খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলো ভ্রমণ পিয়াসীদের উপচে পরা ভীড়, মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি
স্টাফ রিপোর্টার: কোভিড-১৯। বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ ৫ মাস বন্ধ থাকার আবারো খুলে দেয়া হয়েছে খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলো। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গত ২৮ আগস্ট (শুক্রবার) থেকে পর্যটকদের জন্য সীমিত আকারে খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে উপচে পরা ভীড় জমতে শুরু করেছে বিনোদন প্রেমীদের। তবে অনেকেই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি।
সূত্র জানায়, করোনা ভাইরাস এর সংক্রমণ প্রতিরোধকল্পে গঠিত জেলা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ২৮ আগস্ট (শুক্রবার) থেকে খাগড়াছড়ি জেলার সকল পর্যটন কেন্দ্রসমূহ পর্যটকদের জন্য শর্তসাপেক্ষে উন্মুক্ত ঘোষণা দেয়া হয়েছে। পর্যটন কেন্দ্রগুলো হচ্ছে, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ পার্ক, আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র, রিছাং ঝর্ণা ও মায়াবিনী লেক।
পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ায় ঢাকা থেকে পরিবারসহ মোঃ ফারহান খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরতে এসেছেন। তিনি বলেন, করোনায় পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে কোথাও ঘুরতে বের হতে পারিনি। ফলে আমাদের এক প্রকার অলসতা পেয়ে বসেছিল। খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়ায় আমরা পরিবারসহ ঘুরতে এসেছি। ইতোমধ্যে আমরা রিছাং ঝর্ণা, আলুটিলা ও জেলা পরিষদ পার্ক ঘুরে এসেছি। খাগড়াছড়ির প্রকৃতি আমাদের খুব ভালো লেগেছে।
সাতক্ষীরা থেকে এসেছেন বিবেকানন্দ দাশ। তিনি বলেন, আমার দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্ন ছিল আমি খাগড়াছড়ির পাহাড়-পর্বত ঘুরে বেড়াবো। কিন্তু করোনায় নিষেধাজ্ঞার জন্য সেটা হয়ে উঠেনি। এবার পর্যটন কেন্দ্রগুলো খোলায় সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হল। আমরা ৭ জন খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরতে এসেছি। এসময় অনেককেই দেখা গেছে মুখে মাস্ক নেই। সাংবাদিকের ক্যামরা দেখে মাস্ক লাগাতে দেখা গেছে অনেককেই। ঝর্ণায় গোসল তরতে গিয়ে মাস্ক খুলতে হয়েছে, এমনটাই জানালেন অনেকে। স্বাস্থ্য বিধি মেনেই তারা ঘোরাঘুরি করছেন বলে দাবি করলেন ভ্রমণ প্রিয়াসীরা।
আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের টিকেট বিক্রেতা কোকোনাথ ত্রিপুরা বলেন, পর্যটন কেন্দ্রগুলো খোলে দেওয়ায় মানুষের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। আমাদের এখানে প্রতিদিন শতশত পর্যটক আসছে। তাদের প্রত্যেককেই করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে শর্ত সাপেক্ষে পর্যটন কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছ। এসময় অনেককে মুখে মাস্ক পরতে দেখা যায়নি এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
সীমিত পরিসরে খুলে দেয়া পর্যটন কেন্দ্র সমূহে আগত পর্যটকগণকে বিভিন্ন শর্তজুড়ে দেওয়া হয়। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, মাস্ক ব্যতিত পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। পর্যটন কেন্দ্র সমূহের প্রবেশ মুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার/সাবান দিয়ে পর্যটকগণের হাত জীবাণুমুক্ত করতে হবে। শারিরীকভাবে অসুস্থ অবস্থায় পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমণ করা যাবে না ইত্যাদি।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, করোনা ভাইরাস একটি বৈশিষ্ট হুমকি। করোনা যেহেতু পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হচ্ছে না তাই নিজেকে নিজের সুরক্ষা করে এ ভাইরাসের সাথে টিকে থাকতে হবে। দেশের অন্যান্য জেলাতে ইতোমধ্যে পর্যটন কেন্দ্রগুলো খোলে দেওয়া হয়েছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে গত ২৮ আগস্ট থেকে এ জেলার পর্যটনকেন্দ্র গুলোও সীমিত পরিসরে খোলে দেওয়া হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি কঠোর নজরদারিতে থাকবে।