খাগড়াছড়িতে আবারও ১৪৪ ধারা জারি করলো প্রশাসন: স্কুল শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষ
পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর
স্টাফ রিপোর্টার: খাগড়াছড়িতে আবারও ১৪৪ ধারা জারি করলো প্রশাসন। পরিস্থিতি শান্ত রাখাতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। শিক্ষক পিটিয়ে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবারো অশান্ত হলো পাহাড়। খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই শিক্ষক সোহেল রানাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীরা। বেশ কয়েক বছর আগে সোহেল রানার বিরুদ্ধে এক পাহাড়ি ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা হয়েছিল। ওই ছাত্রী আদালতে এসে সাক্ষ্য দেয় তিনি কোন ধর্ষণের শিকার হননি। পাহাড়ি একটি সংগঠনের চাপে মামলা করেছে মর্মে সাক্ষ্য দিলে সোহেল রানা খালাস পান এবং চাকরিতে যোগদান করেন। সোহেল রানা চাকরিতে যোগদানের পর থেকে পাহাড়ি ছাত্ররা তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির নানা অভিযোগ এনে প্রত্যাহার দাবি করে আসছিল। আজ ওই শিক্ষক বিদ্যালয় এলে ত্রিপুরার এক ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে হত্যা করা হয়।
সূত্র জানায়, পাহাড়িদের প্রতিবাদের মুখে ওই শিক্ষক আজ বিদ্যালয় রিলিজ অর্ডার নিতে এসেছিলেন। কিন্তু তাকে সেই সুযোগ দেয়া হলো না। শিক্ষককে হত্যার প্রতিবাদে পাহাড়ি ও বাঙালি ছাত্রদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুর হয়েছে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন কক্ষ ও আসবাবপত্র। আহত হয়েছেন ১৫-২০ জন। নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি করলেও পুরো শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভোরে চোর সন্দেহে খাগড়াছড়িতে মামুন (৩০) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এরপর অশান্ত হয়ে ওঠে পাহাড়। যার জেরে পরবর্তীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুই জেলায় (খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি) ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। স্কুলের পাহাড়ি ছাত্রদের বিরুদ্ধে একই প্রতিষ্ঠানের ইন্সট্রাক্টর (বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স) ও বিভাগীয় প্রধান শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) রিপল বাপ্পী চাকমা।
এ ঘটনায় দুপুর তিনটা থেকে খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। শহরে এখনো উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই শিক্ষক সোহেল রানাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীরা। বেশ কয়েক বছর আগে সোহেল রানার বিরুদ্ধে এক পাহাড়ি ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা হয়েছিল। ওই ছাত্রী আদালতে এসে সাক্ষ্য দেয় তিনি কোন ধর্ষণের শিকার হননি। পাহাড়ি একটি সংগঠনের চাপে মামলা করেছে মর্মে সাক্ষ্য দিলে সোহেল রানা খালাস পান এবং চাকরিতে যোগদান করেন। সোহেল রানা চাকরিতে যোগদানের পর থেকে পাহাড়ি ছাত্ররা তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির নানা অভিযোগ এনে প্রত্যাহার দাবি করে আসছিল। আজ ওই শিক্ষক বিদ্যালয় এলে ত্রিপুরার এক ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ এনে শিক্ষককে হত্যা করা হয়। সূত্র জানায়, পাহাড়িদের প্রতিবাদের মুখে ওই শিক্ষক আজ বিদ্যালয় রিলিজ অর্ডার নিতে এসেছিলেন। কিন্তু তাকে সেই সুযোগ দেয়া হলো না।
শিক্ষককে হত্যার প্রতিবাদে পাহাড়ি ও বাঙালি ছাত্রদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুর হয়েছে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন কক্ষ ও আসবাবপত্র। আহত হয়েছেন ১৫-২০ জন। নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি করলেও পুরো শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ওই ব্যক্তি মারা গেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে। স্থানীয় বাঙালিরা বলছেন, পাহাড়িদের প্রতিবাদের মুখে ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে রিলিজ অর্ডার নিতে এসেছিলেন। কিন্তু তাকে সেই সুযোগও দেওয়া হয়নি। পরিকল্পিতভাবে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
জেলা বিএনপি সভাপতি ও সাবেক এমপি ওয়াদুদ ভূঁইয়া বলেন, খাগড়াছড়িকে অশান্ত করার জন্য সদ্য বিদায়ী স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের পেছনের সারির কিছু নেতাকর্মী ও সন্ত্রাসীরা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিশৃঙ্খলা শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করে আবার তাদের অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী ধারায় ফিরে যেতে চাইছে।
এর আগে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদরে মো. মামুন নামে এক যুবককে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মামুনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। ১৯ সেপ্টেম্বর দীঘিনালার লারমা স্কয়ারে আগুন দেওয়া হয় দোকানপাটে। সংঘাতে দীঘিনালায় ধনঞ্জয় চাকমা নামের এক ব্যক্তি মারা যান। ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে খাগড়াছড়ি সদরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে রুবেল ত্রিপুরা ও জুনান চাকমা নামের দুজন মারা যান। ২০ সেপ্টেম্বর এ ঘটনার জের ধরে রাঙামাটিতে সংঘর্ষ হয়। সেখানে দোকানপাট ও বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়। অনিক কুমার চাকমা নামের একজন মারা যান। ২০ সেপ্টেম্বর রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। পরিস্থিতি শান্ত হলে পরে তা তুলে নেওয়া হয়।