‘করোনা’ দুর্যোগে মানিকছড়ি’র যুব রেড ক্রিসেন্ট’র কার্যক্রম
আবদুল মান্নান, মানিকছড়ি: বৈশ্বিক মহামারী‘করোনা’ মোকাবিলায় সরকারী বিধি-নিষেধে অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ-মাদরাসা, হাট-বাজারে জনচলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। গৃহবন্দি মানুষ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণে সকলে যার যার অবস্থানে কঠিন সময় পার করছে। তবে সকলের মনে বিরাজ করছে অজানা আতংক। আর এমন কঠিন দূর্যোগকালে আর্ত মানবতার সেবায় অবিরাস ছুঁটে চলেছেন মানিকছড়ি’র যুব রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের একঝাঁক উদীয়মান স্বেচ্ছাসেবক কর্মী। নিজেদের সম্পূর্ণ অরক্ষিত রেখে প্রতিদিন রাস্তা-ঘাটে, চেকপোস্টে আগত জনগোষ্টি ও পরিবহনে জীবন-নাশক স্প্রে ছিটানো, সাধ্যমত কোমল পানি ও শুকনো খাবার বিতরণে আর্ত-মানবতার সেবায় নিঃস্বার্থভাবে কাজ করছেন সংগঠনের প্রশিক্ষিত কর্মী বাহিনী।
বিশ্বে আর্ত মানবতার অগ্রদূত হেনরি ডুনান্ট এর হাতেগড়া প্রতিষ্ঠান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি’র ‘যুব রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট’,মানিকছড়ি’র একঝাঁক উদীয়মান প্রশিক্ষিত তরুণ স্বেচ্ছাসেবক। বৈশ্বিক মহামারী‘করোনা’র প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে প্রশাসনের পাশাপাশি আর্ত মানবতার সেবায় মাঠে অবিরাম ছুঁটে চলেছেন নিঃস্বার্থভাবে। দেশ তথা বিশ্বের এই সংকটকালে সরকারের নির্দেশে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিরা দায়িত্বের পাশাপাশি জনসেবায় কাজ করছেন ঠিকই। কিন্তু কারো নির্দেশনা কিংবা কোন উদ্দেশ্য ছাড়া কেবলমাত্র ‘আর্ত মানবতার’ কল্যাণে নিঃস্বার্থভাবে প্রায় একমাস ব্যাপি মানিকছড়ি উপজেলার সর্বত্র মাঠে-ঘাটে,জনচলাচলে, গণ-পরিবহনে নিজেদেরকে অরক্ষিত রেখে জীবন-নাশক স্প্রে ছিটানো, নিজস্ব অর্থায়নে সাধ্যমত অসহায় পথচারীদের কোমল পানি ও শুকনো খাবার বিতরণ, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় সহযোগিতাসহ মাসব কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করছেন যুব রেড ক্রিসেন্ট,মানিকছড়ি ইউনিট।
গেল মার্চ মাসের ২৬ তারিখে সরকারের ঘোষিত এবং অঘোষিত নির্দেশনায় দেশব্যাপি চলছে ‘লকডাউন’। শুরু থেকেই জনপদ পরিস্কার-পরিছন্ন রাখতে হাটে-বাজারে,অফিস-আদালত চত্বওে স্প্রে ছিটানো,রাস্তায় গণ-পরিবহন ও জনচলাচলে স্প্রে করা, জেলার প্রবেশদ্বার মানিকছড়ি’র নয়াবাজারস্থ চেকপোস্টে আগত হাজারো মানুষের শরীরে ওষধ ছিটানো,অসুস্থ ও ক্ষুধার্ত শিশু-কিশোর ও বয়োঃ বৃদ্ধের হাতে সাধ্যমত কোমল পানি ও শুকনো খাবার তুলে দেওয়াসহ মানবসেবায় নিজেদের উৎসর্গ করে‘আর্ত মানবতার সেবায়’ কোন প্রকাশ পিপিই ছাড়াই অবদান রাখছেন যুব রেড ক্রিসেন্ট’র ১৫/২০জন কর্মীবাহিনী!
এ প্রসঙ্গে মানিকছড়ি উপজেলা যুব রেড ক্রিসেন্ট’র সভাপতি মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, আর্ত মানবতার সেবায় আমরা দেশের এ দূর্যোগে‘করোনা’রে মহামারী প্রতিরোধে জনসেবায় নিজেদেও বিলিয়ে দিয়ে নিঃস্বার্তভাবে কাজ করছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখনো পর্যন্ত কোন কর্মীকে পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুপ্মেন্ট(পিপিই) দিতে পারেনি। এখনো পর্যন্ত কেউ পিপিই দিতে এগিয়েও আসেনি! ফলে জীবনের ঝুঁকি জেনেও কর্মীরা মানবসেবায় অবিরাম কাজ করছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ বলেন, যুব রেড ক্রিসেন্ট কর্মীরা‘করোনা’র প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় নিঃস্বার্থভাবে জনসেবায় নিজেদের বিলিয়ে দিয়ে আবারও প্রমাণ করলেন, আর্ত মানবতার সেবায় রেড ক্রিসেন্ট সর্বেসর্বা। অচিরেই উপজেলা পরিষদ থেকে তাদের মাঝে পিপিই বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন, যুব রেড ক্রিসেন্ট’র কর্মকান্ডের প্রশংসা করে বলেন, পরিষদের অর্থায়ণে কিছু পিপিই সামগী যুব রেড ক্রিসেন্ট এর অল্প সংখ্যক কর্মীদের মাঝে বিতরণ করা হবে।