করোনায় দেশে আরও ১০ জনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৩৪১
ঢাকা অফিস: মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ জনে। আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৩৪১ জন। এতে দেশে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৭২ জনে।
বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, করোনা শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ১৩৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে দুই হাজার ১৯টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৬ হাজার ৮৮৭টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৩৪১ জন। ফলে দেশে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৭২ জনে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ১০ জন। এতে মৃতের সংখ্যা হয়েছে ৬০।
যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে সাতজন পুরুষ ও তিনজন নারী। এদের মধ্যে ঢাকায় সাতজন ও ঢাকার বাইরে তিনজনের মৃত্যু হয়। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী একজন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী তিনজন, ষাটোর্ধ্ব পাঁচজন এবং সত্তরোর্ধ্ব একজন রয়েছেন।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৭ জনকে আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে। এ নিয়ে এখন ৪৬১ জন আইসোলেশনে আছেন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৯ জন।
গত ২৪ ঘণ্টা হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে চার হাজার ৪৯৯ জনকে। এখন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৯৯ হাজার ২০৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ৭১৫ জনকে। এখন মোট তিন হাজার ৮৭৫ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে পাঁচ হাজার ২১৪ জনকে। আর এখন পর্যন্ত মোট এক লাখ তিন হাজার ৭৯ জনকে নেয়া হয়েছে কোয়ারেন্টাইনে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেয়েছেন নয় হাজার ২৫ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬৬ হাজার ৭০৫ জন।
ডা. নাসিমা সুলতানা আরও জানান, সারাদেশে মোট আইসোলেশন বেড রয়েছে ছয় হাজার ৯৭৭টি। তন্মধ্যে রাজধানী ঢাকায় এক হাজার ৫৫০টি ও ঢাকার বাইরে পাঁচ হাজার ৪২৭টি রয়েছে। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ১৯২টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিটের সংখ্যা ৪০টি। সারাদেশে ৬৪ জেলায় কোয়ারেন্টাইনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৪৮৮টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে কোয়ারেন্টাইন করা যাবে ২৬ হাজার ৩৫২ জনকে।
বুলেটিন উপস্থাপনকালে করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে বৈশ্বিক মহামারিতে পরিণত হয়েছে করোনাভাইরাস। চীন পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিয়ে উঠলেও এখন ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২১ লাখ। মৃতের সংখ্যা এক লাখ ৩৪ হাজারেরও বেশি। তবে পাঁচ লাখ ১৬ হাজারের মতো রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও গত ক’দিনে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। সবশেষ হিসাবে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ৫৭২। মারা গেছেন ৬০ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৯ জন।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি নানা সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে; যার মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, র্যাব ও পুলিশ।