অবশেষে শিশু ধর্ষক শ্যাম প্রসাদ গ্রেফতার, এখনো ধরা ছোঁয়ার বাহিরে ময়না
শাহ আলম রানা, গুইমারা: গুইমারার বহুল আলোচিত মায়ের পরকিয়া প্রেমিক কর্তৃক শিশু কন্যাকে ধর্ষণ ও মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ মামলার মুল আসামী শ্যাম প্রসাদ বণিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রযুক্তির সহায়তায় বুধবার (বৃহস্পতিবার) গভীর রাতে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার কাটিরহাট এলাকায় গুইমারা থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে আসামীকে গ্রেফতারের কথা নিশ্চিত করেন গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান। তবে এজঘন্য ঘটনায় এখনও ধরা ছোঁয়ার বাহিরে নিজ শিশু কন্যা ধর্ষণের প্রধান সহযোগী মা শাহেদা আক্তার ময়না। এ মামলায় নিজ শিশু কন্যাকে ধর্ষণে সহযোগীতা করায় ভিকটিমের মা সাহেদা আকতার ময়নাকেও অন্তভুক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবী করেন বাদী জাহাঙ্গীর আলম।
গুইমারা থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, রামগড় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ মোঃ ফরহাদের নির্দেশনায় প্রযুক্তি ব্যবহার করে গুইমারা থানার ওসি’র সার্বিক সহযোগীতায় তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) এস.আই আল আমিনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয় হাটহাজারীর কাটিরহাট থেকে তাকে গ্রেফতার করে। আলোচিত এধর্ষণ মামলার আসামী শ্যাম প্রসাদ বণিক প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর আলম বিদেশ থাকার সুবাদে তার স্ত্রীকে প্রলোভন দেখিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে তা জানাজানি হয়ে গেলে সে ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে নিজের মেয়েকে প্রেমিক শ্যাম প্রসাদ বণিককে ধর্ষণের সহায়তা করার অভিযোগ করে ভুক্তভোগীর পিতা।
পরে গত ২৬ জুলাই শ্যাম প্রসাদ বণিককের বিচার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেন জাহাঙ্গীর আলম। সংবাদটি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারের পর আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠে। একদিন পর গুইমারা থানায় লিখিত অভিযোগ তদন্তের পর নিয়মিত মামলায় রুপ নেয়। সে মামলায় বুধবার শ্যাম প্রসাদ বণিককে হাটহাজারী উপজেলার কাটিরহাট থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। তার বিরুদ্ধে ৯(১)২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়। যার গুইমারা থানার মামলা নং-০১ তারিখ ২৭জুলাই। জি.আর ২৪৭/২০২০।
আলোচিত ধর্ষণ মামলার আসামী ও গুইমারা ডাক্তারটিলা এলাকার গুইমারা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা উচাইরী মারমা হত্যাকান্ডের সন্দেহভাজন হোতা শ্যাম প্রসাদ বণিককে গ্রেফতারে স্বস্তি প্রকাশ করেছে গুইমারাবাসী। সে সাথে এসব ঘৃণ্য অপরাধের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী করেন তারা। এছাড়াও স্থানীয়রা জনায়, শ্যাম প্রসাদ বণিক গুইমারা খাদ্যগুদাম ও ডাক্তার টিলা সংলগ্ন এলাকায় সড়ক ও জনপদের জায়গা দখল করে গড়ে তোলা রাস্তার পাশের নির্মাণ করা পাকা বাড়ীতে নিয়ে ধর্ষণসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকতো। সে সাথে তার ডাক্তারটিলার এলাকায় ছিল তার অপকর্মের আস্তানা।
সুষ্ঠ তদন্ত করা হলে শ্যাম প্রসাদের “মাদক সেবন থেকে শুরু করে নারী ধর্ষণসহ তার সীমাহীন অপকর্মের তথ্য বের হয়ে আসবে বলে অভিমত স্থানীয়দের। শ্যাম প্রসাদকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আরো তথ্য বেরিয়ে আসলে বলে এলাকাবাসীর ধারনা। এ ধরনের ঘৃণ্য অপরাধের ন্যায় বিচার না হলে সামাজিক অবক্ষয় ও অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধিসহ অপরাধীরা উৎসাহিত হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আল-আমিন জানান, আটক শ্যাম প্রসাদ বণিককে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত ও আইনী প্রক্রিয়ায় বিচারিক আদালত তার শাস্তি নিশ্চিত করবেন।