীর দূর্গম জনপদে রাতের বেলা প্রশাসনের মানবিকতা দেখে শীতার্ত ও সচেতন মহল প্রশংসা করেছেন। জনপ্রতিনিধির ভূমিকায় প্রশাসককে পেয়ে গ্রাম-গঞ্জের সাধারণ নারী ও শিশুরা সত্যিই যেন গরমের পরশ পেয়েছেন। স্বস্তিবোধ করেছেন শীতার্তরা।