রামগড় প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ির রামগড়ে ঘরের শয়ন কক্ষে মা ও মেয়েকে জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্ত। বুধবার রাতের কোন এক সময় এ জোড়া হত্যার ঘটনা এ সংঘটিত হয়। নিহতরা হচ্ছেন- আমেনা বেগম(১০০) ও তার মেয়ে রাহেনা বেগম(৪২)।
রামগড় পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের পূর্ব বাগানটিলা নামক দূর্ঘম এলাকায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। রামগড় থানার অফিসার ইনর্চাজ মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন জোড়া খুনের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, পূর্ববাগানটিলার পাহাড়ের পাদদেশে মৃত মীর হোসেনের ঘরে তার স্ত্রী আমেনা বেগম ও মেয়ে রাহেনা বেগম থাকতেন। বৃহ:বার সকালে আশেপাশের লোকজন ঐ বাড়িতে কারও কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে ঘরে ঢুকে দেখেন পাশপাশি দুই কক্ষে খাটিয়ার উপর মা ও মেয়ের মরদেহ পড়ে আছে। লোকজন এ অবস্থা দেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
স্থানীয়রা জানায়, সকালে ঘরের দরজা খোলাই ছিল। রাতের কোন এক সময় হত্যাকান্ড ঘটিয়ে খুনি পালিয়ে যায়। মাটির তৈরি ঘরের তিনটি কক্ষের দুটিতে মা ও মেয়ের মরদেহ পড়েছিল খাটের ওপর, মশারীও টানানো ছিল। অপর কক্ষে খাটে মশারী টানানো দেখা গেলেও রাতে সেখানে কে ছিল তা জানাযায়নি। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের জবাই করে হত্যা করা হয়। হত্যাকান্ডের কারণ নিশ্চিত হওয়া না গেলেও এলাকার লোকজন ধারণা করছেন জায়গা-জমির পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ড ঘটে থাকতে পারে। তারা আরও ধারণা করছেন, এ হত্যার সাথে পরিবারের কোন কেউ জড়িত থাকতে পারে। জানাযায়, নিহত আমেনা বেগমের পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ে আছে। ছেলেদের মধ্যে দুই ছেলে পাকিস্তান প্রবাসী। অপর তিনজনের মধ্যে একজন রামগড়ে এবং অন্য দুইজন বারৈয়ারহাট ও ছাগলনাইয়ায় থাকে। দুই মেয়ের মধ্যে স্বামী ওমান প্রবাসী স্ত্রী নিহত রাহেনা বেগম তার মায়ের সাথে থাকতেন।
একমাত্র ছেলে ঢাকায় থাকে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশি বলেন, পৈতৃক জায়গা জমি নিয়ে দেশে থাকা ছেলেদের সাথে মায়ের দ্বন্দ্ব বিরোধ চলছে অনেকদিন ধরে। এনিয়ে গ্রাম্য সালিসও হয় একাধিকবার। মা মেয়ের জোড়া খুন এ বিরোধের জের হতে পারে। এদিকে, মা মেয়ের হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে বৃহ:বার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী শামীম , রামগড় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়ইন ও থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন পুলিশের একটি দলসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে যান। ওসি জানান, মা ও মেয়ের লাশ উদ্ধারের প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, সিআইডির একটি টিমও ঘটনাস্থলে আসছে। লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারে পুলিশের তৎপরতা শুরু হয়েছে।