খাগড়াছড়িতে নিহত ৪জনের দাফন সম্পন্ন: তদন্ত কমিটি গঠন, মামলা হয়নি এখনো
স্টাফ রিপোর্টার: ব্যক্তি মালিকানাধীন গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গুলিতে একই পরিবারের ৪ জনসহ পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় এলাকায় এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বুধবার সকালে নিহতদের পরিবারের হাতে লাশ হস্তান্তরের পর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার বটতলী মাঠে নিহতদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে হাজারো মানুষ অংশ নেন। এ সময় মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিভীষন কান্তি দাশ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল আলম, পৌরমেয়র মো. শামছুল হক ও মাটিরাঙ্গার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামছুদ্দিন ভূঁইয়া বক্তব্য রাখেন।
স্থানীয়রা জানায়, নিহতদের মধ্যে মুছা মিয়া(৫৫) ও তার দুই ছেলে আহমদ আলী(২৫), আলী আকবরকে(২৭) স্থানীয় ইসলামপুর কবরস্থানে এবং মফিজ মিয়াকে বটশলী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। বিজিবি সূত্র জানায়, সকাল ১১টায় বরগুনার বেতাগী থানার হোসনাবাদী ইউনিয়নের দক্ষিণ বাসন্ডা গ্রামে নিজ বাড়িতে বিজিবি সদস্য মো. শাওন খানের জানাজা শেষে পারিবারিকভাবে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে জানাজায় বক্তব্য দেওয়ার সময় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত প্রশাসনকে এ ঘটনায় গ্রামবাসীকে কোনো ধরনের হয়রানি না করার দাবি জানিয়ে বলেন, গ্রামবাসীরা বিজিবির উপর হামলা করেনি। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজিবি হাবিলদার ইসহাক গ্রামবাসীর উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এমন কি সহকর্মী বিজিবি সদস্যকেও গুলি করতে দ্বিধা করেননি।
ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসকের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা রয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, তিনি সহকর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলবেন। কী কারণে এবং কার গাফিলতিতে এই ঘটনা ঘটেছে তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে বলেও তিনি আশাবাদী। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম সালাহউদ্দিন ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বা তার প্রতিনিধি।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (৩ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে মাটিরাঙ্গার গাজী নগর এলাকায় স্থানীয় চাঁন মিয়ার জায়গা থেকে কয়েকটি গাছ কেটে তা ট্রলিতে করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের ৪০ বিজিবির সদস্যরা বাঁধা দেয়। এ সময় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হলে বিজিবি সদস্যরা গুলি ছোড়েন। এতে প্রাণ হারান আহমদ আলী, আলী আকবর তাদের বাবা মুছা মিয়া, মফিজ মিয়া (৬০) ও বিজিবি সদস্য শাওন। এ সময় হানিফ নামে একজন গুলিবিদ্ধ হন। তিনি এখন চট্টগ্রামে মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এছাড়া স্বামী ও দুই সন্তানের মৃত্যুর খবর শুনে নিজের বাড়ি আলুটিলা বটতলীর বাড়িতে সাহাব মিয়ার স্ত্রী নঞ্জু বেগম (৬০) হৃদযন্ত্রের ক্রিড়া বন্ধ হয়ে মারা যায়। এদিকে ওই ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন মাটিরাঙ্গা থানার ওসি মো. শামছূদ্দিন ভূঁইয়া।