• April 13, 2025

ইউএনওর সহায়তায় বৈশাখের রং ছড়াবে মানিকছড়ির সাঁওতাল পাড়ায়

 ইউএনওর সহায়তায় বৈশাখের রং ছড়াবে মানিকছড়ির সাঁওতাল পাড়ায়

মো. রবিউল হোসেন, মানিকছড়ি:-

পহেলা এপ্রিল থেকে উৎসবে মেতেছে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রতিটি পাড়া মহল্লা। বাংলা নববর্ষ বরণ ও বৈসাবি উৎসবকে ঘিরে পাহাড়ে চলছে এই আমেজ। তবে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বৈশাখে রং ছড়াবে না খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার দূর্গম দাইজ্জাপাড়ার অদূরে সাঁওতাল পাড়ায়। ‘নতুন বছরকে ঘিরে নতুন পোশাক, উৎসব-অনুষ্ঠান, মঙ্গল শোভাযাত্রা, বৈশাখী মেলা কিংবা বিশেষ কোন আয়োজন কিছুই ছুঁতে পারেননা ৮ পরিবারের এই অর্ধশতাধিক সাঁওতাল দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে’। -এমন সংবাদে শুক্রবার সকালে কয়েক কিলোমিটার পাহাড়ি উঁচু নিচু কাঁচা পথ মাড়িয়ে বৈশাখের রং ছড়াতে সাঁওতাল পল্লীতে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আফরোজ ভুঁইয়া।

স্থানীয়দের নিয়ে সাঁওতাল পাড়া পরিদর্শন করে সেখানকার ৮ পরিবারের মাঝে বৈশাখের উপহার হিসেবে নগদ অর্থ সহায়তা দেন। স্বাধীনতার পর এই প্রথম কোন উৎসব উপলক্ষে আর্থিক সহায়তা পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন সাঁওতালরা।

এসময় সাঁওতাল নেতা নেতা ভূট্টো সাঁওতাল বলেন, ‘কোন সামাজিক বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে স্ত্রী-সন্তানদের ভালো পোষাক কিংনা ভালো খাবার দিতে পারিনা। এবার পহেলা বৈশাখের আগে আর্থিক সহযোগিতা পেয়ে আমরা পাড়াবাসী খুশি। আমরা পাড়ায় অনুষ্ঠান করে সকলে মিলে খাবারের আয়োজন করবো’।

উপকারভোগী পূজা সাঁওতাল জানান, ‘পহেলা বৈশাখে এবার ছেলে-মেয়েদের নতুন পোষাক কিনে দিতে পারবো’। এসময় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

এসময় ইউএনও তাহমিনা আফরোজ ভুঁইয়া বলেন, ‘এখানকার সাঁওতালদের জীবনমান উন্নয়নে সহযোগিতা করছে উপজেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে সকল পরিবারের মাঝে সরকারি সহযোগিতায় ঘর নির্মাণ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বাঙ্গালীর অন্যতম উৎসব পহেলা বৈশাখ ও পাহাড়ের বৈসাবী আনন্দ যাতে পরিবার পরিজন নিয়ে করতে পারে সে লক্ষে প্রতিটি পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে’।

সাঁওতাল নেতা ভূট্টো সাঁওতাল জানান, তার প্রয়াত পিতা নকুন্দ সাঁওতাল ১৯৫০ সালের আগে কোনো এক সময় স্ত্রী ও প্রথম সন্তান গণেশ সাঁওতাল ও ভাইদের নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের পশ্চাৎপদ জনপদ মানিকছড়ির দাইজ্জাপাড়ার নির্জনে বসতি গড়েন। আজ এ জনপদে বসতি রয়েছে ৮ পরিবারে শিশু, কিশোর ও বয়োবৃদ্ধ ৪৫-৫০ জন সাঁওতাল জনগোষ্ঠী। কালের আবর্তে আধুনিকতার ছোঁয়ায় দেশ ও দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও পরিবর্তন হলেও সব সুবিধা থেকে ৫০ বছরেরও বেশি সময় বঞ্চিত ছিল এখানকার সাঁওতালরা।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post

Leave a Reply