আজ মহান বিজয় দিবস
পাহাড়ের আলো: আজ ১৬ ডিসেম্বর, বিজয় দিবস। আজকের এই দিনে বিশ্বের বুকে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীনতা আসে। জাতির একদল সাহসী নাগরিক অগ্রভাগে থেকে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিয়ে বিজয় নিশ্চিত করেছেন। তাদের সাহস ও শক্তি জুগিয়েছেন দেশের মুক্তিকামী প্রায় সাত কোটি মানুষ। বিপুলসংখ্যক মানুষের আত্মবলিদানের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ হতে আর দুই বছর বাকি।
প্রায় ৫ দশকে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক খাতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। উন্নয়নের কিছু কিছু সূচক বৈশ্বিক প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে বৈষম্য হ্রাস করে একটি সাম্যভিত্তিক রাষ্ট্র অর্জনের ক্ষেত্রে আমরা এখনো পিছিয়ে রয়েছি। গ্রাম ও শহরের জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশে বড় বড় শহর গড়ে উঠেছে। এগুলোতে চোখ ধাঁধানো উঁচু উঁচু ভবনের সমাহার। বিশেষ করে ঢাকার কথা উল্লেখ করতে হয়; এটি এখন দুই কোটির বেশি মানুষের বসবাসের শহর। চোখ ধাঁধানো উন্নয়ন চমকে যাওয়ার মতো। অন্যান্য শহরেও এমন উন্নয়নের ব্যাপক উপাদান দেখা যাবে। গ্রামেও এর ছোঁয়া লেগেছে। বদলে গেছে গ্রামের পরিবেশ। এমন চাকচিক্য দেখে মনে হতে পারে, বাংলাদেশ একটি ধনী দেশ না হোক মধ্যম মানের দেশে পরিণত হয়েছে।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের প্রথম বাজেট ছিল ৭৮৬ কোটি টাকার। এর বিপরীতে আমরা যদি সাম্প্রতিক বছরগুলোর জাতীয় বাজেট দেখি আশ্চর্য না হয়ে পারা যাবে না। ২০১৮-১৯ সালে সংসদে চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট পাস হয়। ২০১৯-২০ সালের চলতি বাজেট পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার। টাকার অঙ্কে আমাদের আর্থসামাজিক চিত্রই বলে দেয়, এ দেশে উন্নয়নের বিপুল জোয়ার বয়ে গেছে।
স্বাধীনতাকামী মানুষ একটি চেতনা নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আজ সেই চেতনাকে স্মরণের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা দেখেছি, প্রায় একই সময় পাড়ি দিয়ে অনেক দেশই উন্নতির শিখরে পৌঁছে যেতে পেরেছে। তারা নির্মাণ করতে পেরেছে একটি বিকশিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। এশিয়ায় এমন অনেক দেশ রয়েছে। সমৃদ্ধ একটি দেশ প্রতিষ্ঠা আমাদের পক্ষেও সম্ভব। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে তা করা যেতে পারে। সে জন্য দরকার জাতীয় ঐকমত্য। বিভেদের সব দেয়াল ভেঙ্গে দিয়ে তৈরি করতে হবে সাম্য।