ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতের দাবিতে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসককে বিএনপির স্মারকলিপি
স্টাফ রিপোর্টার: ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতের দাবিতে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি। ২১ মে মঙ্গলবার জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দরা এ স্মারকলিপি প্রদান করেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়- বোরো ধানের দাম নিয়ে কৃষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। উৎপাদিত ধানের মূল্য উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেকগুন কম হওয়ায় কৃষকরা হাহাকার করছে। উৎপাদন খরচ থেকে তিনশত টাকা কমে প্রতি মন ধান বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। প্রতি বিঘা জমিতে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে দুই হাজার টাকা। ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় টাঙ্গাইল, জয়পুরহাট ও নেত্রকোনা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা পাকা ধানক্ষেতে আগুন দিচ্ছে, পাকা ধানে মই দিচ্ছে, সড়কে ধান ছিটিয়ে প্রতিবাদ করছে। সরকার প্রতি মন ধান কেনার জন্য ১ হাজার ৪০ টাকা প্রদান করলেও কৃষকের হাতে যাচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। বাকী টাকা যাচ্ছে সরকারের আনুকূল্য পাওয়া মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে। এ নিয়ে সরকারের কোন মাথা ব্যাথা নেই। ধানের দাম কমার জন্য উদ্ভুত সংকটে সরকার উদাসীন। এ বিষয়ে তাদের কোন দায় নেই বলে কৃষি মন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। সরকারের গণবিরোধী নীতির কারনেই কৃষকরা উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ কৃষকরাই বাংলাদেশের আত্মা ও দেশের প্রাণ। কৃষকদের রক্ষা করতে না পারলে দেশে দুর্যোগ নেমে আসবে। তারা উৎপাদন বন্ধ করে দিলে দেশে দুর্ভিক্ষ নেমে আসবে। ১৭ কোটি মানুষ না খেয়ে মরবে। মধ্যস্থতাকারি সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ধান ক্রয় না করে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে কিনে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা ও মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধ করার জন্য আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি, খাগড়াছড়ি জেলা, সরকারকে আপনার মাধ্যমে আহ্বান জানাচ্ছি।
পাশাপাশি জাতীয় মুজুরী কমিশন বাস্তবায়ন ও বকেয়া মুজুরীসহ ৯দফা দাবিতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রয়াত্ত্ব বিভিন্ন পাটকল শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। দেশের ২৬টি পাটকলে একযোগে লাগাতার ধর্মঘট শুরু হলেও সরকার তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিচ্ছে না। ১০ থেকে ১৫ সপ্তাহ মুজুরী না পেয়ে শ্রমিকরা অর্ধাহার ও অনাহারে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ২০১৫ সালের মুজুরী কমিশন রোয়েদাত এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি। অথচ রমজান মাস শুরু হয়েছে। এ মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্য কেনার সামর্থ তাদের নেই। কর্মচারীদের চার মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। শ্রমজীবি মানুষের স্বার্থের প্রতি সরকারের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। বরং তাদের উপর শোষনের মাত্রা আরও তীব্র হয়েছে। শ্রমিকরা পাট জাত দ্রব্য উৎপাদন করছে বিনিময়ে তারা মুজুরী থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশে বৈষম্য ও বঞ্চনা প্রকট আকার ধারণ করেছে। আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি, খাগড়াছড়ি জেলার পক্ষ থেকে পাটকল শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবীগুলি ও কৃষকের ন্যায্য দাবী সরকারকে মেনে নেওয়ার জন্য আপনার মাধ্যমে আহবান জানাচ্ছি।
স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন- ওয়াদুদ ভূইয়া, সভাপতি, জেলা বিএনপি, খাগড়াছড়ি, প্রবীন চন্দ্র চাকমা, সিঃ সহ-সভাপতি, জেলা বিএনপি, খাগড়াছড়ি, এম এন আবছার, সাধারণ সম্পাদক, জেলা বিএনপি, খাগড়াছড়ি, শহীদুল ইসলাম ভূইয়া, যুগ্ন সম্পাদক, জেলা বিএনপি, খাগড়াছড়ি ও আঃ রব রাজা, সাংগঠনিক সম্পাদক, জেলা বিএনপি, খাগড়াছড়ি।