খাগড়াছড়িতে মাদক মামলায় এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী ১৩ শর্তে বাড়িতে
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: মাদক মামলায় এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী তেরো শর্ত সাপেক্ষে সাজা খাটবেন বাড়িতে এমনি যুগান্তকারী রায় প্রচার করেছেন খাগড়াছড়ি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জি.এম ফারহান ইসতিয়াক। আজ ১৩ দফায় মুছলেকা নিয়ে আসামীকে দুই জিম্মাদারের হাতে দেওয়া হয়।
সৌভাগ্যবান সাজাপ্রাপ্ত আসামী জেলার দিঘীনালা উপজেলার পশ্চিম বেতছড়ি এলাকার মো: ফজলু গাজীর ছেলে মো: ফারুক (৩৪)।
কোর্ট ইন্সপেক্টর জাহাংগীর আলম জানান একটি মাদক মামলায় মো: ফারুককে এক বছরের কারাদন্ড দিলেও জেলে গিয়ে সাজা খাটতে হবেনা। সাজাকালীন সময় আসামী আদালত নিযুক্ত প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে নিজেকে সমর্পন করবে, আসামী তার বাসস্থান এবং জীবিকার উপায় সম্পর্কে প্রবেশন অফিসারকে অবহিত করবে, সৎ ও শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করবে এবং সদোপায়ে জীবিকা অর্জনের জন্য সচেষ্ট থাকবে, আদালত কর্তৃক তলব করা হইলে তদানুসারে হাজির না হলে দন্ড ভোগ করিতে বাধা থাকবে, সময় সময় প্রবেশন অফিসার কর্তৃক প্রদেয় আইনানুগ মৌখিক বা লিখিত উপদেশসমূহ মেনে চলবে, আদালতের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে বাংলাদেশ ত্যাগ করে কোথায় ও যাবে না, দুশ্চরিত্র লোকের সহিত মেলামেশা করবে না, কোন প্রকার লাম্পট্য কাজে লিপ্ত হবে না, নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে, ১০০ টি বিভিন্ন জাতের গাছের চারা রোপণ ও পরিচর্যা করবে, প্রত্যেক মাসে একজন এতিম বাচ্চাকে এক বেলা খাওয়াবে, দেশে প্রচলিত আইনে শাস্তিযোগ্য কোন প্রকার অপরাধ কর্মে লিপ্ত হবে না এবং দেশে প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধশীল থাকবে, স্বেচ্ছায় বা কারও প্ররোচনায় শান্তিভংগের কোন কাজে লিপ্ত হবেনা না অথবা অংশগ্রহণ করবে না এবং উপরোল্লিখিত ১ থেকে ১৩ নং শর্তের কোন শর্ত ভঙ্গ করলে আদালত প্রদত্ত যে কোন শাস্তি ভোগ করতে বাধা থাকবে।
আসামীর দুই আত্মীয় আসাদুল হক ও মো: জুয়েল হোসেন আসামীর মুচলেকায় সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন মর্ম জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
আসামী পক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন জানানা ২০১৯ সালে মাত্র ২৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার দেখিয়ে আসামীর বিরূদ্ধে মামলা হয়েছে। সাক্ষ্য গ্রহন
শেষে আদালত যুগান্তকারী রায় দিয়েছে। আসামীর প্রথম অপরাধ বিবেচনায় আদালত আসামীকে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছেন, যা অত্যান্ত্য প্রশংসনীয়। এই রায় প্রদানের জন্য তিনি আদালতের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
খাগড়াছড়ি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট আশুতোষ চাকমা ও এডভোকেট আকতার উদ্দিন মামুন আদালত প্রদত্ত রায়কে দৃষ্টান্তমূলক উল্লেখ করে বলেন এর ফলে অনেকে সংশোধিত হবার সুযোগ পাবার পাশাপাশি সরকারী কর্মলাভে অসুবিধায় পড়বেনা।