• November 13, 2024

৮দিনের টানা বর্ষণে বন্যায় ডুবে আছে রাঙ্গুনিয়ার গুমাই বিল

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি: গত ৮দিনের টানা বর্ষন ও পাহাড়ী ঢলে রাঙ্গুনিয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় ডুবে আছে শষ্যভান্ডার খ্যাত গুমাইবিল। বিভিন্ন ইউনিয়নে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রবল স্রোতের কারণে রাঙ্গুনিয়া জুড়ে নতুন নতুন এলাকায় তীব্র নদীভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। কর্ণফুলী নদীর পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গতকাল সকাল থেকে ফেরী চলাচল বন্ধ থাকায় বান্দরবান-চন্দ্রঘোনা-রাজস্থলী-রাঙ্গামাটি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

এছাড়াও উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পানির নীচে ডুবে থাকায় সাধারণ মানুষদের চলাচলে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ নেমে এসেছে।  ঊৃহত্তম গুমাইবিল সহ একাধিক বিলের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এ মৌসুমে কৃষকরা নতুন করে চলতি মৌসুমে ধানের চাষ করতে পারবে কি না তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।

কৃষকরা জানান, উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। টানা ৮ দিন ধরে উপজেলার বিস্তীর্ণ সবজি ক্ষেত পানির নিচে ডুবে থাকায় কয়েক হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ইতিমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে কৃষকদের উৎপাদিত ঢেঁঢ়শ, বরবটি, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙা, চিচিংগা, শসা, বেগুন, মুলাসহ বিভিন্ন বর্ষাকালীন সবজির ক্ষেত। এছাড়াও ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি মাছের ঘের ও প্রকল্পর লাখ লাখ টাকার মাছ ভেসে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

টানা বর্ষণে রাজারহাট ও পদুয়ায় শতশত স্কুল ও ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। পাহাড়ি ঢলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক এলাকার শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে পারছে না। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। শস্য ভান্ডার গুমাই বিল, পদুয়া বিল, রইস্যা বিল, তালুকদার বিল, নিশ্চিন্তাপুর বিল, তৈলা ভাঙ্গা বিল, শিলক, সরফভাটা, বেতাগীসহ অধিকাংশ নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা বন্যার পানিতে ডুবে আছে। উপজেলার পদুয়ার হরিহর, পৌরসভার ইছামতি, ব্রক্ষোত্তর, দক্ষিণ পোমরা, কানুরখীল, কুলকুরমাই, পারুয়া বসাক পাড়া, বগাবিল, জয় নগর, দুধ পুকুরিয়া, ফলহারিয়া, বেতাগী, কোদালা, ইছামতি, ঘাটচেক, ঘাগড়া, নিশ্চিন্তাপুর এলাকার প্রায় সহস্রাাধিক বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে।

স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া গ্রামের রাসেল ও চন্দ্রঘোনার মিজানুর রহমান বলেন, উপজেলার অধিকাংশ গ্রামীণ সড়কগুলোও ডুবে আছে পানির নিচে। ফলে সাধারণ মানুষকে চলাচলে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। গুরুত্বপূর্ণ চৌমুহনী-গাবতল সড়কে ডুবো ডুবো অবস্থায় রয়েছে। মরিয়মনগর ডিসি সড়ক ডুবে গেলে উত্তর রাঙ্গুনিয়ার ৭টি ইউনিয়নের লক্ষলক্ষ মানুষের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। কাপ্তাই হ্রদ থেকে লেকের পানি ছাড়া হলে রাঙ্গুনিয়ায় দীর্ঘমেয়াদী বন্যার আশংকা রয়েছে। প্রবল টানা বর্ষণে রাঙ্গুনিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়কে মাটি ধ্বসে পড়লেও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমানের সার্বিক প্রচেষ্ঠায় তা দ্রুত সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে যাচ্ছেন এবং পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছেন।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post